২০২২ সালে চীনের অর্থনৈতিক পর্যবেক্ষণ
2022-12-14 22:51:25

ডিসেম্বর ১৪: চীনা মহাকাশ স্টেশন আনুষ্ঠানিকভাবে একটি দীর্ঘমেয়াদী মানব বাসস্থান মোড খুলেছে।

"প্রতি কয়েক বছরে একটি উৎক্ষেপণ" থেকে "বছরে বেশ কয়েকবার উৎক্ষেপণ" করার অবস্থা তৈরি হয়েছে। মূল উপাদানগুলির আমদানি নির্ভরতা থেকে নিজেরা উৎপাদন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরীক্ষামূলক মহাকাশ গবেষণাগার থেকে শুরু করে স্বাধীন নিজস্ব মহাকাশ গবেষণা স্টেশন তৈরি করা হয়েছে। যা স্ব-নির্ভরতা ও স্ব-উন্নতির সুস্পষ্ট প্রমাণ। চীনের মহাকাশ শিল্প হল চীনের উদ্ভাবনের প্রাণশক্তি ও প্রাণবন্ত চিত্রায়ন।

কিছুদিন আগে অভ্যন্তরীণভাবে তৈরি সি৯১৯ বড় যাত্রীবাহী বিমানের গর্জন শোনা গিয়েছিল। প্রথম ব্যবহারকারীর কাছে তা হস্তান্তর করা হয়েছিল। সি৯১৯ সত্যিকারের সিভিল এভিয়েশন মিশন সম্পাদন করতে চলেছে। গবেষণা ও উন্নয়ন প্রক্রিয়া চলাকালীন চীন ৬ হাজারেরও বেশি বেসামরিক বিমান প্রযুক্তিতে সাফল্য অর্জন করেছে; যা গোটা বিমান শিল্পের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে চালিত করেছে।

"চায়না স্কাই আই" নামে পরিচিত ৫০০-মিটার-অ্যাপারচারের বৃহত্তম রেডিও টেলিস্কোপ এখন পর্যন্ত অবিচ্ছিন্নভাবে একের পর এক রেডিও বিস্ফোরণের ঘটনা আবিষ্কার করে চলেছে। এখন পর্যন্ত এটি ৬৬০ টিরও বেশি নতুন পালসার আবিষ্কার করেছে, এসব বিস্ফোরণের তথ্য উদঘাটন করে চলেছে।

বিশ্ব বৌদ্ধিক সম্পত্তি সংস্থার প্রকাশিত ‘গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স রিপোর্ট ২০২২’ অনুসারে, চীনের র‌্যাঙ্কিং টানা দশ বছর ধরে ক্রমাগত উন্নত হচ্ছে, বর্তমানে তা একাদশ স্থানে রয়েছে। ২০১২ থেকে ২৩ ধাপ বেড়েছে এবং ৩৬টি উচ্চ-মধ্যম আয়ের অর্থনীতির মধ্যে প্রথম অবস্থানে রয়েছে।

ক্রমাগত উদ্ভাবন ও নতুনত্বের দিকে এগিয়ে যাওয়া, এটাই আজকের চীন।

চীনের নানজিং চিজিনশান ল্যাবরেটরিতে, গবেষকরা ৬জি যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং "স্যাটেলাইট ইন্টারনেট যোগাযোগ" প্রযুক্তির উপর ফোকাস করছেন। কিছুদিন আগে, ল্যাবরেটরিটি বিশ্বের সর্বোচ্চ ৬জি ট্রান্সমিশন হারের রেকর্ড তৈরি করেছে। এই অগ্রগতি বিশ্বে ৬জি প্রযুক্তিকে কার্যকর ব্যবহারের জন্য উন্নীত করার পাশাপাশি চীনের নেতৃত্ব দেওয়ার ভিত্তি তৈরি করেছে। চাইনিজ একাডেমি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এর গবেষণাগারের পরিচালক এবং শিক্ষাবিদ লিউ ইউনচিয়েু বলেন যে, তাদের লক্ষ্য হল চীনের প্রকৃত অর্থনীতি উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রযুক্তিগত অর্জনগুলি ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করা।

 

আজ, চীনা বৈশিষ্ট্যের একটি জাতীয় পরীক্ষাগার ব্যবস্থা গড়ে উঠছে। কৌশলগত বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত শক্তির বৃদ্ধি জোরদার হচ্ছে, উদ্ভাবনী ক্লাস্টার বিকশিত হচ্ছে। ‘বিশ্বের শীর্ষ ১০০ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্লাস্টার র‍্যাঙ্কিং’-এর তালিকায় চীনের ২১টি ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্লাস্টার’ রয়েছে, যা সংখ্যার দিক থেকে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি বিশ্বের প্রথম স্থানে পৌঁছে গেছে।

 

জাতীয় শিল্প ইন্টারনেট বিগ ডেটা সেন্টারে, চার মিলিয়নেরও বেশি কারখানা চীনের শিল্প খাতের ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে ডেটা বিনিময় করছে। এমন নেটওয়ার্কযুক্ত ডিভাইসের সংখ্যা ৭৯ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে।

পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, চীন সাত শতাধিক ডিজিটাল ওয়ার্কশপ এবং স্মার্ট কারখানা তৈরি করেছে এবং স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং পাইলট প্রদর্শনী প্রকল্পের উৎপাদন দক্ষতা গড়ে ৪৮ শতাংশ বেড়েছে।

চীনের উদ্ভাবন এখন দেশকে আধুনিক কৃষির দিকে ধাবিত করছে।

এ বছর গম কাটার মৌসুমে ৫০ হাজারের বেশি গম কাটার পেইতৌ নেভিগেশন সিস্টেম ইনস্টল করা হয়। কম্বাইন হারভেস্টার ২১ ঘন্টারও কম সময়ে মোট ২৩২ মিউ এর এলাকার গম কাটা সম্পন্ন করে। এতে সাধারণ ফসল কাটার যন্ত্রের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি কার্যকারিতা প্রমাণ হয়েছে।

 

আজ চালকবিহীন খামার, মোবাইল ফোন তৈরি, এইআই তৈরি, নতুন প্রযুক্তি এবং নতুন অ্যাপ্লিকেশনগুলি আধুনিক কৃষির পথ খুলে দিচ্ছে। পাশাপাশি, টেলিমেডিসিন ও স্মার্ট লজিস্টিকসের নানা বিষয় মানুষকে জীবন পরিবর্তনের মতো প্রযুক্তির অনেক সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ করে দিয়েছে।

 

 

জিনিয়া/তৌহিদ/শুয়েই