জীবনকে উজ্জ্বল করেছে হৌশান গ্রামের পুনরুজ্জীবন
2022-12-26 12:55:47

হুনান প্রদেশের শিমেন জেলার হুপিংশান থানার হৌশান গ্রাম হুনান ও হুপেই প্রদেশের সীমান্তবর্তী গভীর পাহাড়ে অবস্থিত। গ্রামে প্রবেশ করার পাকা পথ নির্মিত হবার আগে পর্বতমালা এক একটি গভীর “দেয়াল”-এর মতো ৩৭০ জনের বেশি গ্রামবাসীদের ফাঁদে আটকে রেখেছিল।

 

আটাত্তর বছর বয়সী বৃদ্ধ থিয়ান সিয়াংতোং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭শ’ মিটার উঁচু শৈলপার্শ্বে বসবাস করেন। আগের দরিদ্র্য জীবন তাঁর মনের উপর গভীর ছাপ ফেলেছে। তিনি বলেন, পাহাড়ী পথ শুধু হেঁটে হেঁটে যেতে হতো। নদীর ওপর সেতু ছিল না। শুষ্ক মৌসুমে পাথরের ওপর হাঁটতে পারতাম, কিন্তু নদীর আকস্মিক প্লাবনের সময় তিন-চার ঘন্টা পাহাড়ী রাস্তা ঘুরতে হতো। তা খুবই কঠিন ছিল।

 

পশ্চাত্পদ পরিবহনের কারণে গ্রামবাসীদের ১৭২০ হেক্টর পাহাড় মাটির ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হতো। কাঠের ঘরে থেকে সংগ্রহ করা চায়ের পাতা এবং গরু, ছাগল ও শূকর বিক্রি হতো না। শিল্পের ভিত্তি দুর্বল ও গ্রামীণ কর্মীদের স্থায়ী অফিস ছিল না। গ্রামটি কিভাবে উন্নয়ন করবে সে ধারণাও ছিল না।

 

দারিদ্রবিমোচন যুদ্ধ চলাকালে হৌশান গ্রামের মৌলিক পরিবর্তন ঘটেছে। বহু পক্ষের সমর্থনে ৮ কিলোমিটারের একটি পাকা রাস্তা একটি বেল্টের মতো পাহাড়ের ঢালে নির্মিত হয়। সেতুও নির্মিত হয়। গ্রামবাসীরা পাহাড়ি পথে হাঁটার ইতিহাসকে বিদায় জানায়।

 

বাহান্ন বছর বয়সী গ্রামবাসী লি ইয়োং তোংয়ের নতুন ঘর নির্মাণের ইচ্ছা পূরণ হয়। তিনি বলেন, “অতীতে এটা কল্পনার বাইরে ছিল। কিন্তু এখন ইটের বাড়িঘর নির্মিত হয়েছে। জীবনটা সঙ্গে সঙ্গে আরো উজ্জ্বল হয়েছে।”

 

সাম্প্রতিক সময়ের উন্নয়ন নিয়ে অনেক গ্রামবাসী প্রশংসায় পঞ্চমুখ। পরিবারের পাইপ নেটওয়ার্ক সংস্কার মৌসুমি পানি সংকট সমাধান করেছে। জরাজীর্ণ বাড়ি সংস্কারের কারণে দরিদ্র্য মানুষের থাকার ঘর হয়েছে। চিকিত্সা ও শিক্ষা নিশ্চয়তা জোরদার হয়েছে। মোবাইল যোগাযোগ বেস স্টেশন নির্মাণ আংশিক জায়গার মোবাইলফোনের সংকেত শূন্যস্থান পূরণ করেছে। গ্রাম পর্যায়ের সুবিধাজনক পরিষেবা প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে জনসাধারণকে সহায়তা করা হচ্ছে।

 

শিমেন জেলা সংশ্লিষ্ট উদ্দীপ্ত নীতি প্রণয়ন করার মাধ্যমে সরকারি কর্মীদের গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনসহ মৌলিক স্তরে মিলিত হতে উত্সাহ দেয়। ফলে বহু তরুণ সরকারি কর্মী উন্নয়নের নতুন শক্তিতে পরিণত হন। চারজন তরুণ সরকারি কর্মী হৌশান গ্রামে নিয়োগ দিয়ে গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনের জন্য যৌবন ও বুদ্ধি যোগানো হয়। হৌশান গ্রামের ২৯ বছর বয়সী গ্রামীণ সচিব ছিন চিয়ে তাদের মধ্যে অন্যতম।

 

ছিন চিয়ে’র চোখে হৌশান গ্রাম দারিদ্র্যমুক্তি  সুসংহত করার ফলাফল গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনের সঙ্গে সংযুক্ত করে, অব্যাহতভাবে অবকাঠামো পূর্ণাঙ্গরূপে গড়ে তোলার পূর্বশর্তে অব্যাহতভাবে জনসাধারণের অভ্যন্তরীণ চালিকাশক্তি উদ্দীপ্ত করতে হয়েছে। “জনসাধারণের ব্যাপক অংশগ্রহণ প্রবর্তন করে, বিপুলহারে মূল বাস্তুবিদ্যা কৃষি পণ্য প্রজনন উন্নয়ন করে, জনগণ সমৃদ্ধ শিল্প ঠিক করে, বৈশিষ্ট্যময় ব্র্যান্ড তৈরি করে, সুন্দর জীবন আরো উত্তেজনাপূর্ণ হয়েছে।”  (প্রেমা/এনাম)