নভেম্বর ২৪: বেলজিয়ামের মা জিয়াওলি জিওলজি ইনস্টিটিউট, চায়নিজ অ্যাকাডেমি অফ জিওলজিক্যাল সায়েন্সেসের একজন বিদেশী বিশেষজ্ঞ এবং দীর্ঘদিন ধরে ছিংহাই-তিব্বত মালভূমিতে কাজ করেছেন। তিনি ১২ বছর ধরে চীনে কাজ করেছেন এবং বসবাস করেছেন এবং চীনের দুর্দান্ত পরিবর্তন দেখেছেন। তিনি আরও আশা করেন যে, আরও বন্ধুরা চীন সফর করবেন এবং নিজেদের জন্য চীনের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা লাভ করবেন।
ছিংহাই-তিব্বত মালভূমি চীনের বৃহত্তম মালভূমি এবং বিশ্বের সর্বোচ্চ মালভূমি। একে "বিশ্বের ছাদ" এবং "তৃতীয় মেরু" বলা হয়। এর উচ্চ বৈজ্ঞানিক মূল্যের কারণে, এটি অনেক দেশি এবং বিদেশী বিজ্ঞানীদের আকর্ষণ করে থাকে। মা জিয়াওলি একজন টেকটোনিক্স এবং স্ট্রাকচারাল জিওমরফোলজির একজন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ।
তিনি বলেন, "আমি মারি-লুস শেভালিয়ার। আমার চায়নিজ নাম মা জিয়াওলি। আমি বেলজিয়াম থেকে এসেছি। আমি বর্তমানে একজন আমন্ত্রিত বিদেশী বিশেষজ্ঞ।" যখন তিনি ফ্রান্সের প্যারিসের ইনস্টিটিউট অফ জিওফিজিক্সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য অধ্যয়ন করছিলেন, তখন মা জিয়াওলি ছিংহাই-তিব্বত মালভূমির সক্রিয় কাঠামো ও কাঠামোগত ভূরূপবিদ্যার গবেষণার দিক বেছে নিয়েছিলেন। তাই, ২০০২ সাল থেকে, মা জিয়াওলি তিব্বতের সবচেয়ে কঠিন এবং বিপজ্জনক জায়গায় মাঠ পর্যায়ের গবেষণা ও নমুনা সংগ্রহের জন্য প্রায় প্রতি বছর চীনে এসেছেন।
২০১০ সালে, মা জিয়াওলিকে ইনস্টিটিউট অফ জিওলজি, চায়নিজ অ্যাকাডেমি অফ জিওলজিক্যাল সায়েন্সেস, একজন বিদেশী বিশেষজ্ঞ হিসাবে বেইজিং-এ কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। তারপর এক ঝটকায় ১২ বছর কেটে গেছে। মা জিয়াওলি এখন চীনের পরিবেশে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন।
তিনি বলেন "আমি গলিতে হাঁটতে পছন্দ করি, সামার প্যালেস, ফরবিডেন সিটি ইত্যাদি দেখতে পছন্দ করি, যেগুলো খুব সুন্দর এবং আকর্ষণীয়। চীনারা খুব হাসিখুশি। তারা বাইরে খেলতে, নাচতে এবং গান করতে পছন্দ করে। তারা প্রাণবন্ত হতে পছন্দ করে।"
বছরের পর বছর ধরে, মা জিয়াওলি যা সবচেয়ে বেশি অনুভব করেছেন তা হল চীনের উন্নয়ন এবং পরিবর্তন। উদাহরণস্বরূপ, "একটি মোবাইল ফোন" চীনে সবকিছু করতে পারে। তিনি বলেন: "এখন যখন আমি বাড়ি থেকে বের হই, আমাকে শুধুমাত্র আমার মোবাইল ফোন সঙ্গে রাখতে হয়। আপনি জিনিস কিনতে, সাইকেল চালাতে, ট্যাক্সিতে বা বাসে যেতে আপনার মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারেন। আপনি খাবারের অর্ডারও দিতে পারেন, যা খুবই সুবিধাজনক।"
চীনের চমত্কার পরিবহন-ব্যবস্থা নিয়েও তিনি খুব সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, "আগে যেখানে রাস্তা ছিল না, সেখানে এখন বড় বড় রাস্তা আছে। মাঠে যাওয়ার আগে আমরা স্যাটেলাইট ছবি দেখে ঠিক করি কোথায় যেতে হবে। একদিন আমি জানতে পারলাম যে, সেখানে একটি নতুন রাস্তা হয়েছে। এটি কাংডিংয়ের কাছে ছিল, এবং তারপরে আমি স্যাটেলাইটের দিকে তাকালাম যেখানে রাস্তাটি নিয়ে গেছে, এবং আমি একটি নতুন ফাটল দেখতে পেলাম, যা আমি আগে দেখিনি, তাই আমরা এই রাস্তা ধরে গাড়ি চালালাম এবং অবশেষে গন্তব্যে পৌঁছে গেলাম। বেইজিংয়ের পরে, আমরা নিবন্ধ লিখেছি এবং বেশ কয়েকটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছি, তাই আমি মনে করি চীনের উন্নয়নও বিজ্ঞানীদের জন্য খুব সহায়ক।"
যেহেতু তিনি প্রায়শই ছিংহাই-তিব্বত মালভূমি এবং হেংডুয়ান পর্বতমালার দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত পশ্চিম সিচুয়ান মালভূমিতে গবেষণার জন্য যেতেন, তাই মা জিয়াওলিও সেখানকার পরিবর্তনগুলো গভীরভাবে অনুভব করেন। তিনি বলেন "আমরা যখন বন্য এলাকায় ছিলাম, ছিংহাই-তিব্বত মালভূমিতে, আমরা তাঁবুতে থাকতাম। গরম জল ছিল না, বিদ্যুতের বালাই ছিল না, খুব ঠান্ডা ছিল এবং গরম ছিল না। কিন্তু এখন অনেক জায়গায় হোমস্টে আছে, যেখানে আপনি স্নান করতে পারেন এবং গরম জল খেতে পারেন, যা খুব আরামদায়ক। আমরা দুপুরে গরম খাবার খেতে পারতাম না, কিন্তু এখন আমাদের জন্য গরম ভাতের ব্যবস্থা আছে। আমরা ইনস্ট্যান্ট নুডুলস সঙ্গে আনতাম, সকালে গরম জলের একটি বড় পাত্র রাখতাম। এখন আমরা রেস্টুরেন্টে খেতে পারি, তাই এই উন্নয়ন আমাদের ভূতাত্ত্বিক গবেষণার জন্য খুবই সুবিধাজনক।"
একজন গবেষক হিসেবে, মা জিয়াওলি বিশেষ করে চীনের একাডেমিক গবেষণার পরিবেশ পছন্দ করেন। তিনি বুঝতে পারেন যে, চীন বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। তিনি বলেন, অতীতে বিদেশি গবেষকরা ছিংহাই-তিব্বত মালভূমি নিয়ে গবেষণার অগ্রভাগে ছিলেন, কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)