নতুন যুগে চীন ও বিশ্ব একসাথে সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের সৃষ্টি করবে
2022-11-07 18:09:19

কোন ধরনের মেলা আপনার প্রিয়? এখন চীনের শাংহাইয়ে এমন একটি বিশেষ মেলা চলছে, এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শ্রেষ্ঠ মানের পণ্য এবং সর্বশেষ নতুন প্রযুক্তি পাওয়া যায়। এই মেলা বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠানের মতে, আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণের শীর্ষ মঞ্চও বটে।  এই মেলা হল পঞ্চম চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা। 

বিশ্বের প্রথম আমদানীকেন্দ্রিক রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের মেলা হিসেবে চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা হল চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের প্রস্তাবে আয়োজিত বিশ্বের বাণিজ্য খাতের গুরুত্বপূর্ণ মেলা, যা বিশ্বের সামনে চীনের উন্মুক্তকরণের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। পাঁচ বছরে মেলাটি ক্রমশ বড় হয়েছে। প্রদর্শনীর আয়তন প্রথম মেলার ২.৭ লাখ বর্গমিটার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমানের ৩.৬৬ লাখ বর্গমিটারে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আগের চার বার মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রকাশিত নতুন পণ্য, নতুন প্রযুক্তি ও নতুন সেবা ১৫০০টি ছাড়িয়ে গেছে। আর মোট স্বাক্ষরিত চুক্তির অর্থমূল্য ছিল ২.৭ কোটি মার্কিন ডলার। এবারের পঞ্চম চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলায় ৯০ শতাংশ কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠান আবারও অংশ নিচ্ছে।

এই মেলা চীনের উন্নয়ননের নতুন কাঠামো গঠনের জানালা এবং উচ্চমানের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার মঞ্চে পরিণত হয়েছে। এই মেলার মাধ্যমে বিশ্বের সাথে উন্নয়নের সুযোগ শেয়ার করার আন্তরিকতা দেখিয়েছে চলেছে চীন।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছেন: আমাদের উচিত উন্মুক্তকরণের মাধ্যমে উন্নয়নের সমস্যা সমাধান করা, উন্মুক্তকরণের মাধ্যমে সহযোগিতার শক্তি সংযুক্ত করা, উন্মুক্তকরণের মাধ্যমে উদ্ভাবনের প্রবণতা ত্বরান্বিত করা, উন্মুক্তকরণের মাধ্যমে উন্নয়নের কল্যাণ ভাগাভাগি করা। অর্থনীতির বিশ্বায়নকে এগিয়ে নিতে এবং বিভিন্ন দেশের উন্নয়নের সামর্থ্য জোরদার করতে হবে। আর এর লক্ষ্য উন্নয়নের সুফল আরও ন্যায়সংগতভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া।  

বর্তমানে সারা বিশ্ব ব্যাপক অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে; অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের গতিও ধীর। একদিকে করোনা ভাইরাসের মহামারির প্রভাব এখনো গুরুতর, আন্তর্জাতিক পরিবেশ খুব জটিল; অন্যদিকে, বিশ্বের শিল্প চেইন ও সরবরাহ চেইনের অবস্থাও ভালো নয়। একতরফবাদ এবং সরংক্ষণবাদ আবারও দেখা যাচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্বের অর্থনীতি কিভাবে মন্দা থেকে বের হয়ে আবারও প্রাণচঞ্চল হতে পারে? মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং-এর ভাষণ এসব প্রশ্নের উত্তর বলা যায়। আসলে উন্মুক্তকরণ হল মানবজাতির সভ্যতাকে এগিয়ে নেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। এটি বিশ্বের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের পথও বটে। শুধু সত্যিকার অর্থে বহুপক্ষবাদ মেনে চললেই বিশ্বের অর্থনীতিকে আরও সহনশীল, ভারসাম্যপূর্ণ করা যাবে।

উন্মুক্ত বিশ্ব অর্থনীতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে চীন অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনে ২১টি অবাধ বাণিজ্য এলাকা নির্মাণ করা হয়েছে; চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা, পরিষেবা মেলা, ভোগ্যপণ্য মেলাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলা আয়োজন করা হয়েছে ও হচ্ছে। ভবিষ্যতের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছেন যে, তাঁর দেশ বিভিন্ন দেশের সাথে চীনা বাজারের সুযোগ ভাগাভাগির মাত্রা বাড়াবে।

বন্ধুরা, আমরা এমন একটি যুগে বাস করছি যেখানে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে, আবার অনেক সুযোগও আছে। নতুন যুগের নতুন যাত্রায় বিশ্বে যে-পরিবর্তনই ঘটুক না কেন, চীনের উন্মুক্তকরণ সম্প্রসারণের আস্থা ও দৃঢ়তার পরিবর্তন ঘটবে না; মানবজাতির কল্যাণে বড় অবদান রাখার চীনা প্রচেষ্টা থেমে যাবে না। চীন বিশ্বাস করে, শুধু আরও বেশি দেশের সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টা চালানোর মাধ্যমেই বিশ্বের জন্য আরও উজ্জ্বল ভবিষ্যত সৃষ্টি করা যাবে। (ফেই/আলিম)