২০২২ সালে চীনের শিক্ষা খাতে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী: পিছন ফিরে দেখা
2023-01-02 17:43:27

বন্ধুরা, ২০২৩ সাল আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে, আর ২০২২ সাল যাই যাই করছে। গেল এক বছরে চীনের বিভিন্ন খাতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম জাতীয় কংগ্রেস সাফল্যের সঙ্গে আয়োজিত হয়েছে। এ কংগ্রেসের প্রতিবেদনে শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আর সেরা ব্যক্তিবর্গকে দেশের উন্নয়নের জরুরি চাহিদা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। বলা বাহুল্য, ভবিষ্যতে এসব খাত দেশের উন্নয়নে সুগভীর প্রভাব ফেলবে।

 

চলতি বছর চীনের পরিবারিক শিক্ষা প্রচার আইন চালু হয়েছে।  নতুন সংশোধিত চীনের কারিগরি শিক্ষা আইন সম্পন্ন হয়েছে। এর ফলে আইনের দিক থেকে কারিগরি শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষার সমান মর্যাদা দেওয়া হয়। এ খাতে আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নতুন আইন ও নীতিমালা এবং সংস্কারের কারণে চীনের শিক্ষার মান আরো উন্নত হয়েছে। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা ২০২২ সালে শিক্ষা খাতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা রিভিউ করবো।

 

পরিবারিক শিক্ষা মানুষের শিক্ষার ভিত্তি। চীনা বাচ্চাদের স্বাস্থ্যকর উন্নয়ন এবং পরিবারের সুখী জীবনের সাথেও এর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ২০২২ সালের পয়লা জানুয়ারি চীনের পরিবারিক শিক্ষা প্রচার আইন আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। এটা চীনের প্রথম পরিবারিক শিক্ষা আইন, যাতে পিতামাতার প্রধান দায়িত্ব, বিভিন্ন পর্যায়ের সরকার ও সমাজের আইনগত দায়িত্ব নির্ধারিত হয়েছে।

 

গত ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি বেইজিংয়ে চীনের জাতীয় শিক্ষা কর্মসম্মেলন আয়োজিত হয়। সম্মেলনে চীনের শিক্ষামন্ত্রী হুয়াই চিন পেং চীনের শিক্ষা ও শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কে নিজের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। তিনি মনে করেন, দূরদর্শী ও সার্বিক দৃষ্টিতে চীনের শিক্ষার উন্নয়ন বিবেচনা করা প্রয়োজন। চীনের শিক্ষা খাতের সুষ্ঠু উন্নয়নে কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন, তিনি। তিনি বলেছেন, বাধ্যতামূলক শিক্ষার মান আরও বাড়াতে হবে এবং একে আরও সুসংবদ্ধ করতে হবে; দেশের উন্নয়নের চাহিদা মেটাতে উচ্চশিক্ষার মান আরও  উন্নত করতে হবে; এবং নতুন প্রযুক্তি ও শিল্পের সংস্কারের চাহিদা মেটাতে প্রয়োজনীয় কারিগরি শিক্ষা উন্নয়ন করতে হবে।

 

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয় এবং রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিটির উদ্যোগে, দ্বিতীয় দফায় চীনের শ্রেষ্ঠ পর্যায়ের বিশ্ববিদ্যালয় ও মেজরের তালিকা প্রকাশিত হয়। এতে ১৪৭টি বিশ্ববিদ্যালয় আর ৩৩১টি মেজর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। দ্বিতীয় দফার তালিকায় ৭টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমবারের মতো অন্তর্ভুক্ত হয়। কুয়াংতুং প্রদেশের ৩টি বিশ্ববিদ্যালয় তালিকায় নতুন করে প্রবেশ করে। বিভিন্ন প্রদেশের এ দিক দিয়ে কুয়াংতুং সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে। তবে, ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬টি মেজর সম্পর্কে সর্তকতা জারি করে হয়েছে। এর মানে এই মেজরগুলোকে টিকে থাকতে হলে আরও উন্নত হতে হবে, সংস্কার করতে হবে।

 

২০২২ সালের ২৮ মার্চ চীনের অনলাইন শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। এতে কারিগরি শিক্ষা, বিভিন্ন পর্যায়ের বাধ্যতামূলক শিক্ষা, এবং স্নাতক শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের প্ল্যাটফর্ম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ প্ল্যাটফর্ম চালুর পর বিভিন্ন ধরনের সেরা ডিজিটল কোর্সওয়্যার জনসাধারণের জন্য সহজপ্রাপ্য হয়েছে, ওয়েবসাইটের রিভিউও অনেক বেড়েছে। এমন অনলাইন ক্লাস শিক্ষা খাতে সমতা নিশ্চিত করতে ও শিক্ষার মান বাড়াতে সহায়ক।

