জানুয়ারি ৫: চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র ২০তম জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন আধুনিকায়নের অপরিহার্য শর্তসমূহ হচ্ছে: সিপিসি’র নেতৃত্বকে মেনে চলা, চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সমাজতন্ত্রকে মেনে চলা, উচ্চমানের উন্নয়ন অর্জন করা, সমগ্র প্রক্রিয়া জুড়ে জনগণের গণতন্ত্রের বিকাশ করা, মানুষের আধ্যাত্মিক জগতকে সমৃদ্ধ করা, সকল মানুষের জন্য সাধারণ সমৃদ্ধি অর্জন করা, মানুষ ও প্রকৃতির সুরেলা সহাবস্থান নিশ্চিত করা, মানবজাতির জন্য অভিন্ন লক্ষ্যের একটি কমিউনিটি গড়ে তোলা, এবং মানবসভ্যতার একটি নতুন রূপ সৃষ্টি করা।
‘মানুষের আধ্যাত্মিক জগতকে সমৃদ্ধ করা’ হল চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন আধুনিকায়নের অপরিহার্য শর্তগুলোর মধ্যে একটি। এতে প্রতিফলিত হয়ে যে, চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন আধুনিকায়ন একটি উচ্চ-মানের আধুনিকায়ন, যেখানে বস্তুগত সভ্যতা ও আধ্যাত্মিক সভ্যতা সমন্বিতভাবে অবস্থান করে। বস্তুগত দারিদ্র্য সমাজতন্ত্র নয়, আধ্যাত্মিক দারিদ্র্যও সমাজতন্ত্র নয়।
মানুষের আধ্যাত্মিক জগতকে সমৃদ্ধ করার জন্য উন্নত সমাজতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে হবে। সংস্কৃতি একটি দেশ ও একটি জাতির আত্মা এবং মানুষের আধ্যাত্মিক বাসস্থান। উন্নত সমাজতান্ত্রিক সংস্কৃতি মানুষের আধ্যাত্মিক জগতের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা চীনা জনগণের অনন্য আধ্যাত্মিক মেজাজ ও চরিত্র গঠনের জন্য একটি সমৃদ্ধ ভিত্তির যোগান দেয়। চীনাদের গল্প প্রচার করতে হবে, চীনা জাতির অনন্য আধ্যাত্মিক জিন উন্নত করতে হবে, জনগণ ও সমাজতন্ত্রের সেবার ওপর জোর দিতে হবে।
সমাজতান্ত্রিক উন্নত সংস্কৃতির অর্থপূর্ণ উচ্চ-মানের বিকাশ সমাজতান্ত্রিক সংস্কৃতির নতুন উজ্জ্বলতা তৈরি করেছে, মানুষের আধ্যাত্মিক জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে, এবং ব্যাপকভাবে জনগণের জীবনকে উন্নত করেছে। আদর্শগত ও নৈতিক গুণ এবং বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক গুণ থাকা জরুরি।
মানুষের আধ্যাত্মিক জগতকে সমৃদ্ধ করার জন্য সাংস্কৃতিক উদ্যোগ ও সাংস্কৃতিক শিল্পের উন্নতি ও বিকাশের জন্য কাজ করতে হবে। সাংস্কৃতিক উদ্যোগ ও সাংস্কৃতিক শিল্পের বিকাশ হল মানুষের আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক চাহিদা মেটানো এবং মানুষের সাংস্কৃতিক অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা করার মৌলিক উপায়। প্রেস ও প্রকাশনা শিল্প, রেডিও, ফিল্ম ও টেলিভিশন, সাহিত্য ও শিল্প, দর্শন ও সামাজিক বিজ্ঞানকে ব্যাপকভাবে সমৃদ্ধ করতে হবে, সংস্কৃতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সুরক্ষাব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে, শহুরে ও গ্রামীণ পর্যায়ে ঐতিহাসিক সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে হবে, চারিদিকে ইতিবাচক শক্তি ছড়িয়ে দিতে হবে, জাতীয় চেতনাকে পুষ্ট করতে হবে, সাংস্কৃতিক আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে হবে, মানুষের নৈতিক গুণ, নান্দনিক রুচি ও আধ্যাত্মিক পরিমণ্ডলকে উন্নত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
আধুনিক পাবলিক কালচারাল সার্ভিস সিস্টেম উন্নত করতে হবে, মানুষের ইনপুট বৃদ্ধি করতে হবে, বস্তুগত ও আর্থিক সম্পদ এবং উদ্ভাবন ও সাংস্কৃতিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে, যাতে জনগণের উপকার হয়। জাতীয় সাংস্কৃতিক উদ্যান তৈরি করে তা ভালোভাবে ব্যবহার করতে হবে, পাবলিক সাংস্কৃতিক সুবিধা ও স্থানের সংখ্যা বাড়াতে হবে। পাবলিক সাংস্কৃতিক পরিষেবার মান উন্নয়নে নজর দিতে হবে, যাতে লোকেরা আরও পরিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও উচ্চ মানের আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক জীবন উপভোগ করতে পারে। আধুনিক সাংস্কৃতিক শিল্পব্যবস্থা ও বাজারব্যবস্থা উন্নত করতে হবে এবং প্রধান সাংস্কৃতিক শিল্প প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।
চেতনা ছাড়া দেশ শক্তিশালী হতে পারে না, চেতনা ছাড়া জাতি দাঁড়াতে পারে না। চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন আধুনিকায়নের জন্য শুধুমাত্র বস্তুগত সম্পদ নয়, আধ্যাত্মিক সম্পদও প্রয়োজন। আমাদের অবশ্যই জনগণের আধ্যাত্মিক জগতকে সমৃদ্ধ করতে হবে, সামাজিক সভ্যতার স্তরের উন্নতি করতে হবে, চীনা জাতির সংহতি ও চীনা সংস্কৃতিকে উন্নত করতে হবে, যাতে একটি আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ গঠনের নতুন যাত্রায় নতুন নতুন সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)