রোববারের আলাপন- বিশ্বকাপ ২০২২
2022-12-05 20:23:53


আকাশ: সুপ্রিয় শ্রোতা, সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠানে। আপনাদের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের সাপ্তাহিক আয়োজন ‘রোববারের আলাপন’। আপনাদের সঙ্গে আছি আমি আকাশ এবং তৌহিদ।


প্রিয় বন্ধুরা, কাতারে এখন বিশ্বকাপ ফুটবল চলছে। গোটা বিশ্বের ফুটবল ফ্যানদের জন্য এটি বিরাট পুনর্মিলন। এ সময়ে, আমরা একত্রিত হয়েছি, একসাথে আনন্দ ও আগ্রহ ভাগাভাগি করছি। এটা আমাদের জন্য একটি অভিন্ন উৎসব। তাইনা? আজ আমরা ফুটবল ও বিশ্বকাপ নিয়ে আলাপ করব, কেমন?


বন্ধুরা, আমি উত্তরায় থাকার সময়, ফুটবলের প্রতি বাংলাদেশি বন্ধুদের আগ্রহ ও ভালবাসা গভীরভাবে অনুভব করেছি। প্রতিবার আমি উত্তরার পার্কে শরীরচর্চার সময়, মাঝেমাঝে দেখতাম অনেকেই ফুটবল খেলতেন। আমিও একবার আশুলিয়ার মাঠে বাংলাদেশি বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলেছিলাম। ফুটবলের প্রতি আমাদের অভিন্ন আগ্রহ থেকেই আমরা একত্রিত হয়েছি। বন্ধুরা, সম্প্রতি ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে বাংলাদেশের কিছু ভিডিও চীনা নেটিজেনদের মধ্যে ভাইরাল হয়েছে। আমি প্রথমে এ বিষয়টি আপনাদের সামনে তুলে ধরব।


এ কয়েকটি ভিডিওর বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশের আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের ফ্যানরা একত্রিত হয়ে লম্ব ও বড় নীল সাদা পতাকা নিয়ে রাস্তায় গিয়ে মিছিল করছেন। তারা আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের Jersey পড়ে আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের প্রতি সমর্থন জানান। গোটা রাস্তা যেন নীল সাদা আনন্দের সাগরে পরিণত হয়। 


তৌহিদ ভাই, আপনি তা শুনলে আপনার কাছে কামন মনে হয়?

তৌহিদ:..

আকাশ: তাহলে, চীনা ফুটবল ফ্যানরা কেন এসব ভিডিও এত পছন্দ করেন? কারণ, ফুটবল ও বিশ্বকাপের প্রতি আমাদেরও একই রকম আগ্রহ ও ভালোবাসা রয়েছে। আমি এখন এ কয়েক দিনে চীনের একটি বিশ্বকাপ সম্পর্কিত গল্প আপনাদের সঙ্গে শোয়ার করব, কেমন?

সম্প্রতি, চীনের চ্য চিয়াং প্রদেশের হাং চৌ শহরের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ শোনেন যে, অনেক ছাত্রছাত্রী বিশ্বকাপ ফুটবল উপভোগ করতে চায়। এজন্য তিনি শিক্ষকদের একটি সভা আয়োজন করেন। তারা জানতে পারেন যে, বিশ্বকাপের অনেক ম্যাচের সময় হচ্ছে স্কুলের ‘সন্ধ্যা বেলা, যখন শিক্ষার্থীদের নিজেদের লেখাপড়া করার সময়। এ সময় ছাত্রছাত্রীদের ম্যাচ উপভোগ করার ব্যবস্থা করা সম্ভব। ম্যাচ অনুষ্ঠানের দিন কোনো homework বা বাড়ির কাজ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা! স্কুলের মিলনায়তনে ছাত্রছাত্রীদের বিশ্বকাপ ম্যাচ দেখার ব্যবস্থা করা হয়। অধ্যক্ষ জানান, কখনোই হাল না-ছাড়া বিশ্বকাপ ফুটবলের একটি চেতনা। যা ছেলেমেয়েদের শেখা উচিত। তিনি বলেন ,‘আমরা ছাত্রছাত্রীদের শরীরচর্চা বেশি করা ও খেলাধুলার চেতনা বেশি অনুসরণের জন্য উৎসাহিত করি। কিন্তু আমি মনে করি, ছাত্রছাত্রীদেরকে বিশ্বকাপের ম্যাচ একবার দেখালে, আমার দশ হাজার বাক্যের কথার চেয়ে বেশি কাজ হবে। তিনি আরো জানান, স্কুলটি যথাসময়ে ছাত্রছাত্রীদেরকে আরো বেশি আন্তর্জাতিক ইভেন্ট উপভোগ করার ব্যবস্থা করবে এবং বিশ্বকাপ সম্পর্কিত কিছু কার্যক্রম আয়োজন করবে। 


এই মাধ্যমিক স্কুল কেমন? আমি এ স্কুল অনেক পছন্দ করি, আপনারা পছন্দ করেন? আসলে এ থেকে আপনারা বুঝতে পারছেন যে চীনারা ফুটবল ও বিশ্বকাপ কত ভালবাসে। 

তৌহিদ ভাই, আপনি এ স্কুলটি বছন্দ করেন? আপনি কি বলতে চান এ বিষয়ে?

