আকাশ ছুঁতে চাই পর্ব ১০০
2022-11-17 19:45:20

আকাশ ছুঁতে চাই পর্ব ১০০

১. আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানের ফিরে দেখা

২. চীনের নারী বিজ্ঞানীদের ‘শি ফোরাম’

৩. সাফজয়ী নারী ফুটবল দলকে প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা

৪. চীনের হয়ে ইউএফসি টাইটেল জয় করলেন চাং ওয়েইলি

 

চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ঢাকা স্টেশন থেকে প্রচারিত আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি শান্তা মারিয়া।

আকাশ ছুঁতে চাই পেরিয়ে এলো অনেকটা পথ। এই অনুষ্ঠানের শততম পর্ব প্রচারিত হচ্ছে আজ। এই একবছরে আমরা নারীদের অনেক সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার কথা তুলে ধরেছি। আমাদের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সমাজের বিভিন্ন পেশা ও অবস্থানের নারীরা এসেছেন। বলেছেন তাদের জীবন সংগ্রামের কথা।

আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানের ফিরে দেখা

শততম পর্বে চলুন শোনা যাক তাদের কয়েকজনের কথা। এদের মধ্যে আছেন হোসনে আরা তালুকদার, ঝর্ণা রহমান,  জোবেরা রহমান লিনু ও বুলবুল মহলানবীশ । তাদের সাক্ষাৎকারের অংশ বিশেষ শুনবো

আমরা।

আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে আমাদের স্টুডিওতে আসেন বাংলাদেশ বেতারের প্রথম নারী মহাপরিচালক হোসনে আরা তালুকদার। তিনি বলেন তার অভিজ্ঞতার গল্প। কিভাবে প্রথম একজন নারী হয়ে বেতারের মতো একটি বড় প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক হলেন সেই অভিজ্ঞতা তিনি শোনান।

 

   

                                         

ক্যাপশন: চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলাবিভাগের পরিচালক ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দীর সঙ্গে হোসনে আরা তালুকদার

আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে আসেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাহিত্যিক এবং বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক ঝর্না রহমান। তিনি বলেন তার লেখায় নারীর জীবন কিভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। নারীর চোখে বিশ্ব দেখার অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেন তিনি।

ক্যাপশন: আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানের সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশ পর্বে সাহিত্যিক ঝর্না রহমান

ঝর্না রহমানের লেখায় তৃণমূল পর্যায়ের নারীর জীবন সংগ্রাম যেমন প্রতিফলিত হয়েছে তেমনি মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত নারীর জীবনের সংগ্রাম, হতাশা ও এগিয়ে চলার কথাও উঠে এসেছে সুললিত ভাষায়।

আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানের একটি পর্বে স্টুডিওতে আসেন বাংলাদেশের কৃতী ক্রীড়াবিদ জোবেরা রহমান লীনু। তিনি বাংলাদেশের ক্রীড়াজগতে নারীর এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য ও উপায়গুলো তুলে ধরেন।

 

ক্যাপশন: অনুষ্ঠানে কৃতী ক্রীড়াবিদ জোবেরা রহমান লীনু

জোবেরা রহমান লীনু বাংলাদেশের জাতীয় টেনিস চ্যাম্পিয়ন এবং তিনি গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডেও কৃতিত্বের সঙ্গে নিজের নাম লিখেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ক্রীড়াক্ষেত্রে নারীরা এখনও অনেক অবহেলার শিকার। তবে নারীকে এগিয়ে যেতে হবে সব বাধা পায়ে দলে। আর এজন্য চাই সরকারি উদ্যোগ এবং পারিবারিক সহযোগিতা।

আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে আসেন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও কণ্ঠশিল্পী এবং কবি বুলবুল মহলানবীশ। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এই বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও কণ্ঠসৈনিক তুলে ধরেন মুক্তিযুদ্ধের সময়কার অনেক অভিজ্ঞতার কথা।

 

বুলবুল মহলানবীশ বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের নারীর অবদান অনন্য। তিনি নারীর আত্মত্যাগ ও অবদানের কথা জোরালো কণ্ঠে তুলে ধরেন। শ্রোতাদের গানও শোনান। আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে এভারেস্টজয়ী নিশাত মজুমদার থেকে শুরু করে মানবাধিকারকর্মী জিনাত আর হক, বিশ্ব পর্যটক নাজমুন নাহার, সাংবাদিক ঊর্মি রহমান, উন্নয়ন সংস্থা প্রশিকার চেয়ারপারসন রোকেয়া ইসলাম, বিশিষ্ট নারী উদ্যোক্তা নাসরীন আওয়াল, চিকিৎসক বিলকিস বেগম চৌধুরী, ব্যারিস্টার নুসরাত জাহান স্বাতীসহ অনেকেই এসেছেন। করোনা মহামারির সময় অনেকে অংশ নিয়েছেন ভিডিও কলের মাধ্যমে।

