আফরিন মিম, চীন আন্তর্জাতিক বেতার : প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে (বিআইসিসি) অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা।
করোনা পরবর্তী সময়ে দেশের পর্যটন খাতকে চাঙা করতে এই মেলার আয়োজন করেছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)।
তিন দিনব্যাপী এবারের পর্্যটন মেলায় ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়। দর্শনার্থীরা দেশের পাশাপাশি দেশের বাইরে ভ্রমণের বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করেন। মেলায় দেশি-বিদেশি ৯০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান ভালো ব্যবসা করেছে বলে জানান আয়োজকেরা।
আটাব জানায়, এবারের পর্্যটন মেলায় বকিংসহ লগদ লেনদেনের পরিমান ১০০ কোটির মতো হয়েছে।
পর্যটন মেলায় স্টল দিয়েছিল বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। এ স্টলে দেশের বিভিন্ন পর্যটন এলাকাগুলোতে নিজস্ব হোটেল, মোটেল, ট্যুর প্যাকেজসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা তুলে ধরেছে প্রতিষ্ঠানটি। মেলায় বিভিন্ন রুটের টিকিটে ছাড় দেয় বেসরকারি এয়ারলাইন্স ইউএস-বাংলা।
পর্যটন মেলায় বিমান পরিবহন সংস্থাগুলোর স্টলে বেশি ভিড় লক্ষ করা গেছে। এর মধ্যে বেসরকারি খাতের বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস, নভোএয়ার ও সদ্য বাজারে আসা এয়ার অ্যাস্ট্রার স্টলে ছিল বেশি ভিড়। সরকারি প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের স্টলেও দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। মেলায় ভ্রমণ, ভিসাসহ বিভিন্ন রিসোর্ট ও ভ্রমণ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশ নেয় অনলাইনভিত্তিক সেবা প্রদানকারী শেয়ার ট্রিপ, ফ্লাইট এক্সপার্ট ও ট্রাভেল চ্যাম্পের মতো প্রতিষ্ঠান।
এসব প্রতিষ্ঠান মেলা উপলক্ষে ছাড় দিয়ে পণ্য বিক্রির জন্য উপস্থাপন করে। এ সুযোগ লুফে নেন মেলায় আসা বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ।
মেলায় অংশগ্রহণকারী অনেকের মধ্যে দেশের বাইরের প্রতিষ্ঠানকে মেলায় অংশ নিতে দেওয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়াও দেখা গেছে। অনেকে বলেছেন, দেশে এখন ডলারের সংকট চলছে। এখন মানুষকে দেশের বাইরে ভ্রমণের জন্য উৎসাহ না দিয়ে দেশের ভেতরে ঘোরাঘুরিতে আগ্রহী করে তোলা উচিত। সেটি হলে অর্থনীতির জন্য ভালো হবে।
আটাব জানায়, এবারের মেলায় ১৫টির বেশি দেশ অংশ নিয়েছে। এর মাঝে রয়েছে ভারত, শ্রীলংকা, তুরস্ক, আজারবাইজান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ভুটান, নেপাল, মালদ্বীপ, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত। এছাড়াও বিভিন্ন দেশের এয়ারলাইন্স, হসপিটাল, ট্যুরিজম বোর্ড, ট্রাভেল এজেন্সি, ট্যুর অপারেটর, হোটেল, রিসোর্ট, ক্রুজ লাইনার, ডেস্টিনেশন ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ও অন্যান্য ট্রাভেল ও ট্যুরিজম সংশ্লিষ্ট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে মেলায়। এছাড়া মেলায় প্রোডাক্ট ব্রান্ডিং, বিদেশি মুদ্রা অর্জনে দেশের পর্যটন সেবার মান উন্নয়ন ও বিক্রির বাজার সৃষ্টিসহ নানান বিষয়ে সেমিনার, গোলটেবিল আলোচনা, কর্মশালা, বিটুবি সেশনসহ আকর্ষণীয় সব আয়োজন ছিল।
এ মেলা উপলক্ষে প্রথম দিন দেশের পর্যটনখাতে বিনিয়োগ সম্ভাবনা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া। দ্বিতীয় দিনে দেশের অ্যাভিয়েশন ও পর্যটন বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন। তৃতীয় দিন হয় ডিজিটাল যুগে পর্যটন শীর্ষক সেমিনার। সভাপতিত্ব করেন আটাবের সভাপতি।
সম্পাদনা – সাজিদ রাজু