মাদাগাস্কারের রাজধানী আন্তানানারিভোর উপকন্ঠে একটি ‘ডিম সড়ক’ আছে। এটি আগে একটি ময়লাপূর্ণ রাস্তা ছিল। বর্তমানে সড়কটি মাদাগাস্কারের প্রধান ডিম উত্পাদন-এলাকার গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন-সড়কে পরিণত হয়েছে। সড়কটি স্থানীয় পাহাড়ী অঞ্চলে কৃষকদের ‘ধনী হওয়ার সড়ক’ বলে পরিচিত। চীনের সহায়তায় সড়কটি নির্মিত হয়েছে। আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদেরকে মাদাগাস্কারে চীনের সড়ক-নির্মাতার গল্প তুলে ধরবো।
‘ডিম সড়ক’ মাদাগাস্কারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ডিম উত্পাদন-এলাকা মায়িকি থানা ও মাহাজাজা থানাকে সংযুক্ত করেছে। সড়কটি মোট ১৯ কিলোমিটার লম্বা। চীনের সহায়তায় সড়কটি নির্মিত হয়েছে। ‘ডিম সড়ক’ পরিকল্পনার সেতু প্রকৌশলী চৌ ইয়ানতুং সড়কটির নির্মাণে অংশ নিয়েছেন। তিনি বলেন,
‘সড়কটি নির্মাণের আগে দুই থানার মধ্যে যাতায়াতে এক ঘন্টারও বেশি সময় লাগত। কিন্তু এখন ২০ মিনিট সময় কম লাগে। এখন পরিবাহিত ডিম ভাঙ্গার হার ৩০ শতাংশ থেকে প্রায় শূন্যে নেমে এসেছে।’
‘ডিম সড়ক’ নির্মাণের পর স্থানীয় পরিবহনব্যবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনমানও অনেক উন্নত হয়েছে। চীনা নির্মাতারা কোভিড-১৯ মহামারী ও জটিল ভূখণ্ডগত কঠিন সমস্যার সমাধান করে, একটি উচ্চ মানের সড়ক নির্মাণ করেছেন। ‘ডিম সড়ক’ পরিকল্পনা পরিচালনা গ্রুপের প্রধান লেই তুং শেং বলেন,
‘কোভিড-১৯ মহামারী আমাদের নির্মাণ-পরিকল্পনা বাস্তবায়নকে কঠিন করে দিয়েছিল। সড়কের পাশে গ্রাম ও থানা অনেক। সেজন্য আমাদেরকে নির্মাণকাজ চালানোর সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তা সুরক্ষা করতে হয়েছে। ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারী ছড়িয়ে পড়ার পর, আমরা মহামারী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েছি। সড়ক নির্মাণের পর স্থানীয় ডিম শিল্পে বিনিয়োগ বেড়েছে; সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো আরও উন্নত হয়েছে।’
‘ডিম সড়ক’ হলো চীন-আফ্রিকা বাস্তব সহযোগিতার প্রতীক। প্রকল্পের মানকর্মী লেই ছাই ইউন পৃথক পৃথকভাবে টোগো, জিবুতি ও মাদাগাস্কারসহ সাতটি আফ্রিকান দেশে কাজ করেছেন। তিনি চীনের সহায়তায় অনেক আফ্রিকান অবকাঠামো নির্মাণে অংশ নিয়েছেন। তিনি বলেন,
‘চীন আফ্রিকায় বিনিয়োগ ও অবকাঠামো নির্মাণে বিরাট অবদান রেখেছে। আফ্রিকার অধিকাংশ দেশের ল্যান্ডমার্ক বিল্ডিংয়ের নির্মাণে অংশ নিয়েছে চীন। সড়ক মাদাগাস্কারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় সরকার চীনের সহায়তা-প্রকল্প সমর্থন করে।’
মহামারীর কারণে ‘ডিম সড়ক’ প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী চীনা কর্মীরা দুই বছরেরও বেশি সময় স্বদেশে ফিরতে পারেননি। লেই ছাই ইউন ও চৌ ইয়ান তুং আশা করেন, খুব তাড়াতাড়ি পরিবারের সঙ্গে তাদের পুনর্মিলন ঘটবে। (ছাই/আলিম)