আকাশ ছুঁতে চাই তার শততম পর্বের ভিতর দিয়ে তুলে ধরেছে নারীর আকাশ ছোঁয়ার সাফল্য, আগ্রহ এবং প্রতিকূলতা জয় করার চেষ্টাকে।

 

চীনের নারী বিজ্ঞানীদের ‘শি ফোরাম’

চীনা নারী বিজ্ঞানীদের স্টেরিওটাইপ ভাঙতে এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণায় আরো বেশি নিযুক্ত হতে উত্সাহিত করতে "শি ফোরাম" নামে একটি বিশেষ আয়োজন করা হয়েছে। গেল সপ্তাহে সাংহাইয়ে পঞ্চম ওয়ার্ল্ড লরিয়েট ফোরামের (WLF) অংশ হিসাবে এটি অনুষ্ঠিত হয়।  বিস্তারিত থাকছে রওজায়ে জাবিদা ঐশীর রিপোর্টে।

"বৈচিত্র্য এবং অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক কর্মশক্তির ভবিষ্যত পুনর্নির্মাণ " এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় নারীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে "শি ফোরাম" নামে একটি বিশেষ আয়োজন করে ওয়ার্ল্ড লরিয়েটস অ্যাসোসিয়েশন WLF। গেল সপ্তাহে চীনের সাংহাইয়ে এই বছরের নারী-কেন্দ্রিক এই ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সমাবেশ হিসেবে পরিচিত এটি।

এতে চাইনিজ একাডেমি অফ সায়েন্সেসের একজন শিক্ষাবিদ এবং প্রবীণ বিজ্ঞানী চু মেইফাং অংশ নিয়ে সমাজের মানুষকে দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর পরামর্শ দেন। তথাকথিত কুপ্রথা বা কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে প্রযুক্তি ও গবেষণা এবং বিজ্ঞানচর্চায় নারীদের আরো এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। যিনি প্রায় ৪ দশক  ধরে পদার্থ বিজ্ঞানের উপর গবেষণা চালিয়েছেন এবং এই ক্ষেত্রে চীনের অগ্রগতিতে বিশাল অবদান রেখেছেন।

 "আমি ১৯৮২  সাল থেকে ফাইবার অধ্যয়ন করছি এবং এটি নিয়ে গবেষণা করছি। ১৯৮০ এর দশকে, ফাইবারের পরিমাণ কম ছিল এবং রাসায়নিক তন্তুর বিভিন্নতা তুলনামূলকভাবে সীমিত ছিল, কিন্তু এখন, চীন বিশ্বের রাসায়নিক তন্তুর ৭০ শতাংশেরও বেশি উত্পাদন করে৷ আসলে, আমরা তিনটি দিক থেকে ফাইবার নিয়ে চীনের পরিকল্পনা প্রস্তাব করতে চাই। উচ্চ কার্যক্ষমতা সহ ফাইবার তৈরি করা, এটিকে বহুমাত্রিক কার্যকরী করা,  এর সংশ্লেষণ প্রক্রিয়াকরণ করা এবং সবুজ-পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করা। এসব ধারণা আমরা সামনে রেখেছি। এটি বিশ্বের কাছে একটি দায়িত্বশীল পরিকল্পনা।

চু তাঁর দলে শক্তিশালী নারী প্রতিনিধিত্ব প্রত্যাশা করেন। 

এ আয়োজনের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণাখাতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে উৎসাহিত করা হয়। দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে নারীরা আরো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

 

সাফজয়ী নারী ফুটবল দলকে প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা

বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল সাফ চ্যাম্পিয়ন ট্রফি জয় করে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন। এই নারী ফুটবল দলকে সম্প্রতি সংবর্ধনা দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদের কথা বলছেন আফরিন মিম

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট অর্জন করা বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে সম্প্রতি সংবর্ধনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সাফ জয়ী নারীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

সাফজয়ী দলের প্রত্যেক সদস্যকে এ সময় সম্মাননা চেক প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। ২৩ জন নারী ফুটবলারকে ৫ লাখ টাকার সম্মাননা পুরষ্কার দেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া দলের কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষক মিলিয়ে ১১ জনের প্রত্যেককে ২ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে।

