নাজমুল হক রাইয়ান, চীন আন্তর্জাতিক বেতার: পছন্দের পানীয় কোনটি? অনেকের কাছেই এই প্রশ্নের উত্তর ‘চা’। আড্ডা, গল্প্ এমন কি একা বসে বই পড়ার সঙ্গীও এই চা। আবার অলসতায় নিজেকে সতেজ করতে এক কাপ চায়ের যেন জুড়ি নেই। সুন্দর মূহুর্তগুলোকে আরো উপভোগ্য করে তোলে এই পানীয়। মজার বিষয় হলো, অসাধরণ সব চায়ের জন্য বিশ্বজুড়ে সুনাম কুড়িয়েছে চীন। বিশেষ করে এই তালিকার শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের ইউননান প্রদেশের ‘ফু’ চা। এখানকার ফুয়ার শহরের জিংমাই পাহাড়ে চাষ করা হয় বিখ্যাত এই চা।
চায়ের নাম ‘ফু’। গরম কাপে ফু দিয়ে পান করার জন্য নয়। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমের প্রদেশ ইউননানের ফুয়ার শহরে চাষ হয় বলেই এই নাম।
এখানকার জিংমাই পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী দাই ও বুলং জাতি ঐতিহ্যগতভাবে এই চা চাষ করে। প্রাচীন কাল থেকেই এই চা কে তারা দেখে সৌভাগ্যের উৎস হিসেবে।
চীনের ঐতিহ্যবাহী তাং রাজবংশের শাসনামলে এই ফু চায়ের প্রচলন ঘটে। এর সাথে মিশে আছে ফুয়ার অঞ্চলের মানুষের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। পাশাপাশি এটি এখানকার আদিবাসীদের অন্যতম আয়েরও উৎস। ফলে ফুয়ার শহর হয়ে ওঠে চায়ের বিতরণ ও বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে।
ঘুরতে আসা পর্যটকদের অন্যতম পছন্দ এই ফু চা। এমনকি জিমাই পাহাড়ের বাসিন্দাদের সঙ্গে গাঢ় চা পান করতে করতে আড্ডায় মাতেন পর্যটকরাও।
ফুয়ার শহরের জিংমাই পাহাড় ল্যাঙ্কাং নদীর পশ্চিম দিকের ছয়টি প্রাচীন চা পাহাড়ের মধ্যে একটি। পর্বতটি বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন এবং বৃহত্তম চা বাগান হিসেবে পরিচত।
জিয়াংগং, দাই চা চাষী
"আমরা এই চা বাগানটিকে আমাদের নিজস্ব উঠোন হিসাবে বিবেচনা করি।"
পাহাড়ে আছে উঁচু উঁচু পুরনো গাছ, সেসব গাছে নিচেই বেড়ে উঠছে চা গাছ। আর এসব গাছে দেখা যায় এক ধরনের পরজীবী উদ্ভিদ। এসব পরজীবী দেখতে অনেকটা কাঁকড়ার পায়ের মতো। এই পরজীবী থেকেই তৈরি হয় ‘ফু’ চা।
এই চা গাছগুলো বছরের পর বছর ধরে স্থানীয়দের আয়ের উৎস, যা এখন চীনের অর্থিনীতিতে বিরাট ভূমিকা পালন করছে।
সম্পাদনা: সাজিদ রাজু