সম্প্রতি চীনের উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগের শততম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে মোজাম্বিক, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া ও মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা সংস্থা অভিনন্দন জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও কৃষি ক্ষেত্রে বৈদেশিক সাহায্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনা ‘লাল পদ্ম’ টাইপের হাইব্রিড ধানের ইতিবাচক ভূমিকার কথা উল্লেখ করে এসব চিঠিতে ধন্যবাদ জানানো হয়।
চীনের মাটি থেকে বিদেশের টেবিল পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে চীনা গবেষকরা কয়েক দশকের গবেষণার মাধ্যমে লাল পদ্ম টাইপের হাইব্রিড ধান “আন্তর্জাতিক ধানে” পরিণত করেছেন। ফলে বিশ্বের আরো বেশি মানুষ চীনের উন্নতমানের চালের সন্ধান পেয়েছেন।
গত শতাব্দীর ৭০-এর দশকে উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের জু ইংগুও তার বৈজ্ঞানিক গবেষণা দল নিয়ে বারবার পরীক্ষা ও বাছাইয়ের মাধ্যমে চীনের হাইব্রিড ধান গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন।
গত ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি এবং তাঁর দল লাল পদ্ম টাইপের হাইব্রিড ধান চীন এবং “এক অঞ্চল এক পথ” অঞ্চলের দেশসমূহে ব্যাপক হারে বিস্তার ও ব্যবহারের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছেন।
“একটি বীজ একটি বিশ্বকে পরিবর্তন করতে পারে”। গবেষণা ও উন্নয়ন গভীরতর হবার সঙ্গে সঙ্গে হাইব্রিড ধানটি অব্যাহতভাবে উন্নত ও পূর্ণাঙ্গ হয়ে দেশের বাইরে গিয়ে বিদেশে বিক্রি হয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকায় “লাল পদ্ম ধান” চাষের জমির আয়তন ব্যাপক হারে বেড়েছে এবং খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
২০২০ সাল পর্যন্ত চীন মোট ৩ লাখ টনের বেশি লাল পদ্ম টাইপের হাইব্রিড ধান রপ্তানি করেছে, যা বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য “চীনা অবদান” রেখেছে।
লাল পদ্ম টাইপের হাইব্রিড ধান মালয়েশিয়ায় পরীক্ষা করার পর উত্পাদন বাড়ানোর ফলাফল স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। “চীন-পাক লাল পদ্ম টাইপের হাইব্রিড ধান যৌথ গবেষণা কেন্দ্র” প্রতিষ্ঠিত হবার পর দেশটিতে মোট ৬.৭ হেক্টরের পরীক্ষামূলক দৃষ্টান্তমূলক এলাকা নির্মিত হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উহান বিশ্ববিদ্যালয় বহু ব্যবস্থা নিয়ে “এক অঞ্চল এক পথ” দেশগুলির বৈজ্ঞানিক সংস্থাসমূহের সঙ্গে হাইব্রিড ধান প্রযুক্তি ভাগাভাগি করেছে।
২০১৭ সালে জু ইংগুও মারা যান। তবে, প্রায় ৪০ বছর ধরে তাঁর সঙ্গে হাইব্রিড ধান নিয়ে গবেষণা করেছেন উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র প্রকৌশলী জু রেনশান। তিনি বলেন, “এক অঞ্চল এক পথ” বরাবর দেশগুলোয় লাল পদ্ম হাইব্রিড ধানের জনপ্রিয়তা লাভ স্থানীয় ধানের প্রজাতির সমৃদ্ধি, স্থানীয় অর্থনীতির উন্নয়ন এবং স্থানীয় কৃষকদের আয় বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ও বাস্তব অবদান রেখেছে।
(প্রেমা/এনাম)