 

২০২২ সালের এপ্রিল মাসে চীনের বাধ্যতামূলক শিক্ষা কোর্স ও মানদন্ড প্রকাশিত হয়। নতুন সংশোধিত নির্দেশিকায় শিক্ষাদানের মূল দায়িত্ব ও ভুমিকা তুলে ধরা হয়। নতুন সংশোধিত বাধ্যতামূলক কোর্সে মোট ১৬টি মেজর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এবং তা সেপ্টেম্বর মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়।

 

এ ১৬টি কোর্সের মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য রান্নাবান্না, শাকসবজি চাষ, দৈনন্দিন ব্যবহারের যন্ত্রপাতি মেরামতসহ বিভিন্ন বিষয় রয়েছে। এগুলোও ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে সাপ্তাহিক কোর্স হিসেবে চালু হয়। শ্রম কোর্সের মাধ্যমে শ্রমের প্রতি বাচ্চাদের সঠিক মূল্যবোধ সৃষ্টি, তাদের পরিশ্রমের ভালো গড়ে তোলার মাধ্যমে দক্ষ শ্রমশক্তি গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

    চীনের বাধ্যতামূলক শিক্ষা খাতে শিক্ষকের মোট সংখ্যা ১ কোটি ৫৮ লাখ ৬০ হাজার জনেরও বেশি, যা চীনের শিক্ষকদের মোট সংখ্যার ৮৬ শতাংশ। বাধ্যতামূলক শিক্ষা দেশের শিক্ষার অতি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন যুগে শ্রেষ্ঠ ও দক্ষ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। পাশাপাশি, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ পরিকল্পনাও পাস করা হয়।

 

সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, ২০২৫ সালের মধ্যে চীনে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ঘাঁটি নির্মিত হবে। আর এভাবে মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের মধ্যে মাস্টার্স ডিগ্রীপ্রাপ্তদের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। তারা স্কুলের শিক্ষাদানে নেতৃত্বের ভুমিকা পালন করবেন। ২০৩৫ সালের মধ্যে আরো উন্মুক্ত, সহযোগী ও উচ্চ মানের শিক্ষক শিক্ষাদান ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। তখন  শিক্ষকদের সংখ্যা ও মান চীনের শিক্ষার উন্নয়নের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে। তা ছাড়া, চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রতি বছর দারিদ্র্যমুক্ত জেলা, মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চলের অনুন্নত সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন স্কুলের ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।  তারা স্নাতক হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট জেলায় কাজ করবেন।

 

২০২২ সালের পয়লা মে চীনের কারিগরি শিক্ষা আইন আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। সেটি ১৯৯৬ সালের পর কারিগরি শিক্ষা আইনের প্রথম সংশোধিত আইন। এ আইনে বলা হয়েছে, চীনের কারিগরি শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষা সমান মর্যাদা পাবে। সরকার কারিগরি খাতে প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষা গ্রহণের আরো বেশি সুযোগ সৃষ্টি করবে। এভাবে সমাজে কারিগরি শিক্ষার প্রতি স্বীকৃতিও বাড়বে।

 

কারিগরি শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষার ব্যবধান দূর করতে কারিগরি স্কুলের শিক্ষার্থীদের মর্যাদা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি, ও উন্নয়নের সমান সুযোগ দেওয়া জরুরি। নতুন নিয়মে স্নাতক হওয়ার পর তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ ও সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শিক্ষার্থীদের সুযোগে কোনো তারতম্য থাকবে না। ফলে কারিগরি শিক্ষার্থীরা কোনো কোম্পানি বা শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বৈষম্যের শিকার হবেন না।

 

ডিসেম্বর মাসে চীন সরকার আবার ‘আধুনিক কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার পরামর্শ’ প্রকাশ করে এবং চীনের বিভিন্ন এলাকায় এ পরামর্শ অনুসারে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, চীনের বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারকে কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে, আধুনিক কারিগরি শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নে চেষ্টা করতে হবে, কারিগরি স্কুলের দক্ষতা বাড়াতে হবে। এবং এভাবে কারিগরি শিক্ষা, উচ্চ শিক্ষা ও অব্যাহত শিক্ষার মধ্যে সঠিকভাবে সমন্বয় করা যাবে, সুশৃঙ্খলভাবে আধুনিক কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থার সংস্কার সম্পন্ন করা যাবে, বাস্তবভাবে চীনের করিগরি শিক্ষার মান ও আকর্ষণ বাড়নো যাবে।  

 

২০২২ সালের মে মাস থেকে প্রতিটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে কমপক্ষে একজন আইন প্রশাসন ভাইস প্রেসিডেন্ট নিয়োগ করার নিয়ম করেছে চীন সরকার। এ পদক্ষেপের উদ্দেশ্য ছাত্রছাত্রীদের অধিকার রক্ষা করা, কিশোর অপরাধ কমানো  এবং নিরাপত্তা-প্রশাসন দায়িত্ব পালন করা।

