জানুয়ারি ৯: ৮ জানুয়ারি, কোভিড-১৯ মহামারীকে “ক্যাটাগরি বি ব্যবস্থাপনা বি” মাত্রায় নামিয়ে দেওয়ার পরে, অভিবাসন ব্যবস্থাপনাকে অপ্টিমাইজ করার নীতি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়। আন্তর্জাতিক মহামারী পরিস্থিতি এবং বিভিন্ন পরিষেবা খাতে সক্ষমতা অনুসারে, চীন পরীক্ষামূলক ও সুশৃঙ্খলভাবে চীনা নাগরিকদের বাইরে ভ্রমণ পুনরায় শুরু করেছে। বৈশ্বিক পর্যটনবাজার উত্সাহের সাথে সাড়া দিয়েছে এবং চীনা পর্যটকদের স্বাগত জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশ্বাস করে যে, চীনের মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার অপ্টিমাইজ করা, প্রবেশ ও প্রস্থান পদ্ধতির সহজকরণ, এবং দেশের বাইরে ভ্রমণ পুনরায় চালু করা, বিশ্বব্যাপী পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে সহায়তা করবে,
অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে উদ্দীপিত করবে এবং চীনের সাথে অন্যান্য দেশের বিনিময় এবং জনগণের মধ্যে বন্ধনে নতুন প্রাণশক্তি যোগ করবে।
মিসর স্প্রিং ট্র্যাভেল এজেন্সির জেনারেল ম্যানেজার রাবিব বলেছেন, "মিসর চীন থেকে আসা পর্যটকদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানায়। এটা মিসরের পর্যটনশিল্পের পুনরুদ্ধারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ!" রাবিব বলেন, মিসরে পর্যটন একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক স্তম্ভ এবং বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান উৎস। মহামারীর প্রাদুর্ভাবে মিসরে পর্যটনশিল্প ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। “চীনা নাগরিকদের ভ্রমণ আমাদের আশা দেয়। ভ্রমণ সংস্থার চীনা-ভাষী গাইডরা শীঘ্রই কাজ শুরু করবে। আমরা চীনা বন্ধুদের মিসর সফরের অপেক্ষায় আছি।"
জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থার তথ্য অনুসারে, মহামারী শুরু হওয়ার আগে চীন ছিল বিশ্ব পর্যটনবাজারে অন্যতম প্রধান গ্রাহক। সামঞ্জস্যপূর্ণ মহামারী প্রতিরোধ নীতি চীন ও বৈশ্বিক পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। অনুমান করা হয় যে, ২০২৩ সালের গ্রীষ্মের মধ্যে, বিদেশ ভ্রমণকারী চীনা পর্যটকদের সংখ্যা মহামারী হওয়ার আগের ৫০ শতাংশে পুনরুদ্ধার হবে।
আশা করা হচ্ছে যে, এই বছর বসন্ত উৎসবের সময়, বিদেশী পর্যটনকেন্দ্রগুলো বিপুলসংখ্যক চীনা পর্যটক পাবে। চীনের অন্যতম প্রধান ভ্রমণ ওয়েবসাইট সিট্রিপ-এর তথ্য অনুসারে, ৫ জানুয়ারী পর্যন্ত, ৭-দিনের বসন্ত উৎসবের ছুটিতে বিদেশে ভ্রমণের অর্ডার ছিল গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৪০% বেশি, এবং গড় অর্ডার খরচ বেড়েছে ৩২%। এর মধ্যে, বসন্ত উত্সবের সময় অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে ভ্রমণের অর্ডার ৫০ গুণেরও বেশি বেড়েছে এবং ব্যাংকক, থাইল্যান্ডে ভ্রমণের অর্ডার বেড়েছে ১০ গুণেরও বেশি।