তৌহিদ:…

আকাশ: বন্ধুরা, তাহলে এখন আপনারা আমার সাথে চীনের আরেকটি পার্কে চলুন। বন্ধুরা, এ পার্কের নাম হচ্ছে লাও সান পার্ক, যা আমাদের সিএমজি ভবনের কাছাকাছি; এবং তা চীনের একটি সাধারণ পার্ক। এখানে একটি সাধারণ ফুটবল মাঠ ও কয়েকটি ফুটবল প্রশিক্ষণ মাঠও রয়েছে। এখানেও পেশাদার ফুটবল কোচও আছেন। মাঠে অনেক ছেলেমেয়েরা নিয়মিত ফুটবল প্রশিক্ষণ নেয়। 


বন্ধুরা, ফুটবল খেলা, বিশেষ করে এ খাতে তরুণতরুণীদের প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নের উপর চীন অনেক গুরুত্ব দেয়। ২০২১ সাল পর্যন্ত গোটা দেশে মোট ১ কোটি ২৬ লাখ ৫শ’ ফুটবল মাঠ তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট পরিকল্পনা অনুসারে, আগামী ৫ বছরে, চীনে মোট ২০ হাজার ক্যাম্পাসে ফুটবল মাঠ তৈরি করা হবে। 


পাশাপাশি, নারীদের ফুটবল উন্নয়নেও চীন অনেক গুরুত্ব দেয়। সম্প্রতি, ‘চীনের নারী ফুটবল উন্নয়নের পরিকল্পনা (২০২২-২০৩৫ সাল) প্রকাশিত হয়েছে। পরিকল্পনা অনুসারে, চীন ধারাবাহিক ব্যবস্থার মাধ্যমে অব্যাহতভাবে নারীদের ফুটবল এগিয়ে নেবে এবং চীন ইতিবাচকভাবে ২০৩১ সালের নারী বিশ্বকাপ আয়োজনে বিড করবে। 

আকাশ: ভাই, এখনও আমার মনে আছে, ২০০২ সালে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান বিশ্বকাপ আয়োজনের সময়, তখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া করতাম। তখন আমার রুমমেট ও সহপাঠীরা একযোগে বিশ্বকাপ টিভিতে লাইভ দেখেছি। অনেক অনেক ভালো লেগেছে।


তৌহিদ ভাই, ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে আপনার কথা জানতে চাই। আপনি ফুটবল পছন্দ করেন। যখন ছোট ছিলেন, তখন বিশ্বকাপের খেলা দেখার আনন্দ নিশ্চয়ই আরও বেশি ছিল? তাইনা? ফুটবল বা বিশ্বকাপের কিছু মজার স্মৃতি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারবেন কি?

তৌহিদ: …

আকাশ: ভাই, আমি জানি চলতি বছর আমাদের বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল অনেক ভালো খেলেছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। বাংলাদেশের পুরুষ ফুটবল দলের এখন অবস্থা কেমন? 

তৌহিদ:...

সংগীত

আকাশ: বন্ধুরা, এবারের বিশ্বকাপে, ‘সবুজ বিশ্বকাপের’ জন্য চীন অবদান রাখছে। এখন আমরা এ বিষয়ে আলাপ করব।


স্থানীয় সময় নভেম্বরের ২০, কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবল উদ্বোধন করা হয়। এবারের বিশ্বকাপের সংশ্লিষ্ট কিছু প্রকল্প নির্মাণকাজে চীনা কোম্পানিগুলো অংশগ্রহণ করেছে। 


লুসেইল (Lusail) স্টেডিয়াম হচ্ছে কাতার বিশ্বকাপের মূল স্টেডিয়াম। এতে ফাইনাল ম্যাচসহ মোট ১০টি খেলা হবে। এতে মোট ৮০ হাজার দর্শক বসতে পারবেন। যা কাতারের বৃহত্তম স্টেডিয়াম। এ স্টেডিয়ামটি (China Railway Construction Corporation) চায়না রেইলওয়ে কন্সট্রাকশন কর্পোরেশন তৈরি করেছে। 


লুসেইল / Lusail স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রক্রিয়ায় অনেকগুলো রেকর্ড তৈরি হয়। এ স্টেডিয়াম হচ্ছে চীনের বাইরে চীনা কোম্পানির তৈরি সবচেয়ে বড় ও প্রযুক্তি খাতে সবচেয়ে উন্নত পেশাদার ফুটবল স্টেডিয়াম। চায়না রেইলওয়ে কন্সট্রাকশন কর্পোরেশন (China Railway Construction Corporation) কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার লি ছং ইয়ান বলেন, ‘লুসেইল স্টেডিয়ামটি বর্তমানে ফিফার মানদণ্ড অনুসারে নির্মাণ করা বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত, সবচেয়ে বড় ও ব্যবস্থাগত খাতে সবচেয়ে জটিলের পেশাদার ফুটবল স্টেডিয়াম। এ স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রক্রিয়াসহ চীনা কোম্পানি অংশগ্রহণের কারণে, চীনা প্রযুক্তি ও চীনা পণ্য এ প্রকল্পে ব্যবহার করা হয়। এ স্টেডিয়াম নির্মাণকাজে চীনা শিল্পপ্রিতষ্ঠানের নির্মাণ প্রযুক্তি, সরঞ্জাম ও সক্ষমতাও প্রতিফলিত হয়। 


তৌহিদ ভাই, ‘চীনা নির্মাণের’ অবদানের খাতে আপনি কি দেখছেন?

তৌহিদ:…


বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এ পর্যন্ত, সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ!


(আকাশ/তৌহিদ)