জলবায়ু পরিবর্তনের বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া মোকাবিলায় চীন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে
2022-12-01 11:39:52

ডিসেম্বর ১: চলতি বছরের শুরু থেকে, বিশ্বের অনেক জায়গায় উচ্চ-তাপমাত্রা বিরাজ করেছে, হিমবাহ গলেছে, ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে, এবং কোথাও কোথাও তীব্র খরা দেখা গেছে। এসব ইঙ্গিত করে যে, বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন আরও গুরুতর হয়ে উঠেছে, এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়েছে। গতকাল (বুধবার) চীনের আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বিনিময়কেন্দ্রে ‘অর্থনৈতিক মাসিক সংলাপ’ শীর্ষক তত্পরতা আয়োজিত হয়। অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞরা ‘জ্বালানি সাশ্রয় ও কার্বন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফরে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা’ বিষয়ে আলোচনা করেন।

  চীনের আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বিনিময়কেন্দ্রের উপপ্রধান এবং একাডেমিক কমিটির মহাপরিচালক ওয়াং ইমিং বলেন, বিগত ১০ বছরে চীন বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ক্রমবর্ধমান হারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তিনি বলেন,

 ‘২০২১ সালে এসে, চীনে জিডিপির প্রতি ইউনিটে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন ২০১২ সালের তুলনায় প্রায় ৩৪.৪ শতাংশ কমেছে; কয়লার ব্যবহারের অনুপাত ২০১৪ সালের ৬৫.৮ শতাংশ থেকে ২০২১ সালে ৫৬ শতাংশে নেমে এসেছে। চীনের জলবিদ্যু, বায়ুশক্তি, এবং সৌরশক্তি উত্পাদনের ক্ষমতা ৩০ কোটি কিলোওয়াট-ঘন্টা ছাড়িয়েছে। এক্ষেত্রে চীনের অবস্থান বিশ্বে শীর্ষে। বিশ্বের ৮০ শতাংশেরও বেশি বায়ুশক্তি ও ফটোভোলটাইক সরঞ্জাম চীন থেকে আসে। নবায়নযোগ্য শক্তিতে চীনের বিনিয়োগ ৩৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। এক্ষেত্রেও চীনের অবস্থান বিশ্বের এক নম্বরে।’

ওয়াং ইমিং বলেন, চীন সক্রিয়ভাবে ‘প্যারিস চুক্তি’ বাস্তবায়ন করেছে, নিজের স্বতন্ত্র অবদানের ক্ষেত্র বাড়িয়েছে, কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে,  মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন নিয়ন্ত্রণ কৌশল প্রণয়ন করেছে। সেই সঙ্গে চীনে ‘জাতীয় জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন কৌশল ২০৩৫’ নির্ধারিত হয়েছে। চীন 'দ্বৈত-কার্বন' কৌশলকে দৃঢ়ভাবে বাস্তবায়ন করছে এবং এক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্যও উল্লেখযোগ্য।

কীভাবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সমন্বয় করা যায় এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করা যায়? চীনের জাতীয় জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল গবেষণা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কেন্দ্রের পরিচালক সু হুয়াছিং মনে করেন, এই ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে শক্তির কাঠামো এবং এ সম্পর্কিত প্রযুক্তির রূপান্তর ও অগ্রগতি অর্জন করা। তিনি মনে করেন, জ্বালানি সাশ্রয় ও কার্বন নির্গমন হ্রাস, বিশেষ করে ‘ডাবল কার্বন’ লক্ষ্য, জ্বালানি কাঠামো সুবিন্যস্ত করা ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য এক বিশাল চালিকাশক্তি যুগিয়েছে। তিনি আরও বলেন,

‘নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ির ক্ষেত্রে চীন ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে। চলতি বছর নতুন জ্বালানিচালিত যানবাহনের বিকাশের গতি অভূতপূর্ব। চীনের নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ির সংখ্যা ইতোমধ্যেই বিশ্বের দুই ভাগের এক ভাগে দাঁড়িয়েছে।’ (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)