নভেম্বর ৮: চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের তথ্য কার্যালয় ৭ নভেম্বর "যৌথভাবে সাইবারস্পেসে অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গঠন করা" শীর্ষক শ্বেতপত্র প্রকাশ করে। চীনের সাইবারস্পেস ব্যবস্থাপনা ব্যুরোর সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা এদিন আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন সভ্যতা রয়েছে। এসব দেশ নিজেদের জন্য উপযুক্ত ইন্টারনেট উন্নয়ন-পথও খুঁজে বের করতে সক্ষম। চীন সর্বদা ইন্টারনেটের সার্বভৌমত্ব এবং বিভিন্ন দেশের ইন্টারনেট বিকাশের পথ, ইন্টারনেট পরিচালনার মডেল, ইন্টারনেট পাবলিক পলিসি এবং বৈশ্বিক সাইবারস্পেস পরিচালনায় সমান অংশগ্রহণের অধিকারকে সম্মান করে।
শ্বেতপত্রে মোট প্রায় ২৪ হাজার চীনা শব্দ রয়েছে। এতে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ১৮তম জাতীয় কংগ্রেসের পর থেকে চীনের ইন্টারনেট উন্নয়ন ও পরিচালনার অভিজ্ঞতা সার্বিকভাবে তুলে ধরা হয়। এতে সাইবারস্পেসে আন্তর্জাতিক বিনিময় ও সহযোগিতা জোরদার করার ব্যাপারে চীনের ধারণা, কর্ম ও অবদানের পরিচয় দেওয়া হয় এবং সাইবারস্পেসে অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি আরো ঘনিষ্ঠভাবে গঠন করায় চীনের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।
চীনের সাইবারস্পেস ব্যবস্থাপনা ব্যুরোর তথ্য কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ছাও শু মিন প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, চীন সবসময় বিশ্বাস করে যে, বড় বা ছোট, শক্তিশালী বা দুর্বল, ধনী বা দরিদ্র, সব দেশের আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন প্রণয়নে সমানভাবে অংশগ্রহণের অধিকার রয়েছে। সাইবারস্পেসের ভবিষ্যত উন্নয়নেও সকল দেশের জনগণের ভূমিকা থাকা উচিত।
তিনি বলেন, "আমরা দৃঢ়ভাবে দুর্বলদের ওপর কোনোকিছু চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে, 'প্রাচীর ও দুর্গ তৈরির' বিরুদ্ধে, 'সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ ও ভাঙার' বিরুদ্ধে, একতরফাতাবাদ ও চরম চাপের বিরুদ্ধে। আমরা পারস্পরিক সম্মান ও আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষে। আমরা নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে অন্য দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা এবং সবধরনের সাইবারস্পেস অস্ত্র প্রতিযোগিতার বিরোধিতা করি। আমরা সাইবার অপরাধ ও সাইবার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যৌথ লড়াইকে সমর্থন করি। আমরা সাইবার মনিটরিং ও সাইবার হামলার বিরোধিতা করি। আমরা সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আলোচনা ও সহযোগিতা চাই। এটি হল ঠান্ডাযুদ্ধের মানসিকতা পরিত্যাগ করা, সহযোগিতার মাধ্যমে শান্তি খোঁজা, এবং সার্বজনীন নিরাপত্তায় আত্ম-নিরাপত্তা অর্জন করার ব্যাপার।"
শ্বেতপত্রে সাইবারস্পেস উন্নয়ন, পরিচালনা, নিরাপত্তা এবং সহযোগিতার ক্ষেত্রে অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গঠন করায় চীনের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। এই নিয়ে ছাও শু মিন বলেন,"চীনে একটি কথা আছে, 'অন্যের সৌন্দর্যেই আনন্দিত হওয়া ও একসাথে সৌন্দর্য উপভোগ করা উচিত’। আমরা নিজস্ব মডেল অন্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে বৈচিত্র্যপূর্ণ অনুসন্ধান ও অনুশীলনকে সমর্থন করি। চীন সর্বদা ইন্টারনেটের সার্বভৌমত্ব, প্রতিটি দেশের ইন্টারনেট উন্নয়ন-পথ বাছাইয়ের স্বাধীনতা, ইন্টারনেটের পরিচালনার মডেল, ইন্টারনেট পাবলিক পলিসি, এবং আন্তর্জাতিক সাইবারস্পেস পরিচালনায় সকল দেশের সমান অংশগ্রহণের অধিকারকে সম্মান করে।”
গত এপ্রিলে, কোনো কোনো দেশ তথাকথিত "ইন্টারনেটের ভবিষ্যতের ঘোষণা" দিয়েছে, অন্যদের ওপর তাদের নিজস্ব মান চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এটা ইন্টারনেট ক্ষেত্রে বিভাজন ও দ্বন্দ্ব সৃষ্টির অপচেষ্টা এবং আন্তর্জাতিক নিয়মের লঙ্ঘন।
এই বিষয় নিয়ে চীনের জাতীয় ইন্টারনেট তথ্য কার্যালয়ের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিভাগের পরিচালক ছি শিয়াও শিয়া বলেন, "সাইবারস্পেসের আন্তর্জাতিক পরিচালনায় আমরা জাতিসংঘের প্রধান ভূমিকা পালনকে সমর্থন করি। আমরা এও সমর্থন করি যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পরামর্শের ভিত্তিতে যৌথ নির্মাণ ও উপভোগের নীতি মেনে চলবে। আমরা বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে সহযোগিতা গভীরতর করতে, যৌথভাবে বিশ্ব ইন্টারনেট পরিচালনা ব্যবস্থার সংস্কার ও নির্মাণকাজ উন্নত করতে, এবং সাইবারস্পেসে অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গঠন করতে ইচ্ছুক।" (ইয়াং/আলিম/ছাই)