দেহঘড়ি পর্ব-১০১
2022-12-23 19:05:49

‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে প্রাকৃতিক উপায়ে রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময় নিয়ে আলোচনা ‘ভালো থাকার আছে উপায়’, সাক্ষাৎকারভিত্তিক আয়োজন ‘আপনার ডাক্তার’ এবং খাদ্যের পুষ্টিগুণ নিয়ে আলোচনা ‘কী খাবো, কী খাবো না’।

 

#ঐতিহ্যবাহী_ চিকিৎসাধারা

অন্ত্র সুস্থ রাখে টিসিএম

ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা ব্যবস্থা বা টিসিএমে অন্ত্রকে দ্বিতীয় মস্তিষ্ক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এর কারণ কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের মতো অন্ত্রেও প্রচুর পরিমাণে নিউরন ও নিউরোট্রান্সমিটার থাকে। অন্ত্র মস্তিষ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং এর কাজ কেবল খাবার হজমে সীমাবদ্ধ নয়; এর ব্যাপ্তি আরও বেশি। আমাদের মানসিক অবস্থা ও অন্যান্য রোগের জন্যও দায়ী অন্ত্র। টিসিএমে মনে করা হয়, পাকস্থলী ও প্লীহা নিয়েই হজম ব্যবস্থা গঠিত এবং হজম, শোষণ ও শরীরজুড়ে পুষ্টি পরিবহন করার ক্ষমতার কারণে এ দুটিকে শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বলে মনে করা হয়।

পাকস্থলী-অন্ত্রের চিকিত্সায় টিসিএম কীভাবে কাজ করে?

মানবদেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে এবং এবং দেহকে শক্তিশালী করতে কয়েক শতাব্দী ধরে পেটের ম্যাসেজ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। পাকস্থলীর কাজ খাদ্যকে অন্ত্রের দিকে নিয়ে যাওয়া কিন্তু অন্ত্রে যখন ব্লকেজ দেখা দেয়, তখন বাধাপ্রাপ্ত হয়ে খাবার আবার উপরে চলে যায়। এর ফলে অ্যাসিড প্রতিপ্রবাহ, বমি ও বদহজম হয়। এছাড়া অন্ত্রের বাধার কারণে খাদ্য অন্ত্রে আটকে যেতে পারে এবং ‘ছি’ বা জীবনশক্তি প্রবাহে বাধা হতে পারে, যার ফরে পেট বড় ও শক্ত হয়ে যেতে পারে।

পাকস্থলী ও অন্ত্রের টিসিএম চিকিত্সার শিকড় গ্রোথিত ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা পদ্ধতির সেই বিশ্বাসে যাতে মনে করা হয়, ট্রমা ও মানসিক সমস্যাগুলো অন্ত্র-ব্যবস্থার মধ্যেই সঞ্চিত থাকে এবং যখন সেগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা না হয়, তখন বিভিন্ন অসুস্থতা হিসাবে সেগুলো প্রকাশ পায়।

কে এই চিকিত্সার জন্য উপযুক্ত?

টিসিএমের মাধ্যমে পাকস্থলী ও অন্ত্রের চিকিত্সা হলো একটি অনাক্রমণকারী বা নন-ইনভেসিভ চিকিত্সা যা সব ধরনের মানুষের জন্য উপযুক্ত। ক্ষুধামন্দা, পেট ফোলা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, পেটের চর্বি ও গ্যাস্ট্রিকজনিত ব্যথার মতো স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিরা টিসিএম চিকিত্সা থেকে ব্যাপকভাবে উপকৃত হতে পারেন। টিসিএমের মাধ্যমে পাকস্থলী ও অন্ত্রের চিকিত্সায় যেসব উপকার পাওয়া যায়, সেগুলো জানিয়ে দিচ্ছি এখন:

হজমজনিত স্বাস্থ্যের উন্নতি: হজমের সমস্যা যেমন পেট ফোলা, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটের যন্ত্রণা, অ্যাসিড প্রতিপ্রবাহ ইত্যাদি সমস্যা দূর করে এই চিকিৎসা।

ওজন কমায়: শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করা এবং শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া শক্তিশালী করার মাধ্যমে ওজন কমায় পাকস্থলী ও অন্ত্রের টিসিএম চিকিৎসা।

প্রাক-রজঃনিবৃত্তির উপসর্গ উপশম করে: এই চিকিৎসা মাসিকের বাধা, অনিয়মিত মাসিক ও বন্ধ্যাত্বের জন্য দায়ী হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দূর করে প্রাক-রজঃনিবৃত্তির উপসর্গগুলো থেকে মুক্তি দেয়।

মেজাজ ও সুস্থতা নিশ্চিত করে: টিসিএম চিকিৎসা চাপা আবেগ দূর করে মেজাজ ভালো করে ও সুস্থতা নিশ্চিত করে।

শোথ দূর করে: শরীরে পানি নামা, শরীর ফোলা, শ্লেষ্মা ও ডায়রিয়ার জন্য দায়ী শরীরের অত্যধিক তরল দূর করে পাকস্থলী ও অন্ত্রের টিসিএম চিকিৎসা।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: বিষাক্ত পদার্থ ও বর্জ্য বের করার জন্য সঠিক লিম্ফ্যাটিক তরলের চলাচল বাড়ানো মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় টিসিএম।  - রহমান

 

# আপনার ডাক্তার

দেহঘড়ির আজকের পর্বে আমরা কথা বলেছি হৃদরোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধ নিয়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বে ১২৮ কোটি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। এদের দুই-তৃতীয়াংশের বাস নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করেন, যার অন্যতম কারণ উচ্চ রক্তচাপ। দেশে প্রতি পাঁচ জন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে এক জনের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পৃথিবীব্যাপী মোট মৃত্যুর ৩২ শতাংশ হয়ে থাকে হৃদরোগ এবং রক্তনালির রোগের কারণে। হৃদরোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধ নিয়ে কথা বলতে আজ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তৃপ্তীশ চন্দ্র ঘোষ। তিনি কুমিল্লার ময়নামতি মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ।

 

 ‘দেহঘড়ি’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত ও পরামর্শ জানতে চাই আমরা। আমাদের ফেইসবুক পেইজ facebook.com/CMGbangla অথবা ওয়েবসাইট bengali.cri.cn’র মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত বা পরামর্শ।