নানা যন্ত্রপাতি বহনকারী গাড়িগুলো লাইন ধরে কারখানায় প্রবেশ করে। একটার পর একটা নতুন জ্বালানি-চালিত গাড়ি অপেক্ষায় রয়েছে সেখানে। শীত্কালের শুরুতে আন হুই প্রদেশের ছাং ফেং জেলার সিয়া থাং উপজেলায় অবস্থিত সিয়া থাং নতুন জ্বালানি গাড়ি শিল্প কারখানায় ব্যস্ত রয়েছে। অতীতকালে জনপ্রিয় এ রুটি উপজেলা বর্তমানে নতুন রূপ নিয়েছে।
ছাং ফেং জেলা অতীতে দরিদ্র ছিল। রুটি এখানকার মানুষের দারিদ্রমুক্ত হওয়ার অন্যতম শিল্প। বর্তমানে আধুনিক গাড়ির কথা কারখানার অধিবাসীদের মুখে বেশ শোনা যায়।
অধিবাসীদের দিকনির্দেশনায় চোখে পড়লো ২৬৬ হেক্টর আয়তনের আধুনিক কারখানা। কারখানার সামনে মানুষ ও গাড়ির ব্যস্ত সমাগম দেখে সিয়া থাং উপজেলার সিপিসি’র সম্পাদক ফান শাও বিন বলেন, “পতিত ভূমি থেকে বড় একটি কারখানা গঠিত হয়, তা কেবল এক বছর লেগেছে। খুব বিস্ময়কর। এটি বিওয়াইডি’র হ্য ফেই প্রকল্প। এ প্রকল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ ১৫০০ কোটি ইউয়ান। চুক্তি স্বাক্ষর থেকে নির্মাণকাজ শুরু পর্যন্ত কেবল ৪২ দিন লেগেছে। নির্মাণকাজ শুরু থেকে চলতি বছরের জুন মাসে প্রথম পুরো গাড়ি তৈরি শেষ পর্যন্ত কেবল ১০ মাস লেগেছে। ভবিষ্যতে এটি বিওয়াইডি’র পুরো গাড়ি, ইঞ্জিন ও ইলেক্ট্রনিক নিয়ন্ত্রণসহ নানা কেন্দ্রীয় যন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ উত্পাদনস্থলে পরিণত হবে। উৎপাদনের ক্ষমতায় পৌঁছালে এ শিল্প চেইন সংশ্লিষ্ট উৎপাদনের পরিমাণ ১০ হাজার কোটি ইউয়ান ছাড়িয়ে যাবে।
নতুন জ্বালানি-চালিত গাড়ি চীনের কৌশলগত নবত্থিত শিল্পের অন্যতম, যার উন্নয়নে প্রবল শক্তি প্রয়োগ করেছে চীন। চীনে নতুন জ্বালানি উত্পাদন ও বিক্রির পরিমাণ টানা সাত বছরে বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে। শিল্প ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সম্প্রতি বলেছেন, চীনে নতুন জ্বালানি-চালিত গাড়ি শিল্প সার্বিকভাবে বাজার উন্মোচনের যুগে প্রবেশ করেছে। নতুন জ্বালানি-চালিত গাড়ির উন্নয়ন চীনকে গাড়ি তৈরির বড় দেশ থেকে শক্তিশালী দেশে পরিণত করার পথে নিয়ে এসেছে।
সিয়া থাং উপজেলার ভাইস গর্ভনর চেন সিন ইয়ু বলেছেন, শীর্ষ স্থানে থাকা বিওয়াইডি’র খ্যাতির সুবিধায় বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীরা সিয়া থাং উপজেলায় ছুটে আসেন। চলতি বছর মোট ৩৫০০ কোটি ইউয়ান মূল্যের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
সিয়া থাং উপজেলার সামাজিক বীমা-বিষয়ক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা চাং চি চুন গত কয়েক মাস ধরে বিওয়াইডি’র হ্য ফেই ঘাঁটির গেটের সামনে কর্মী নিয়োগ করছিলেন। তিনি বলেন, এ ঘাঁটির নির্মাণকাজ সম্পূর্ণভাবে শেষ হলে প্রায় ১ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। আমাদের উচিত বেশি জনশিক্ত লালন করে ভবিষ্যতে আরও বড় আকারের উৎপাদনের জন্য ভিত্তি স্থাপন করা।
কৃষক তু রুও ইং সারা জীবন ধরে কৃষিকাজ করেন। বর্তমানে তিনি এ ঘাঁটিতে শ্রমিকদের ক্যান্টিনে কাজ করতে শুরু করেছেন। তিনি উদ্দীপ্ত হয়ে বলেন, ‘আমি এখন যে বেতন পাই, তা কল্পনার বাইরে”। জানা গেছে, তু রুও ইং’র মতো বিওয়াইডি’র ঘাঁটিতে এক হাজারের বেশি কর্মী রয়েছেন। এ শিল্প উন্নয়নে উপকৃত হচ্ছে উপজেলার অধিবাসীরা।
(রুবি/এনাম)