যা ছিল প্রেসিডেন্ট সি’র নববর্ষের শুভেচ্ছাবার্তায়
2023-01-03 18:32:43

জানুয়ারি ৩: প্রিয় বন্ধুরা, ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি) এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে ২০২৩ সালের শুভেচ্ছাবার্তা দিয়েছেন। তিনি একটানা দশ বছর ধরে সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে আসছেন। আজকের ভিডিও’র মাধ্যমে আমরা একসঙ্গে তাঁর শুভেচ্ছাবার্তায় তুলে ধরা চীনের উন্নয়ন, অবিস্মরণীয় মুহূর্ত, সাধারণ চীনা মানুষের পরিশ্রমী মর্ম এবং বড় রাষ্ট্র হিসেবে চীনের দায়িত্ববোধ চর্চা করবো।

 

বিদায়ী ২০২২ সাল ছিল সিপিসি এবং চীনের ইতিহাসে সবচে গুরুত্বপূর্ণ বর্ষ। এই বছরে চীন সফলভাবে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) বিংশ জাতীয় কংগ্রেস আয়োজন করেছে। সার্বিক সমাজতান্ত্রিক আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিক চীনা জাতির মহান পুনরুজ্জীবন জোরদার করেছে। নতুন যুগে পরিশ্রমের নতুন যাত্রা শুরু করেছে।

 

২০২২ সালে চীন একটি বিশাল পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছে। এই বছর শতাব্দীর মহামারী এবং শতাব্দীর পরিবর্তন একত্রে হাজির হয়েছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্ অর্থনৈতিক সত্তা হিসেবে চীনের অর্থনীতি স্থিতিশীলভাবে উন্নত হচ্ছে। এ বছর চীনের জিডিপি ১২০ ট্রিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা যায়। বৈশ্বিক খাদ্য সংকটের মুখে চীনের খাদ্যশস্য উত্পাদনের পরিমাণ টানা ১৯ বছর ধরে অটুট রয়েছে। চীনা মানুষের খাদ্যের নিশ্চয়তা রয়েছে। চীন দারিদ্র্যবিমোচনের সাফল্য জোরদার করেছে এবং সার্বিকভাবে গ্রামীণ পুনরুত্থান পরিকল্পনা চালু করেছে। (তা ছাড়া, কর হ্রাসসহ ধারাবাহিক নানা ব্যবস্থার মাধ্যমে  প্রাতিষ্ঠানিক সমস্যা সমাধান করছে। বিশেষ করে, জনগণের জরুরি ও প্রত্যাশিত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে।)

 

কোভিড-১৯ মহামারী ছড়িয়ে পড়লে চীন বরাবরই জনগণ ও জীবনের ওপর সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছে। চীন বিজ্ঞানসম্মত ও মহামারি প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ে এবং বাস্তব অবস্থা অনুযায়ী প্রতিরোধ ব্যবস্থা সমন্বয় করে সর্বাধিক মাত্রায় জনজীবন ও স্বাস্থ্য রক্ষা করে আসছে। অসংখ্য ক্যাডার ও নাগরিক, বিশেষ করে চিকিত্সক ও তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীরা সাহসের সঙ্গে অভূতপূর্ব কঠিন পরিস্থিতি ও চ্যালেঞ্জ প্রতিরোধ করেছে। যা সহজ কাজ ছিল না। বর্তমানে মহামারী প্রতিরোধের নতুন পর্যায়ে এসেছে। তবে, আরো কঠিনতা দেখা যাচ্ছে। সবাইকে দৃঢ় পরিশ্রম করতে হবে। ভোর আমাদের সামনে। সবাই আরো পরিশ্রম করে এবং জোর দিয়ে সাফল্য অর্জন করবে। একতাই হলো সাফল্য।

 

