কাতার বিশ্বকাপে চীনা উপাদান
2022-11-22 14:27:23

নভেম্বর ২২:২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ শুরু হয়েছে ২০ নভেম্বর। সারা বিশ্বের ফুটবল-ভক্তদের জন্য এটি একটি চার বছরের কার্নিভাল। ফুটবল ছাড়াও, কাতারে আমাদের ‘মেড ইন চায়না’ পণ্যও রয়েছে। স্টেডিয়াম থেকে শুরু করে কন্টেইনার হাউস এবং বৈদ্যুতিক বাস পর্যন্ত চীনের তৈরি পণ্য ২০২২ সালের ফিফা বিশ্বকাপে জ্বলজ্বল করছে।

লুসাইল স্টেডিয়াম হলো কাতার বিশ্বকাপের মূল স্টেডিয়াম। এখানে ফাইনাল খেলাসহ বিশ্বকাপের মোট ১০টি ম্যাচ আয়োজিত হবে। স্টেডিয়ামটি ৮০ হাজার দর্শক বহন করতে সক্ষম। এটি কাতারের বৃহত্তম স্টেডিয়াম। চায়না রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন এটি নির্মাণ করেছে। এই প্রথম কোনো চীনা কোম্পানি বিশ্বকাপের ভেন্যু তৈরি করেছে। কাতারের নতুন ১০ রিয়াল মূল্যের নোটে লুসাইল স্টেডিয়ামের ছবি আছে। এ ধরনের একটি স্টেডিয়াম সফলভাবে নির্মাণ করে চীনা কোম্পানি প্রযুক্তিগত সক্ষমতা দেখিয়েছে।

 

চীনা কোম্পানিগুলো ‘ফ্যান ভিলেজ’-সহ কাতারের অন্যান্য বিশ্বকাপ স্টেডিয়াম নির্মাণেও অংশগ্রহণ করেছে। কাতারের ভূমির আয়তন মাত্র ১১ হাজার বর্গকিলোমিটারের কিছু বেশি। বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার ফুটবলভক্তের জন্য থাকার ব্যবস্থা করতে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটি দেশের রাজধানী দোহার দক্ষিণে ‘ফ্যান ভিলেজ’ নামক ছয় হাজার কন্টেইনার-ঘর তৈরি করেছে। প্রতিটি ঘরে দুই জন লোক থাকতে পারে। এই কন্টেইনার হাউসগুলোর মান খুব ভালো এবং প্রতিটিতে টয়লেট, এয়ার কন্ডিশনার ও ফ্যান রয়েছে।

 

তা ছাড়া, বিশ্বকাপ চলাকালে ভক্তদের সেবা দিচ্ছে চীনের তৈরি বৈদ্যুতিক বাস। কাতার চীন থেকে প্রায় ১৫০০টি বাস আমদানি করেছে, যার মধ্যে ৮৮৮টি বৈদ্যুতিক বাস।

 

চীনে তৈরি আরও পণ্য স্থানীয় ফুটবলভক্ত এবং বিদেশী পর্যটকদের মধ্যে ভাল বিক্রি হচ্ছে। একটি ২০ বর্গ-মিটারের দোকানের, যেখানে লাইসেন্সকৃত পণ্য সকার বল এবং শার্ট বিক্রি হয়, বেশিরভাগ পণ্য চীনে তৈরি। পণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে কম। একটি সকার বলের দাম প্রায় ২২ মার্কিন ডলার এবং একটি শার্ট প্রায় ৫০ ডলার। বিক্রয় বেশি হওয়ায়  দোকানটি সম্প্রতি অনুমোদিত চীনা সরবরাহকারীদের অতিরিক্ত পণ্যের অর্ডার দিয়েছে।

 

এখানে চীনের একটি শহরের নাম উল্লেখ করতে হয়।  ই উ শহর ‘ছোট পণ্যের রাজধানী’ হিসাবেও পরিচিত। ই উ শহরের স্পোর্টিং গুডস অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুসারে ই উতে তৈরি কাতার বিশ্বকাপসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পণ্য পুরো বাজারের প্রায় ৭০ শতাংশ দখল করে আছে।

 

তা ছাড়া, চীনের দুটি নাদুসনুদুস পান্ডা এবারের বিশ্বকাপে ‘চীনা উপাদান’ যুগিয়েছে। স্থানীয় সময় ১৭ নভেম্বর চীন থেকে নেওয়া দুটি পান্ডা দোহার প্রথম পান্ডা হাউসে দর্শকদের সামনে হাজির হয়। মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম জায়ান্ট পান্ডা হিসেবে দম্পতিকে দুটি আরব নাম দেওয়া হয়েছে: সুহেল ও সোরায়া। আরবের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিতে তাদের অর্থ আকাশের দুটি তারা।

 

বিশ্বকাপে চীনের তিন জন রেফারি দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁরা হলেন মা নিং, ছাও ই এবং শি সিয়াং। চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোও এবারের বিশ্বকাপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। চীনের মোট চারটি স্পন্সর এবারের বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছে। তারা মোট ১৩৯.৫ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। মোদ্দাকথা, কাতার বিশ্বাকাপ ফুটবলের পরতে পরতে জড়িয়ে আছে চীন, চীনের তৈরি পণ্য ও সেবা। (লিলি/আলিম)