পরিস্থিতি সামাল দিতে সময়োপযোগী করোনা প্রতিরোধ ব্যবস্থা সুবিন্যস্ত করেছে চীন
2023-01-13 13:56:34


গত ৮ জানুয়ারি নভেল করোনা ভাইরাস ব্যবস্থাপনাকে এ থেকে বি-শ্রেণীতে অবনমন করেছে চীন। তিন বছর ধরে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করেছে চীন। করোনা ব্যবস্থাপনাকে এ থেকে বি-শ্রেণীতে অবনমন,  সংক্রমণ প্রতিরোধ থেকে স্বাস্থ্য রক্ষা ও আশঙ্কাজনক অবস্থা প্রতিরোধসহ নানা ব্যবস্থা সুবিন্যাস করেছে চীন সরকার। চীন সরকার বরাবরই ‘মানুষ সত্য,  প্রাণ সত্য’র চেতনায় বিজ্ঞানসম্মত প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ নীতিতে অবিচল রয়েছে এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে নীতির সময়োপযোগী সুবিন্যাস করেছে।  প্রতিরোধ নীতি সুনিব্যাসের পর চীনের অবস্থা কেমন চলছে? আমরা একসাথে জেনে নিই।

আট জানুয়ারি রাত ১২টা শূন্য মিনিটে হংকংবাসীদের বহনকারী হংকং-চুহাই-ম্যাকাও সেতুর যাতায়াত বাস হংকং বন্দর ত্যাগ করে। এটি হংকং ও মূল-ভূখন্ডের মধ্যে প্রবেশ পুনরুদ্ধারের পর ভূখন্ডে আসা হংকং যাত্রীদের প্রথম দল। হংকংবাসী চেন বলেছেন, আট জানুয়ারি থেকে কোনো কোয়ারেন্টিন নেই। আমি খুব আনন্দিত। আসার পর প্রথম কাজ হলো চা-নাস্তা করা,  বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করা এবং বাবা-মাকে সময় দেওয়া।

নভেল করোনা ব্যবস্থাপনাকে বি-শ্রেণীতে অবনমনের ব্যবস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়ার পর,  ইমিগ্রেশনে যাত্রী ও মালামাল পারাপারে সংক্রামক রোগের ব্যবস্থাপনা আর থাকছে না। নভেল করোনায় আক্রান্তদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে না। তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী, চেক করার ব্যবস্থা চালু হয়। করোনা প্রতিরোধে চীন অব্যাহতভাবে বিজ্ঞানসম্মত ও নির্ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গত তিন বছরে ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই কখনও থেমে যায়নি। সকলের প্রাণ ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য চীন সবকিছুই করেছে। প্রকোপের সঙ্গে লড়াই করা এখন সকল চীনাদের অভিন্ন স্মৃতি।

২০২০ সালের জানুয়ারিতে কোটি জনগোষ্ঠি অধ্যুষিত চীনের হু পেই প্রদেশের উ হানে নভেল করোনা ভাইরাস আকস্মিকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশজুড়ে শক্তি প্রয়োগ করে উ হানবাসীদের প্রাণ বাঁচায়। তিন বছরে  দেশটি উ হান,  হু পেই ও শাংহাইয়ের লড়াইয়ে জয়ী হয়েছে এবং বিশ্বের করোনা প্রকোপের পাঁচবারের ঢেউ প্রতিহত করেছে। যা টিকা ও ওষুধ গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য সময় সাশ্রয় করেছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত চীনে মোট ৩৪৭ কোটি ডোজ টিকাদান করা হয়েছে। টিকাদানের হার ছিল ৯০ শতাংশের বেশি।মারাত্মক আদি ধরণের ভাইরাস ও ডেল্টা ভাইরাসের ব্যাপক প্রচলন রোধ করতে সক্ষম হয়েছে চীন।

গত তিন বছরে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি পরিস্থিতি সামাল দিতে সময়োপযোগী ও  বিজ্ঞানসম্মত ভাইরাস প্রতিরোধ নীতি সুবিন্যস্ত করেছে। করোনা প্রতিরোধ কাজে কৌশলগত অবস্থানে অবিচল রয়েছে চীন। গত তিন বছরে নানা রকম ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে চীন একদিকে প্রতিরোধ ও নিয়য়ন্ত্রণ,  অন্যদিকে গবেষণা,  সারসংক্ষেপ, ও নীতি সুবিন্যাস করেছে। দশটি সংস্করণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা এবং রোগ নির্ণয় ও চিকিত্সা পরিকল্পনার দশটি সংস্করণ প্রকাশ করেছে। ‘বিশ দফা’ ‘নতুন দশ দফা’সহ নানা সুবিন্যস্ত নীতি প্রণয়ন করেছে। ভাইরাস ব্যবস্থাপনাকেও এ থেকে বি-শ্রেণীতে অবনমন করেছে।

চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের প্রকোপ ব্যবস্থাপনা গ্রুপের নেতা লিয়াং ওয়ান নিয়ান বলেছেন, আমরা সক্রিয়ভাবে কিছু ব্যবস্থা নির্ভুল ও সুবিন্যস্ত করেছি। একটি সুযোগ আসলে আমরা সে অনুযায়ী সুবিন্যাস করি। আরও ভালো শর্ত দেখা দিলে আমরা সুবিন্যাসের আওতা বাড়িয়ে দিই এবং গতি দ্রুত করি। আমাদের ব্যবস্থা পরিবর্তনশীল, তবে ‘মানুষ ও প্রাণ সত্য’ র চেতনার কোনো পরিবর্তন হয়নি।

বর্তমানে করোনা প্রতিরোধ কাজ নতুন পর্যায়ে এসেছে। চীন অব্যাহতভাবে জেলা-থানায় তিন পর্যায়ের চিকিত্সা নেট এবং প্রতিরোধক ব্যবস্থা গঠনে অবিচল থাকবে। সংক্রমণ প্রতিরোধ থেকে স্বাস্থ্য রক্ষা ও আশঙ্কাজনক অবস্থা থেকে রক্ষা কাজকে প্রাধান্য দেবে। ভাইরাস ব্যবস্থাপনা এ থেকে বি-শ্রেণীতে অবনমনের পর চীনের বিভিন্ন স্থানে উত্পাদন ও জীবন যাত্রা দ্রুত পুনরুদ্ধার হচ্ছে। সকল চীনারা একযোগে দুর্যোগ কাটিয়ে উঠে সুন্দর ভবিষ্যতমুখী প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

(রুবি/এনাম)