কর্ণফুলীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেলের দক্ষিণ টিউবের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন
2022-11-26 21:39:33

ঢাকা, নভেম্বর ২৬: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম জেলায় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের দক্ষিণ টিউবের পূর্তকাজ সমাপ্ত ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

 

চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন টানেল

চীনের অর্থায়নে নির্মিত দুই টিউববিশিষ্ট এই টানেলের একটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ায় আয়োজন করা উদযাপনী অনুষ্ঠানের। শনিবার রাজধানী ঢাকা থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে এ উদযাপনী অনুষ্ঠানে যোগদেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এই টানেল নির্মাণের ফলে চট্টগ্রাম হতে যাচ্ছে সাংহাইয়ের মতো ওয়ান সিটি টু টাউন।

 

চট্টগ্রামে উদযাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং

দক্ষিণ এশিয়ায় পানির নিচ দিয়ে নির্মাণ করা এটাই প্রথম টানেল। প্রায় ৩৮০ একর (৩৭৯ দশমিক ৪২) জায়গাজুড়ে নির্মাণাধীন এই টানেলের প্রবেশ পথে আছে বৃষ্টি থেকে সুরক্ষা পাবার শেল্টার। পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারা, দুই পাড়ে চলাচলের জন্য আছে ২টি করে মোট ৪টি লেন। আছে চমৎকার ডিজাইনের টোলপ্লাজা ও সার্ভিস এরিয়া বাংলো।

টানেলের পূর্তকাজ শেষ করার এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, চীন-বাংলাদেশ নির্ভরযোগ্য কৌশলগত অংশীদার। আর এই টানেল বেল্ট এন্ড রোড উদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সামনের দিনগুলোতে দুই দেশের মধ্যকার সহযোগিতা নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন লি জিমিং।

এই টানেলের নির্মাণ করতে অর্থায়নের জন্য চীনকে রাজি করাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রচলিত কূটনীতির বাইরেও কাজ করেছেন বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সে দিনের স্মৃতিচারণ করে প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং ও সে সময়ের চীনা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে টানেলের অপর প্রান্তে পরিকল্পিতভাবে ভারী শিল্প বিনিয়োগ হচ্ছে, এই টানেলের মাধ্যমে টুইন সিটি গড়ে উঠবে। পদ্মাসেতু নির্মাণকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে বাংলাদেশ যে পারে সরকার তা প্রমাণ করে দিয়েছে মন্তব্য করে নির্মাণে সহায়তা করায় চীনকে আবারো ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।  

২০১৩ সালে সম্ভাব্যতা যাচাই করার পর টানেল নির্মাণের জন্য চায়না কমিউনিকেশনস কন্সট্রাকশন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয় ২০১৫ সালের জুনে। পুরো নির্মাণ কাজে অর্থায়ন করে চায়না এক্সিম ব্যাংক।

কর্ণফুলী নদীর একপাড়ে শিল্প এলাকা আনোয়ারা আর অন্যপাশে পতেঙ্গা। এই টানেলের মাধ্যমে এই দুই পাড়কে একত্রিত করার ফলে চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থারই কেবল উন্নয়নই হবে না বরং এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পদক্ষেপে আরো একধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। পাশাপাশি চট্টগ্রামের আনোয়ারায় নতুন পরিকল্পিত শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠছে তাকে যুক্ত করবে মূল যোগাযোগ নেটওয়ার্কের সঙ্গে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খুলে দেওয়ার পর চট্টগ্রামসহ গোটা দেশের অর্থনীতিতেও যোগ হবে এক নতুন মাত্রা।

সাজিদ/হাশিম।