চীনা প্রস্তাব থেকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক ব্যবস্থা জলাভূমিগুলো আবারও নতুন উন্নয়নের সুযোগ পেয়েছে। গত ৫ নভেম্বর চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ভিডিও লিংকের মাধ্যমে ‘জলাভূমি চুক্তি’ স্বাক্ষরকারীদের ১৪তম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় বলেছেন, “আমাদের উচিত চেতনা গভীর করে সহযোগিতা জোরদারের মাধ্যমে যৌথভাবে জলাভূমি সংরক্ষণের বৈশ্বিক অভিযান এগিয়ে নেওয়া”। প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং’র এ প্রস্তাবে মানব জাতির ও প্রকৃতির সম্প্রীতিময় সহাবস্থানে উচ্চ উন্নয়নের বার্তা দেওয়া হয়েছে।
সুদূর অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত মানব জাতি পানিকে ঘিরে বাস করে আসছে। প্রত্যেক সভ্যতা পানির পাশে জন্মেছে। পৃথিবীর কিডনি হিসেবে পরিচিত জলাভূমি বহু প্রাণীর বাসস্থান। জলাভূমি পানি পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং পরিষ্কার সুস্বাদু পানি সম্পদ প্রদান করে। জলাভূমি বন্যা এবং খরা প্রতিরোধ করে। পাশাপাশি, জলবায়ু সুবিন্যস্ত করাসহ আরও অনেক ভূমিকা পালন করে। মানব জাতির উত্পাদন ও জীবন, অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ অনেক কিছুর সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে জলাভূমির।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জলাভূমি সংরক্ষণের ওপর খুব গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বেশ কয়েকবার জলাভূমি পরিদর্শন করেছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির অষ্টাদশ কংগ্রেসের পর থেকে চীন জলাভূমি সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন করেছে। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমি, জাতীয় জলাভূমি পার্ক নির্ধারণ করেছে চীন। এ ক্ষেত্রে সংরক্ষণ ও উন্নয়নের সমন্বিত অগ্রগতির নতুন পথ উন্মোচন করেছে চীন। প্রথম ব্যবহার থেকে বর্তমান সংরক্ষণের মধ্যে উন্নয়ন হয়েছে। তাতে মানুষ ও প্রকৃতির সম্পর্ক অনুসন্ধানে সিপিসি’র সদস্যদের অবিরাম প্রচেষ্টা এবং নতুন যুগে পরিবেশগত সভ্যতা গঠনের দৃঢ় পদক্ষেপ প্রতিফলিত হয়েছে।
জলাভূমি সংরক্ষণের সেতু বন্ধন হিসেবে চীন বিশ্বের সঙ্গে আবার ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হয়েছে। বর্তমানে বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণসহ নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। জলাভূমি সংরক্ষণ করতে গেলে আমাদের উচিত বিশ্বজুড়ে সহযোগিতা জোরদার করা।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জলাভূমি সংরক্ষণের বৈশ্বিক মতৈক্য একত্রিত করা, জলাভূমি সংরক্ষণের বৈশ্বিক প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া এবং জলাভূমি থেকে বিশ্ব কল্যাণ বাড়ানো-সহ যে তিনটি উদ্যোগ নিয়েছেন, সেগুলো মানুষ ও প্রকৃতির সম্পর্ক মোকাবিলা, পৃথিবী নামক পরিবারের যত্ন নেওয়া এবং যৌথভাবে সবুজ উন্নয়নের সুযোগ ভোগ করার চীনা প্রস্তাব।
‘চীনে আছে চেতনা, আরও আছে তৎপরতা’ শীর্ষক এক ভাষণে সি চিন পিং ১ কোটি ১০ লাখ হেক্টর জলাভূমিকে জাতীয় উদ্যানের ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা, জাতীয় জলাভূমি সংরক্ষণ পরিকল্পনা এবং জলাভূমি সংরক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পসহ ধারাবাহিক বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব দেন।
জলাভূমি সংরক্ষণ করা মানে আমাদের ভবিষ্যৎ সংরক্ষণ করা। মানুষ ও প্রকৃতির সম্প্রীতিময় সহাবস্থান চীনা বৈশিষ্ট্যের আধুনিকায়নের পাশাপাশি মানব সভ্যতার নতুন রূপের দাবি।
(রুবি/এনাম)