 

২০২২ সালের ২৭ জুন চীনের কাওখাও পরীক্ষার বহমুখী সংস্কার ইনারমঙ্গোলিয়া,শানসি, ছিংহাই, নিংসিয়াংসহ ৮টি প্রদেশ বা স্বায়ত্তশাসিত এলাকায় চালু হয়। এ পর্যন্ত চীনের ২৯টি প্রদেশ ও স্বায়ত্তশাসিত এলাকায় কাওখাও’র নতুন সংস্কারকৃত ব্যবস্থা চালু হয়েছে।

 

টানা ৮ বছরের সংস্কারে অতীতকালের কাওখাও পরীক্ষার অনেক দুর্বলতা সংশোধিক হয়েছে এবং চলমান কাওখাও পরীক্ষা প্রায় স্থিতিশীল পর্যায়ে পৌঁছেছে। ২০২২ সালে কোভিড মহামারীর কারণে শাংহাই মহানগরের কাওখাও পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ের এক মাস পর অনুষ্ঠিত হয়। কোভিড মহামারীর অবস্থা বিবেচনা করে তখন নিরাপত্তা ও সমতার ভিত্তিতে শাংহাইয়ের কাওখাও পরীক্ষার সময় পরিবর্তন করা হয়, যা ছিল বাস্তবধর্মী সিদ্ধান্ত।

 

২০২২ সালে চীনা শিক্ষার্থীদের জন্য ‘দ্বৈত হ্রাস নীতি’ চালু হয়। এ নীতি চীনের শিক্ষা খাতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমের অন্যতম। বিভিন্ন এলাকার স্কুল ও বাচ্চাদের পরিবারের যৌথ প্রয়াসে, স্কুলের বাইরে অতিরিক্ত ক্লাস বা প্রশিক্ষণ ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়। ফলে শিক্ষার্থীদের হোমওয়ার্ক আর স্কুলের বাইরে প্রশিক্ষণ ক্লাসের হোমওয়ার্ক ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়। সেটি ছিল পিতামাতা ও স্কুলের শিক্ষকদের জন্য সুখবর। শিক্ষার্থীরাও আরো বেশি ঘুম, খেলাধুলা, পাঠ্যবইয়ের বাইরের বই পড়ার সময় পায়, তাদের বহুমুখী দক্ষতা উন্নয়নে যা সহায়ক।

 

তবে স্কুলের শিক্ষার মান আরও উন্নত করা এবং ভিন্ন মেধার শিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী শিক্ষা অভিভাবকদের চাহিদা। এই চাহিদা পূরণ সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং।  তা ছাড়া, স্কুলের অবসর সময় শিক্ষার্থীদের হোমওয়ার্ক দেখাশোনা পরিসেবাও কর্মরত পিতামাতাদের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।  স্কুলের সংশ্লিষ্ট পরিসেবার মানও আরো উন্নত করতে হবে।

 

২০২২ সালের ১৬ অক্টোবর সিপিসি’র ২০তম জাতীয় কংগ্রেস সাফল্যের সঙ্গে বেইজিংয়ে আয়োজিত হয়। কংগ্রেসের পর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়নের মাধ্যমে চীনা জাতির মহান পুনরুত্থান বাস্তবায়ন করতে হবে। এর মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশ শক্তিশালী করা এবং আধুনিকায়নের জন্য দক্ষ ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ জোরদার করার মতো দুটি বিষয় আলাদাভাবে তুলে ধরা হয়। তা থেকে বোঝা যায়, নতুন যুগে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শিক্ষাদান ও সেরা ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ দেশের উন্নয়নে অতি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে।

 

৭ ডিসেম্বর চীনা শিক্ষার্থীদের মাস্টার্স ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতিকাজ শুরু হয়েছে। কোভিডে আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২০২৩ সালে ভর্তির জন্য নিবন্ধিত শিক্ষার্থীর মোট  সংখ্যা ৪৭.৪ লাখে দাঁড়িয়েছে, যা ২০২১ সালের তুলনায় ৩ শতাংশ বেশি। এ থেকে বোঝা যায় চীনে শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের হার ক্রমাগত বাড়ছে।

 

সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা,সময় দ্রুত চলে যায়, আজকের বিদ্যাবার্তা এখানে শেষ হয়ে এলো। নববর্ষের শুভকামনা জানিয়ে আপনাদের কাছ থেকে আজ বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকুন সুস্থ্য থাকুন, আগামী সপ্তাহের একই দিনের একই সময় আবার কথা হবে। যাইচিয়ান। (সুবর্ণা/আলিম/মুক্তা)