প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং’র চোখে চীনা চা
2022-12-16 15:02:03

সম্প্রতি চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং অবৈষয়িক উত্তরাধিকার সংরক্ষণে নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, ‘চীনের ঐতিহ্যবাহী চা তৈরির কৌশল ও সংশ্লিষ্ট রীতি জাতিসংঘ ইউনেস্কোর অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার তালিকায় স্থান পেয়েছে। তা চীনা চা সংস্কৃতি সম্প্রসারণের জন্য তাত্পর্যপূর্ণ।



চীন চায়ের উত্স এবং বর্তমানে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চা সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও ধারণের ওপর বেশ গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বহুবার ‘চা থেকে চেতনা’র কথা বলেন। তিনি চা’তে লোকানো সাংস্কৃতিক বিষয় ব্যাখ্যা করে বলেন, চা সংস্কৃতিতে রয়েছে মানুষ ও প্রকৃতির সম্প্রীতিময় সহাবস্থান এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মধ্যে সম্প্রীতি এবং সহযোগিতার মধ্যে অভিন্ন অর্জনসহ নানা মূল্যবোধ প্রতিফলিত হয়।

২০২০ সালের ২১ মে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ‘আন্তর্জাতিক চা দিবস’ সংক্রান্ত ধারাবাহিক অনুষ্ঠানে অভিনন্দনবার্তা পাঠিয়ে বলেন, জাতিসংঘের “আন্তর্জাতিক চা দিবস’ পালনের সিদ্ধান্তে চা পাতার মূল্য স্বীকৃতি পেয়েছে। তা চা শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং চা সংস্কৃতি সম্প্রসারণ করার জন্য খুব তাত্পর্যপূর্ণ। চা পাতা উত্পাদন ও ভোগের বড় দেশ হিসেবে চীন বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বিশ্ব চা শিল্পের সুস্থ উন্নয়ন ও চা সংস্কৃতির বিনিময় গভীর করতে ইচ্ছুক, যাতে অধিকতর মানুষ চা সম্পর্কে জানতে পারে, চা পান করতে ভালোবাসে এবং চায়ের সুগন্ধে সুন্দর জীবন উপভোগ করতে পারে।

এক কাপ চীনা চা চীনা জাতির সংস্কৃতিক গুরুত্বপূর্ণ বাহক। অতীতকালের সিল্ক রোড, ঘোড়ায় চা পরিবহনের প্রাচীন পথ, চা জাহাজের প্রাচীন পথ থেকে বর্তমান রেশম পথের অর্থনৈতিক অঞ্চল ও একবিংশ শতাব্দীর সমুদ্র রেশম পথ পর্যন্ত, চা ইতিহাস ও সীমান্ত অতিক্রম করে বিশ্ববাসীর কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সারা বিশ্বে চা উত্পাদনকারী দেশ ও অঞ্চলের সংখ্যা ৬০টিরও বেশি। চান পান করা মানুষের সংখ্যা ২০০ কোটি ছাড়িয়েছে।

সায়ান সি প্রদেশের চা বাগানে সি চিন পিং


সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকা ধারণ এবং সবুজ উন্নয়নের জন্য সি চিন পিং অনেক সুবজ চা বাগানে পদচারণা করেছেন।

২০২০ সালের মার্চ মাসে চীনের চে চিয়াং প্রদেশের হাং চৌ শহর পরিদর্শনের সময় সেখানকার বিখ্যাত লুং চিন চা তৈরির প্রক্রিয়া প্রত্যক্ষ করেছেন এবং সবাইকে ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্পসহ নানা অবৈষয়িক উত্তরাধিকার ধারণ করতে উত্সাহিত করেছেন। এ বছরের এপ্রিল মাসে তিনি সায়ান সি প্রদেশ পরিদর্শনের সময় চা বাগানে বসন্তের চা পাতা বৃদ্ধির খবর জেনে নেন। তিনি চা চাষীদের সঙ্গে আন্তরিকভাবে কথাবার্তা বলেন এবং তাদের প্রতি সবুজ উন্নয়নের মাধ্যমে সমৃদ্ধি অর্জন এবং সচ্ছল জীবন গড়ে তুলার আশা প্রকাশ করেছেন।

ফু চিয়ান প্রদেশের উ ই পাহাড়ে চা বাগানে সি চিন পিং

২০২১ সালের মার্চ মাসে সি চিন পিং ফু চিয়ান প্রদেশের উ ই পাহাড়ে চা বাগান পরিদর্শনের সময় বলেন,অতীতে চা শিল্প আপনাদের দারিদ্র্যমুক্তির স্তম্ভ শিল্প। ভবিষ্যতে এটি গ্রাম পুনরুজ্জীবিত করার স্তম্ভে পরিণত হওয়া উচিত।

 টিইজমে আছে চীনাদের জীবন দর্শন এবং আতিথেয়তার রূপ।

২০১২ সালের জুলাই মাসে ব্রাজিলের সংসদে ভাষণ দেওয়ার সময় সি চিন পিং বলেন, ২০০ বছর আগে প্রথম দলীয় চা চাষী সুদূর চীন থেকে ব্রাজিলে চা চাষ করা ও তৈরির কৌশল শিখাতে এসেছিল। দীর্ঘকালের আন্তরিক মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ চীন ও ব্রাজিলের জনগণ।

২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে বেইজিংয়ে সি চিন পিং ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নগুয়েন ফু থ্রোংয়ের সঙ্গে চা উপভোগের সময় চা সংস্কৃতি ও চীন-ভিয়েতনাম বন্ধুত্বের কথা উল্লেখ করেন।  সি চিন পিং বলেন, চীনা শব্দ ‘চা’ মানুষ মাঝখানে আছে। যার মানে ঘাস ও বৃক্ষের মধ্যে মানুষের সহাবস্থান। তাতে চীনা সংস্কৃতিতে সম্প্রীতির প্রতিফলন হয়েছে। মানব জাতির অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট কমিউনিটি গঠনের পথে চীনা চা ইতোমধ্যে চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন কূটনৈতিক চেতনার সাংস্কৃতিক দূতে পরিণত হয়েছে।

(রুবি/এনাম)