"কম্বোডিয়া চীনা পর্যটকদের স্বাগত জানায়।" কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন বলেছেন, কম্বোডিয়া এই বছর ২ মিলিয়ন চীনা পর্যটক গ্রহণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা কম্বোডিয়ার অর্থনীতির দ্রুত পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে। চীন থাই পর্যটনশিল্পের সবচেয়ে বড় উৎস। থাইল্যান্ডের পর্যটন কর্তৃপক্ষের মতে, এই বছরের প্রথম প্রান্তিকে থাইল্যান্ডে চীনা পর্যটকদের সংখ্যা ৩ লাখ হবে এবং সারা বছরজুড়ে চীনা পর্যটকদের সংখ্যা ৫০ লাখে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সিঙ্গাপুরের "লিয়ানহে জাওবাও" ওয়েবসাইট জানিয়েছে যে, চীনা নাগরিকদের বিদেশে ভ্রমণ শুরু হওয়ার পর চীনা পযর্টকদের সিঙ্গাপুরে ফিরে যেতে উত্সাহিত করা হবে। অনুমান করা হচ্ছে যে, চীনারা সিঙ্গাপুরে ২ বিলিয়ন ডলারের খুচরা কেনাকাটা করবে।
বর্তমানে কিছু দেশ চীনা পর্যটকদের স্বাগত জানাতে সক্রিয়ভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছে। থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য, পর্যটন, ক্রীড়া এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি চীনা পর্যটকদের স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি নিয়েছে। তারা বলেছে, সমস্ত বিদেশী পর্যটকদের সাথে সমান আচরণ করা হবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইতিহাদ এয়ারওয়েজ ঘোষণা করেছে যে, এই বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে আবুধাবি এবং সাংহাইয়ের মধ্যে যাত্রীবাহী ফ্লাইট সপ্তাহে দুটি বৃদ্ধি পাবে। দক্ষিণ আফ্রিকার পর্যটন ব্যুরোর এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান প্রতিনিধি মনসুর মোহাম্মদ বলেছেন: "চীনাদের দেশের বাইরে ভ্রমণ পুনরায় শুরু হবার প্রত্যাশায় আছি। দক্ষিণ আফ্রিকা পর্যটকদের জন্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেবে। আশা করি, চীনা পযর্টকরা নিশ্চিন্তে দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্রমণ করতে পারবেন।"
সংযুক্ত আরব আমিরাতের "ইমব্রিসিং চায়না"-র সিইও বলেছেন যে, চীনা পর্যটকদের আগমন তাদের পর্যটন শিল্পের পুনরুদ্ধার এবং উন্নয়নে সাহায্য করবে। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, উভয় পক্ষের লোকেরা মুখোমুখি যোগাযোগ করতে পারবেন এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়াতে পারবে।
২০২৩ সালে, চীন ও পাকিস্তান "চীন-পাকিস্তান পর্যটন বিনিময় বছর" পালন করবে। পাকিস্তান ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের জেনারেল ম্যানেজার আফতাব উর রহমান রানা বলেছেন, পাকিস্তান চীনা পর্যটকদের স্বাগত জানানোর জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, “চীনা নাগরিকদের বিদেশে ভ্রমণ পুনরুদ্ধারের সাথে সাথে, বিশ্বব্যাপী পর্যটন অর্থনীতির উন্নয়নে অবশ্যই ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বিনোদন ও পর্যটন শিল্প সৌদি আরবের অর্থনৈতিক রূপান্তর পরিকল্পনার "ভিশন ২০৩০"-এর অন্যতম স্তম্ভ। সৌদি আরব জোরালোভাবে পর্যটন বিকাশের পরিকল্পনা করছে এবং চীনা পর্যটকদের জন্য আরও সুবিধাজনক পর্যটন পরিষেবা পণ্য চালু করবে। সৌদি পর্যটন মন্ত্রী আহমেদ খতিব বলেছেন: "চীন একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন উৎস দেশ। চীন তার নাগরিকদের বহির্মুখী ভ্রমণ সুশৃঙ্খলভাবে পুনরায় শুরু করেছে দেখে আমরা খুবই আনন্দিত। সৌদি আরব এই বিষয়ে চীনা অংশীদারদের সাথে সহযোগিতা জোরদার করবে।" (ইয়াং/আলিম/ছাই) (ইয়াং/আলিম/ছাই)