গ্রামীণ উপস্থাপকের লাইভস্ট্রিমে চাঙ্গা পাহাড়ী অর্থনীতি
2022-12-23 19:12:08

লাইভস্ট্রিমের দ্রুত গতির গাড়িতে করে একটার পর একটা অচেনা ঐতিহ্যবাহী খাদ্য বাজারজাত করা হয়েছে। সম্প্রতি চীনের চিয়াং সি প্রদেশে অনেক ‘নতুন কৃষক” দেখা দিয়েছে। নতুন কৃষকরা উপস্থাপক হিসেবে লাইভস্ট্রিম ও শর্ট ভিডিওতে গ্রামীণ সুন্দর দৃশ্য ও ঐতিহ্যবাহী খাবার তুলে ধরেন। তাদের চেষ্টায় পাহাড়ী অর্থনীতি প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠেছে।

“সবাই দেখুন, এ মধু অনেক মিষ্টি”। চিয়াং সি প্রদেশের শাং রাও শহরের সিয়াও ফেং গ্রামে ওয়াং ছাই সিয়া নামের এক মেয়ে নতুন করে সংগ্রহ করা মধু তার হাতে ধরে লাইভস্ট্রিমে গ্রাহকদের কাছে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিল। দূরে অবস্থিত সিয়াও ফেং গ্রামে নানা খাদ্য বিক্রিতে সাহায্য করার লক্ষ্যে ওয়াং ছাই সিয়া সব সময় সেখানে গিয়ে লাইভস্ট্রিম করেন। বর্তমানে তার লাইভস্ট্রিম স্থানীয় খাদ্য বিক্রির স্থিতিশীল পদ্ধতিতে পরিণত হয়েছে।

ফেং ছেং শহরের লুই শি উপজেলায় সিয়ো বিং ছিন গ্রামীণ সুন্দর দৃশ্য ও রীতিকে কেন্দ্র করে অনেক শর্ট ভিডিও তৈরি করেছেন। গত কয়েক বছরে তিনি বিনা পয়সায় জন্মস্থানের সুন্দর দৃশ্য ও খাবার সম্প্রচার করেছেন। তিনি বলেন, ‘পাহাড়ী অঞ্চলে রয়েছে অনেক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন খাদ্য। তবে বাইরে কেউ এসব সম্পর্কে জানে না। আমি লাইভস্ট্রিম এবং শর্ট ভিডিও’র মাধ্যমে সেগুলো সম্প্রচার করতে চাই।”

বর্তমানে চিয়াং সি প্রদেশের ওয়াং ছাই সিয়া ও সিয়োং বিং ছিন’র মতো নারী উপস্থাপিকা কম নয়। তারা মোবাইলকে কৃষকের যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনের জন্য নিজের ভূমিকা পালন করছেন।

 চিয়াং সি প্রদেশের পিং সিয়াং শহরের কুয়াং হুই গ্রামে ৪৪ বছর বয়সী উ চিয়ান মিং স্থানীয় মুর্গি লালনের পরিবেশ তুলে ধরেন। ২০২০ সালে স্থানীয় গ্রাম সরকারের সাহায্যে তিনি লাইভস্ট্রিম করার প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন। এরপর লাইভস্ট্রিমের মাধ্যমে তিনি ১ হাজারটি মুর্গি এবং ১০ হাজারটিরও বেশি ডিম বিক্রি করেছেন। তাকে মজা করে ‘মুর্গির কমান্ডার” বলে ডাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

নতুন গণমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মের সাহায্যে আন ফু জেলার ইয়াং সি উপজেলা লাইভস্ট্রিম প্রশিক্ষণের কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত করে এবং বিনা পয়সায় স্থানীয় বাসিন্দাদেরকে প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ প্রদান করে।

ইয়াং সি উপজেলার সিপিসি’র সম্পাদক লি হুই বলেন, ই-কমার্সে লাইভস্ট্রিমের মাধ্যমে পাহাড়ী কৃষি পণ্য প্রদর্শিত হয়েছে। তাতে পাহাড়ী অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।

পিং সিয়াং শহরের লু সি জেলায় লাইভস্ট্রিমের কেন্দ্রে গ্রামীণ উপস্থাপকরা স্থানীয় কৃষি পণ্য নিখিল চীনে বিক্রির চেষ্টা চালায়। লাইভস্ট্রিম কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে শর্ট ভিডিও ও লাইভস্ট্রিমের স্কিল প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর লু সি জেলায় নতুন পেশাদার কৃষকের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বর্তমানে এ জেলায় লাইভস্ট্রিম প্রচারকারী লোকের সংখ্যা ৮০০০ জনেরও বেশি এবং প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩০০টি ছাড়িয়েছে।

বর্তমানে কৃষি পণ্য বিক্রি করতে গেলে ই-কমার্সের পদ্ধতি খুঁজে বের করা চিয়াং সি প্রদেশের অনেক কৃষকের প্রথম পছন্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অধিকতর ঐতিহ্যবাহী কৃষি পণ্য ই-কমার্সের চেইনে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। গ্রামীণ লাইভস্ট্রিমের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করা বর্তমান চীনা কৃষকদের উপার্জন বৃদ্ধির নতুন পদ্ধতিতে পরিণত হয়েছে।

(রুবি/এনাম)