নানা তথ্যে চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যের গতি ও প্রাণশক্তি দেখা যায়
2023-01-16 19:30:43

২০২২ সালের ডিসেম্বরে চীনের ‘বন্দর লজিস্টিক সূচক’ ছিল ৮৪.৪৯; যা গত মাসের চেয়ে ২.৩ শতাংশ বেড়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে পোর্ট কার্গো থ্রুপুট বাড়তে থাকে; কাস্টমাইজড পোশাক, শিল্প লেজার মেশিনারি, নতুন শক্তির চার্জিংসহ বিভিন্ন পণ্যের ক্রস-বর্ডার সূচকও বেড়ে যাচ্ছে। এসব নেতৃস্থানীয় সূচক এবং উপবিভক্ত ডেটা দেখায় যে, চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে গতিবেগ ও উন্নয়নের জীবনীশক্তি শক্তিশালী।

নতুন বছরের শুরুতে শানতোং প্রদেশের ছিনতাও বন্দরের সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় কন্টেইনার টার্মিনালে বেশ ব্যস্ততা দেখা যায়।

পোর্ট লজিস্টিক হল বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রাণশক্তি বোঝার সবচে উত্তম পদ্ধতি। জাতীয় তথ্যকেন্দ্রের বিগ ডেটা উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের বিগ ডেটা বিশ্লেষণ বিভাগের প্রধান ইয়াং তাও লিং সাংবাদিকদের বলেন, বৈদেশিক বাণিজ্যসংশ্লিষ্ট সূচক বেড়ে যাওয়ায় প্রমাণিত হয় যে, ডোমেস্টিক নীতি বাস্তবায়নে চীনের বাণিজ্য স্থিতিশীলভাবে বাড়ছে এবং শক্তিশালী নমনীয়তা দেখা যাচ্ছে।

বার্ষিক পরিসংখ্যান সম্পূর্ণভাবে সারা বছরে চীনের বিদেশি বাণিজ্যের শক্তিশালী ক্ষমতা দেখিয়েছে। ১৩ জানুয়ারি শুল্ক কাস্টমসের সাধারণ প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী ২০২২ সালে চীনের আমদানি ও রপ্তানির মোট মূল্য প্রথমবারের মতো ৪০ ট্রিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়ে ৪২.০৭ ট্রিলিয়নে পৌঁছায়। যা গত বছরের চেয়ে ৭.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি ২০২১ সালে ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে এবং একটি নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। টানা ৬ বছর ধরে বিশ্বের বৃহত্তম পণ্য ব্যবসায়ীর মর্যাদা বজায় রেখেছে চীন।

চীনের কাস্টমস সাধারণ প্রশাসনের মুখপাত্র লুই তা লিয়াং বলেন যে, ‘চাহিদার সংকোচন, সরবরাহ খাতে আঘাত এবং দুর্বল প্রত্যাশা এ তিনটি চাপ সত্ত্বেও, চীনের বিদেশি বাণিজ্যের আমদানি ও রপ্তানি এখনও শক্তিশালী স্থিতিস্থাপকতা রয়েছে।’ অনেক অসুবিধা এবং চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও, চলতি বছর চীনের অর্থনীতি বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

কনটেইনার মালবাহী সূচক বৈদেশিক বাণিজ্যের জোড় ও জীবনীশক্তি পর্যবেক্ষণের একটি প্রধান ব্যবস্থা। সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, কিছু আমদানি রুট প্রথমেই পুনরুদ্ধার হয়।

‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতাও ভাল গতি বজায় রেখেছে। চীনের নিংবো শিপিং এক্সচেঞ্জের তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালের নভেম্বরে, ‘এক অঞ্চল এক পথ’উদ্যোগ বরাবর দেশগুলোর সামুদ্রিক সিল্ক রোড বাণিজ্য সূচক ছিল ২৫৬.৬৩, যা গত বছরের চেয়ে ৪.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং গত মাসের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে ৫.৬ শতাংশ।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গবেষণালয়ের উপ-গবেষক পাং ছাও রান সাংবাদিকদের বলেন, চীনের বিদেশি বাণিজ্য উদ্যোগগুলো সক্রিয়ভাবে বৈচিত্র্যময় আন্তর্জাতিক বাজার অন্বেষণ করছে। আরও বেশি দেশে চীনা পণ্যের স্বীকৃতি বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সময়ে রপ্তানির গন্তব্য এবং আমদানি উৎস একাধিক বাজারে নমনীয়ভাবে পরিবর্তন করা যেতে পারে এবং চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যের সামগ্রিক উন্নয়নের স্থিতিস্থাপকতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিদেশি বাণিজ্য দেখলে দেখা যায় যে, আন্তঃসীমান্ত ই-কমার্সের দ্রুত বৃদ্ধি একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। পাঁচ বছরে ১০ গুণ বেড়েছে। ২০২২ সালে তুলনামূলকভাবে দ্রুত বৃদ্ধি বজায় রয়েছে। কাস্টমসে প্রাথমিক অনুমান অনুসারে, ২০২২ সালে চীনের ক্রস-বর্ডার ই-কমার্সের আমদানি ও রপ্তানি ২.১১ ট্রিলিয়ন ইউয়ানে পৌঁছাবে, যা গত বছরের চেয়ে ৯.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

পাং ছাও রান আরও বলেন, সম্পূর্ণ উৎপাদন শিল্প বিকাশের ভিত্তিতে চীনের তৈরি পণ্যগুলোর প্রতিযোগিতা ক্রমাগতভাবে বেড়েছে; যা আরও নমনীয়ভাবে বাহ্যিক বাজারের বিভিন্ন চাহিদা পূরণ করবে। অধিক থেকে অধিকতর বিদেশি বাজার ‘চীনের তৈরি’ পণ্যের উচ্ছ্বসিত স্বীকৃতি দিয়েছে। নতুন পণ্য, নতুন মডেল এবং নতুন বৈশিষ্ট্যের ক্রমাগত বিবর্তন এবং বিকাশ কেবলমাত্র চীনের রপ্তানি বাজার স্থিতিশীল করে তোলার পাশাপাশি সুসংহত ও উন্নত করার বিষয়ে সহায়ক নয়; বরং আন্তর্জাতিক বাজারে চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো সম্প্রসারণে নতুন প্রবৃদ্ধির পয়েন্টও দেবে। ফলে চীনের অর্থনীতির উচ্চ মানের উন্নয়নে আরো ভালোভাবে সেবা করা যাবে।

লিলি/তৌহিদ/রুবি