প্রজন্মের পর প্রজন্মের চীনা মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আজকের চীন প্রতিষ্ঠা করেছেন। আজকের চীন তাদেরই ধারাবাহিক স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছে। বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক গেমস ও প্রতিবন্ধী অলিম্পিক গেমস সফলভাবে আয়োজন করা হয়েছে। খেলোয়াড়রা গর্বিত সাফল্য অর্জন করেছে। শেনচৌ ১৩, ১৪, ১৫ নং মহাকাশযান মহাকাশে পৌঁছেছে। বিরাট চীনা মহাকাশ স্টেশন তৈরি হয়েছে। চীনের মহাকাশের বাসস্থান গঠন করা হয়েছে। গতবছর ছিল চীনা গণমুক্তি ফৌজের ৯৫তম জন্মবার্ষিকী। শক্তিশালী বাহিনী গঠনের জন্য পরিশ্রম করছেন অনেকে। তৃতীয় বিমানবাহী রণতরী চালু হয়েছে। প্রথম সি-৯১৯ বড় বিমান হস্তান্তর হয়েছে। পাই হ্য থান জলবিদ্যুত্ কেন্দ্র সর্বোচ্চ উত্পাদন শুরু করেছে। এসব সাফল্য অসংখ্য চীনা মানুষের পরিশ্রমের ফলে গড়ে উঠেছে। আর কিছু কিছু অগ্নিস্ফুলিঙ্গ দিয়েই মশাল জ্বালানো যায়। এটাই হলো চীনা শক্তি।

 

আজকের চীন প্রাণশক্তিতে পরিপূর্ণ চীন। আমরা যে কারণে প্রাণশক্তিতে পূর্ণ তা হল আমরা সর্বাত্মক উপায়ে সংস্কারকে গভীরতর করে চলতে থাকি। সংস্কারকে গভীরতর করার প্রক্রিয়ায় চীন সিস্টেম এবং প্রক্রিয়ার সমস্ত দিকগুলোতে নতুন প্রাণশক্তি তৈরি করে থাকে।

 

বর্তমান চীন জাতীয় চেতনা বজায় রাখা একটি দেশ। এ বছর সংঘটিত ভূমিকম্প, বন্যা, খরা, পাহাড়ে আগুনসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও কিছু দুর্ঘটনা আমাদের কষ্ট দিয়েছে। তবে, অন্যকে বাঁচানোর জন্য নিজের জীবন বিসর্জন দেওয়ার বিষয় আমাদেরকে মুগ্ধ করেছে। বীরদেরকে আমরা আজীবন মনে রাখব। যখন নতুন বছর আসে, তখনই চীনা জাতির হাজার বছরের উত্তরাধিকারের চেতনা মনে পড়ে। যা আমাদেরকে সামনে অগ্রসরের সাহস দেয়।

 

‘চীন’, ‘বিশ্ব’, ‘তরুণ’, ‘উন্নয়ন’ এবং ‘শান্তি’ শব্দগুলো প্রেসিডেন্ট সির নববর্ষের ভাষণে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট সি বলেন, আজকের চীন বিশ্বের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত একটি দেশ। দেশটি সমস্ত মানবতার শান্তি ও উন্নয়নের লক্ষ্যে তার প্রজ্ঞা এবং সমাধান প্রদানে কঠোর পরিশ্রম করে থাকে।

আগামীকাল চীনের শক্তি একতা থেকে আসবে। যুবকরা আগামী চীনের আশা। নববর্ষের শুভেচ্ছাবার্তায় প্রেসিডেন্ট সি যুবকদের ওপর ভরসা রাখেন। যুবকদের উত্থান হলে দেশ সমৃদ্ধ হবে। চীনের উন্নয়ন যুবকদের ওপর নির্ভর করে। যুবকরা প্রাণপ্রাচুর্যে পূর্ণ। যুবকদের বুক ভরা আশা আছে। অসংখ্য যুবকের প্রণয়বন্ধন ও পরিশ্রম যুগ ও সময়কে সফল করে তুলবে।

 

প্রিয় বন্ধুরা, অবিস্মরণীয় ২০২২ সাল চলে গেছে এবং ২০২৩ সালের নববর্ষের ঘণ্টা ইতিমধ্যে বেজেছে। আসুন,ভবিষ্যতের প্রতি একটি সুন্দর আকাঙ্ক্ষা নিয়ে একেবারে নতুন এবং আশাপূর্ণ বছরটিকে স্বাগত জানাই।

 

লিলি/এনাম/রুবি