চীনের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা এখন মূল লক্ষ্য
2022-12-05 16:00:15

ডিসেম্বর ৫: সম্প্রতি প্রকাশিত চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুসারে, গত নভেম্বরে দেশের উত্পাদন শিল্পে ক্রয় ব্যবস্থাপক সূচক (পিএমআই) ছিল ৪৮ শতাংশ, যা গত অক্টোবরের ৪৯.২ শতাংশের চেয়ে ১.২ শতাংশ কম। এতে প্রতিফলিত হচ্ছে যে, মহামারীর কারণে দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম চাপের মধ্যে রয়েছে, তবে কিছু জীবিকা-সংক্রান্ত শিল্পে স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ভবিষ্যতে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখাই হবে মূল লক্ষ্য।  

বর্তমানে হাই-টেক উত্পাদন শিল্পও স্থিতিশীলভাবে উন্নত হচ্ছে। জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুসারে, গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চীনের জিডিপি আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে তৃতীয় প্রান্তিকে, জিডিপি বেড়েছে ৩.৯ শতাংশ, যা দ্বিতীয় প্রান্তিকের চেয়ে ০.৪ শতাংশ বেশি। এই বৃদ্ধি ছিল প্রত্যাশার চেয়ে বেশি। এ পরিস্থিতিতে, অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা বা আগের পর্যায়ে পুনরুদ্ধার করা সহজ কাজ নয়। অবশ্য, মহামারী সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ ও অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও, চীনা অর্থনীতি এখনও দৃঢ় স্থিতিস্থাপকতা দেখাচ্ছে।

গত নভেম্বরে উত্পাদন শিল্পে সমৃদ্ধির সামগ্রিক মাত্রা কমেছে। তবে এখনো কোন কোন শিল্প উন্নত হচ্ছে। এর মধ্যে কৃষিপণ্য, খাদ্য, পানীয়, চা, ওষুধ, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম শিল্পের পিএমআই এবং উত্পাদন ও ব্যবসায়িক কার্যকলাপের প্রত্যাশা সূচক বুম রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে। বাজারের চাহিদা ক্রমশ বাড়ায় প্রতিষ্ঠানগুলো এখন আশাবাদী।

পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, গত নভেম্বরে অ-উত্পাদন ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সূচক ছিল ৪৬.৭ শতাংশ, যা গত অক্টোবরের চেয়ে ২ শতাংশ কম। টানা দুই মাস এ সূচক ক্রিটিক্যাল পয়েন্টের নিচে থাকলো। কিন্তু  নির্মাণ শিল্প তুলনামূলকভাবে উন্নতির ধারা বজায় রেখেছে।

চায়না পিপলস ব্যাংক আজ (সোমবার) আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত রিজার্ভ অনুপাত ০.২৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে একটি যুক্তিসঙ্গত ও পর্যাপ্ত তারল্য বজায় রাখা এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ভিত্তি সুসংহত করা যায়। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, আরেক ধাপে আর্থিক সংস্থাগুলোকে বাস্তব ঋণের হার কমাতে চাপ দেওয়া হবে। হাউজিং ক্রেডিট খাতে অব্যাহতভাবে নীতি উন্নয়ন করা হবে এবং  নাগরিকদের জীবিকা ও বাসস্থান খাতে বিশেষ ঋণের ব্যবহার বাড়ানো হবে। কেন্দ্রীয় সরকার বিনিয়োগ ও ভোক্তাব্যয়কে উদ্দীপিত করার জন্য বেশকিছু আর্থিকনীতি প্রবর্তন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

 

 

বস্তুত, চলতি বছর মহামারীর কারণে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের গতি মন্থর হলেও, বিভিন্ন পর্যায়ের সরকার পরিষেবা শিল্পের উন্নয়নে বিভিন্ন নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। জনগণের জীবিকা নিশ্চত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ অব্যাহত আছে। মানুষের জীবন-জীবিকার সাথে সম্পর্কিত কোনো কোনো উত্পাদন শিল্প স্থিতিশীল আছে ও ক্রমশ উন্নত হচ্ছে। এ ছাড়া,  ভোগ্যপণ্য উত্পাদন শিল্পের পিএমআই ও উচ্চ-প্রযুক্তি উত্পাদন শিল্পের পিএমআই’র পতনের গতি তুলনামূলকভাবে গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে রয়েছে। মহামারীর নেতিবাচক প্রভাব কমতে শুরু করলে এক্ষেত্রে গতি বাড়তে পারে। মুক্তা, সিএমজি, বেইজিং থেকে। (ছাই/আলিম)