ডিসেম্বর ২৩: গত ২১ ডিসেম্বর চীন-অস্ট্রেলিয়া কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং অস্ট্রেলিয়ার গভর্নর জেনারেল ড্যাবিড জন হার্লি এবং প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন।
একই দিন চীন ও অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীগণ বেইজিংয়ে ষষ্ঠ কূটনৈতিক ও কৌশলগত সংলাপে মিলিত হন। তাতে দুই মন্ত্রী একমত হন যে চীন-অস্ট্রেলিয়া সম্পর্ক দু’দেশের সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কে রূপান্তরিত হবে। এর ভিত্তিতে পরস্পরকে শ্রদ্ধা,সমতা ও কল্যাণ প্রদর্শনের পাশাপাশি মতভেদ নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। এটি চীন ও অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক উন্নয়নের সর্বশেষ প্রচেষ্টা। গত মাসে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বালি দ্বীপে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজের সঙ্গে বৈঠকের সময় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়নের দিকনির্দেশনা দেন।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী তিনবছর পর আবারও চীন সফরে আসেন এবং চার বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকা কূটনৈতিক ও কৌশলগত সংলাপ পুনরুদ্ধার করেন। অস্ট্রেলিয়ার ফাইনানশল রিভিউ পত্রিকার মতে,দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকীর সুযোগ কাজে লাগিয়ে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চীন সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে স্থিতিশীল করার নতুন পদক্ষেপ।
চীন ও অস্ট্রেলিয়া এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ দেশ। দু’দেশের সম্পর্ক দীর্ঘকাল ধরে উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে চীনের সম্পর্কের মধ্যে অগ্রসর ছিল। চীন অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। অস্ট্রেলিয়ায় চীনের শিক্ষার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। করোনা মহামারির আগে চীন ছিল অস্ট্রেলিয়ায় আগত পর্যটকদের প্রথম উত্স। এসব প্রমাণ করে যে চীন ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা রয়েছে। তবে,গত কয়েক বছরে অস্ট্রেলিয়ার এক শ্রেণীর রাজনীতিকরা যুক্তরাষ্ট্রের পিছু চলে চীনকে দমন করেছে। চীনের হাইটেক প্রতিষ্ঠানের অস্ট্রেলিয়ায় ফাইভজি প্রতিষ্ঠায় অংশ নেয়া নিষিদ্ধ এবং কথিত ‘চীনা হুমকি’ অপপ্রচার করে।
তবে, চলতি বছরের মে মাসে অস্ট্রেলিয়ার নতুন সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের সদিচ্ছা প্রকাশ করে। চীনও সে সদিচ্ছার ইতিবাচক জবাব দিয়েছে। ফলে চীন ও অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক উন্নয়নের সুযোগ দেখা দিয়েছে।
চীন ও অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্কোন্নয়ন প্রসঙ্গে চীন তিনটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছে। সেগুলো হলো: পরস্পরকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন, অভিন্নতা খুঁজা এবং ভিন্নতাকে সম্মান করা এবং পারস্পরিক কল্যাণ সৃষ্টি করা। দু’দেশ যোগাযোগ জোরদার, মতভেদ মোকাবিলা, বাস্তব সহযোগিতা বেগবান এবং সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান জোরদারসহ চারটি ক্ষেত্রে পরবর্তী চীন-অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কোন্নয়নের জন্য রোডম্যাপ তৈরি করেছে। এ চারটি প্রস্তাব দু’দেশের সম্পর্ককে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার অগ্রযাত্রা পুনরুদ্ধারে অনুকূল হবে।
(রুবি/এনাম/শিশির)