ডিসেম্বর ৭: চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছেন, ‘ সাধারণ সমৃদ্ধিকে এগিয়ে নেওয়ায় সবচেয়ে কঠিন কাজটি এখনও গ্রামাঞ্চলে রয়েছে।’ ফাইভজি, মোবাইল ইন্টারনেট, ক্লাউড কম্পিউটিং, বিগ ডেটা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ব্লকচেইন নামক তথ্যপ্রযুক্তি ক্রমবর্ধমান হারে কৃষি ও গ্রামের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে। ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশ কৃষকদের উৎপাদন ও জীবনধারাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করছে এবং পরিবর্তন করছে।
কৃষির ‘চিপস’ হিসেবে বীজ ইতোমধ্যেই ‘ডিজিটাল উইং' দিয়ে সজ্জিত হয়েছে। চীনের শান তুং প্রদেশের ছিংতাও শহরের চি মো এলাকার বীজ শিল্পে ডিজিটাইজেশন হচ্ছে। এই শিল্প আরটিফিসিয়াল বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে ক্রমাগত বিকশিত হচ্ছে। স্থানীয় আধুনিক কৃষির বিকাশের জন্য একটি শক্তিশালী চালিকাশক্তি যুগিয়ে চলেছে আধুনিক প্রযুক্তি। দুদিনে, স্থানীয় একজন সবজি চাষী, গ্রিনহাউসে ০.১৮ হেক্টর জমিতে উৎপন্ন শসা সংগ্রহ করেছেন। এই বছর তিনি যে বীজ বাছাই করেছেন, তা সবই বীজ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সরবরাহ করা উচ্চ-মানের বীজ। এবার উৎপাদন আগের তুলনায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
কৃষির উচ্চ মানের উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে হবে। একটি নতুন দফার প্রযুক্তিগত বিপ্লব এবং শিল্প সংস্কারের নির্দেশনায়, ডিজিটাল রূপান্তর বিশ্বব্যাপী কৃষি উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবণতা হয়ে উঠেছে। ডিজিটাল রূপান্তর গবাদি পশু এবং হাঁস-মুরগির প্রজনন, মাঠ ব্যবস্থাপনা, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামকে আরও বুদ্ধিমান করে তুলতে, কৃষি উৎপাদন বাড়াতে এবং কৃষকদের আয় বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
‘উদাহরণস্বরূপ, একটি আধুনিক কৃষি তথ্যব্যবস্থা গড়ে তোলা, একটি কৃষি ডিজিটাল শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা এবং একটি আধুনিক কৃষি বিগ ডেটা সিস্টেম তৈরি করা কৃষি উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা এবং বিক্রয়ব্যবস্থাকে ডিজিটালভাবে একীভূত করতে পারে। কৃষিতথ্য এবং কার্যকরভাবে উদ্দীপিত কৃষির নতুন জীবনীশক্তি, শিল্প চেইনের সম্প্রসারণ, মান শৃঙ্খলের উন্নতি এবং সরবরাহ চেইনের বুদ্ধিমান বিকাশকে চালিত করবে এবং কৃষির উচ্চ-মানের উন্নয়নকে উন্নীত করবে।
বুদ্ধিমান ও দক্ষ ডিজিটাল বীজ শিল্প চেইনকে আরও উন্নত ও প্রসারিত করতে, ৩৫ কোটি ইউয়ান বিনিয়োগে ৫৫.৮ হেক্টর আয়তনের একটি আধুনিক কেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। সমাপ্তির পরে, এটি হবে শানতুংয়ের বৃহত্তম বুদ্ধিমান বীজকেন্দ্র। এখানে প্রতি বছর ১০ কোটি গাছপালা জন্মাবে এবং আশেপাশের ৩০০০ হেক্টর শাকসবজির জন্য বীজ পরিষেবা প্রদান করবে। বর্তমানে, স্থানীয় শসার বীজ গোটা উত্তরাঞ্চলের ৮০ শতাংশ বাজার দখল করে আছে। এখানকার উন্নত টমেটো, রঙিন মরিচ এবং অন্যান্য সূক্ষ্ম জাত দেশের ৩২টি প্রদেশ, শহর, স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে বিক্রি করা হয়। এমনকি, চীনা বাঁধাকপি এবং পাকচোইয়ের মতো সূক্ষ্ম জাতের সবজি জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়’ ।
অতীতে, কৃষিকাজ অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করত, কিন্তু এখন ডেটা, বিগ ডাটা, ইন্টারনেট, ক্লাউড কম্পিউটিং, ইন্টারনেট অফ থিংস এবং ফাইভজিসহ আধুনিক প্রযুক্তি ধীরে ধীরে কৃষি খাতে ব্যবহৃত হচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী কৃষি এখন আরও বেশি ‘ফ্যাশনেবল’ এবং ডিজিটাল কৃষির বিকাশের অসীম সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। এতে কৃষকদের আয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)