ডিসেম্বর ১: ফিলিপ মিউনিয়ার সুইজারল্যান্ডের একজন অর্থনীতিবিদ। তিনি সুইজারল্যান্ডের জেনিভায় বার্ন অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সংস্থার সাবেক পরিচালক ছিলেন। অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে চীনের সাথে তার গভীর যোগাযোগ ও আদান-প্রদান রয়েছে। কয়েক দিন আগে, ফিলিপ মিউনিয়ার সিএমজি’র সাংবাদিকের সাথে একান্ত সাক্ষাত্কারে বলেন, চীনা বাজার দিন দিন আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে এবং চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও উন্মুক্তকরণ বিশ্বের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১৯৯২ সালে ফিলিপ মিউনিয়ার প্রথম চীনে আসেন। তিনি একটি চীন-সুইস যৌথ ব্যবসায়িক উদ্যোগের সাথে জড়িত ছিলেন এবং প্রায়ই চীন ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে আসা-যাওয়া করতেন। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফিলিপ মিউনিয়ার সুইজারল্যান্ডের জেনিভায় বার্ন অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সংস্থার জন্য কাজ করছিলেন। এ সংস্থার লক্ষ্য সুইজারল্যান্ডের পশ্চিম অংশে বিনিয়োগ ও বসতি স্থাপনে সহায়তা দেওয়া। এই সময়ের মধ্যে তিনি চীনের সাথে লেনদেন করেছেন। তিনি বলেন, ‘চীন আমাদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার ছিল এবং এখনও আছে। চীনা অংশীদার ও বিনিয়োগকারীদের সাথে আমার যোগাযোগ রয়েছে। আমি মনে করি, চীনা বন্ধুদের ওপর আস্থা রাখা যায়।’
ফিলিপ মেউনিয়ারের মতে, প্রতিটি দেশের নিজস্ব সামাজিক ব্যবস্থা ও জাতীয় অবস্থার জন্য উপযুক্ত উন্নয়নের পথ রয়েছে। একটি দেশের সমাজব্যবস্থা অন্য দেশের জন্য উপযুক্ত না-ও হতে পারে। তিনি চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সাফল্যের কোড খুঁজে পেতে এবং চীনা সমাজ কীভাবে কার্যকরভাবে কাজ করে তা বোঝার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে, আমি চীনকে আরও ভালভাবে বোঝার চেষ্টা করতে চাই। আমি বোঝার চেষ্টা করি কিভাবে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি কাজ করে। আমি মনে করি, আপনি যত বেশি জানবেন, তত বেশি আপনি চীনা সিস্টেমকে সম্মান করতে শিখবেন।’
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনে যে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে তা ফিলিপ মিউনিয়ার নিজের চোখে দেখেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে, অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং পরিবহনের ক্ষেত্রে চীনের উন্নয়ন অবিশ্বাস্য। তিনি বলেন, ‘আমার মনে আছে, বেইজিং-এ একটি মহাসড়ক ছিল যা খুব দ্রুত নির্মিত হয়। মহাসড়ক নির্মাণকাজের অগ্রগতি ছিল অবিশ্বাস্য। আমি তখন প্রতি চার মাস অন্তর চীনে যেতাম। প্রতিবার দেখতাম বড় পরিবর্তন হয়েছে। চীনের উন্নয়ন অবিশ্বাস্য।’
ফিলিপ মেউনিয়ারের মতে, চীন ঐতিহাসিকভাবে পরম দারিদ্র্য সমস্যা সমাধান করেছে, যা দেশ ও দেশের জনগণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল ৮০ কোটি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনা হয়েছে। আমি মনে করি, এটি দেশ ও দেশের জনগণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি বিগত ১০ ও ২০ বছরে চীনা অর্থনীতির অর্জিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য।’
ফিলিপ মিউনিয়ার বলেন, চীনের অর্থনীতি সর্বদা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মন্থরতার মুখে দুর্দান্ত স্থিতিস্থাপকতা ও প্রাণশক্তি দেখিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আসলে, চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ছিল যে-কারো কল্পনার চেয়ে দ্রুত। এখানে অনেক কোম্পানি খুব দ্রুত বিকাশ লাভ করেছে, দ্রুত আন্তর্জাতিক হয়ে উঠেছে, এবং আন্তর্জাতিকভাবে অনেক সাফল্য অর্জন করেছে।’
ফিলিপ মিউনিয়ার লক্ষ্য করেছেন যে, বিভিন্ন চীনা পণ্য সারা বিশ্বে ছড়িয়ে গেছে এবং চীনের বাজার আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে খুবই আকর্ষণীয়। বছরের পর বছর ধরে, চীন বৈদেশিক উন্মুক্তকরণে অবিচল থেকেছে। এর মধ্যে রয়েছে চীনের আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা। তিনি বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিশেষ করে বড় কোম্পানি ও আন্তর্জাতিক মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য চীনা বাজার খুবই আকর্ষণীয়। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)