বাংলাদেশের নারী ফুটবলের পেছনের দিনগুলোর স্মৃতিচারণা করেন নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। এছাড়া সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২২ এর ওপর একটি প্রামাণ্য চিত্রও প্রদর্শিত হয় অনুষ্ঠানে।

সাফজয়ী মেয়েরা এসময় প্রধানমন্ত্রীর হাতে সাফের চ্যাম্পিয়ন ট্রফি তুলে দেন। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নারীদের খেলাধুলায় এগিয়ে আসার জন্য অনুপ্রেরণা দেয়া হয়।

 

চীনের হয়ে ইউএফসি টাইটেল জয় করলেন চাং ওয়েইলি

চীনের নারীরা ক্রীড়াক্ষেত্রে অনেক অবদান রাখছেন। চীনের একজন জনপ্রিয় অ্যথলিট চাং ওয়েইলি। সম্প্রতি দ্বিতীয়বারের মতো ইউএফসি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। তার কথা বলছেন তানজিদ বসুনিয়া

চীনের হয়ে আবারো গৌরব বয়ে আনলেন জনপ্রিয় অ্যাথলিট চাং ওয়েইলি। সাবেক চ্যাম্পিয়ন কার্লা এস্পার্জাকে হারিয়ে আল্টিমেট ফাইটিং চ্যাম্পিয়নশিপ -ইউএফসি চ্যাম্পিয়ন হলেন চীনের মিক্সড মার্শাল আর্টস বা এমএমএ ফাইটার এই তরকা অ্যাথলিট। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ফাইনালে জয়লাভের মাধ্যমে পুনরায় ইউএফসির সম্রাজ্ঞী হিসেবে নিজের নাম লেখালেন চাং ওয়েইলি। এ নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো ইউএফসি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন এই চীনা তরুণী।

শনিবার  নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়্যার গার্ডেনে ইউএফসির ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ২০১৯ সালে চীনের কুয়াংতং প্রদেশের শেনচেনে অনুষ্ঠিত ইউএফসিতে চ্যাম্পিয়ন হন চাং ওয়েইলি। পরবর্তীতে ২০২১ সালে আমেরিকান ফাইটার রোস নামাজুনাসের কাছে টাইটেল হারান চীনা এই ফাইটার। এর একবছর পরেই নতুন করে ইউএফসি চ্যাম্পিয়ন হলেন তিনি। তার এই যাত্রায় উৎসাহের জন্য চীন ও চীনের বাইরে যে সব সমর্থক রয়েছেন তাদের প্রতি এ জয় উৎসর্গ করেন চাং ওয়েইলি।

তিনি বলেন, ‘ঘরের মাঠে আমি প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। এবার নিউইয়র্কে চ্যাম্পিয়ন হলাম, ঘরের মাঠে দর্শকরা আমাকে যেভাবে সমর্থন দিয়েছে আজ এখানেও ঠিক সেরকমই সমর্থন পেয়েছি।’

 ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনের কানায় কানায় পরিপূর্ণ গ্যালারিতে উচ্ছ্বসিত দর্শকদের উদ্দেশ্যে চীনা এই এমএমএ তারকা বলেন, ‘আমি আগে হয়তো শুধু চীনের ওয়েইলি হয়ে ছিলাম। এখন আমি বিশ্বের ওয়েইলি হয়ে উঠেছি।’

 

সুপ্রিয় শ্রোতা , আজ আর কথা নয়, আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি আমরা। আমাদের অনুষ্ঠান আপনারা সবসময় শুনতে পাবেন শর্ট ওয়েভ ৯ হাজার ৪শ ৯০ এবং শর্ট ওয়েভ ১১ হাজার ৬শ ১০ কিলোহার্টজে। আরও শুনতে পাবেন সিআরআই বাংলার ওয়েবসাইটে এবং অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজে। জেনে নিন আমাদের ইমেইল অ্যাডরেস, cmg.bangla@gmail.com আমাদের ফেসবুক পেজ facebook.com/CRIbangla এবং facebook.com/CMGbangla এবং আমাদের সাক্ষাৎকারগুলো ইউটিউবে দেখতে পাবেন। youtube.com/CMGbangla. শততম পর্বের শুভেচ্ছা জানিয়েআজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাই চিয়েন।

সার্বিক  সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী

লেখা, গ্রন্থনা,উপস্থাপনা : শান্তা মারিয়া

অডিও সম্পাদনা: রওজায়ে জাবিদা ঐশী ও শান্তা মারিয়া