‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময়ে চীনা চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা ‘ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাধারা’এবং সাক্ষাৎকারভিত্তিক আয়োজন ‘আপনার ডাক্তার’।
# ঐতিহ্যবাহী_ চিকিৎসাধারা
দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিন্ড্রোমের চিকিৎসায় টিসিএম
দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিন্ড্রোম বা সিএফএস হলো চরম শারীরিক ক্লান্তি যা বিশ্রামের পরেও ভাল হয় না এবং শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের সঙ্গে সঙ্গে আরও খারাপ হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞান এখনও পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তির প্রকৃত রূপ, কারণ ও চিকিৎসা প্রক্রিয়া নির্ণয় করতে পারেনি। তবে আকুপাংচার ও ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধ বা টিসিএম দিয়ে এ রোগের চিকিৎসা চলছে বহুকাল ধরে।
দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সর্বদা ক্লান্ত থাকেন, এমনকি স্বাভাবিক পরিমাণে ঘুমানোর পরেও অবস্থার পরিবর্তন হয় না। এই অবস্থা সপ্তাহ, মাস বা বছর ধরে চলতে থাকে। দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তির অন্যান্য লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে শরীর ব্যথা, মস্তিস্কের সমস্যা, দৃষ্টি সমস্যা এবং বিষণ্নতা ও উদ্বেগের মতো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা।
‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময়ে চীনা চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা ‘ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাধারা’এবং সাক্ষাৎকারভিত্তিক আয়োজন ‘আপনার ডাক্তার’।
# ঐতিহ্যবাহী_ চিকিৎসাধারা
দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিন্ড্রোমের চিকিৎসায় টিসিএম
দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিন্ড্রোম বা সিএফএস হলো চরম শারীরিক ক্লান্তি যা বিশ্রামের পরেও ভাল হয় না এবং শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের সঙ্গে সঙ্গে আরও খারাপ হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞান এখনও পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তির প্রকৃত রূপ, কারণ ও চিকিৎসা প্রক্রিয়া নির্ণয় করতে পারেনি। তবে আকুপাংচার ও ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধ বা টিসিএম দিয়ে এ রোগের চিকিৎসা চলছে বহুকাল ধরে।
দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সর্বদা ক্লান্ত থাকেন, এমনকি স্বাভাবিক পরিমাণে ঘুমানোর পরেও অবস্থার পরিবর্তন হয় না। এই অবস্থা সপ্তাহ, মাস বা বছর ধরে চলতে থাকে। দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তির অন্যান্য লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে শরীর ব্যথা, মস্তিস্কের সমস্যা, দৃষ্টি সমস্যা এবং বিষণ্নতা ও উদ্বেগের মতো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা।
যদি কোনও ব্যক্তি ছয় মাস বা তারও বেশি সময় ধরে সারাক্ষণ ক্লান্তি বোধ, মাথা ঘোরানো, মনোনিবেশে অসুবিধা এবং মাথাব্যথা বা আলোর প্রতি সংবেদনশীলতার মতো কিছু দীর্ঘস্থায়ী লক্ষণে ভোগেন, তাহলে তাদের সিএফএস হয়েছে বলে ধারণা করতে হবে।
দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিন্ড্রোমের সংজ্ঞা অনুসারে, সিন্ড্রোম হলো কতগুলো উপসর্গের সমাহার যেগুলোকে প্রায়শই একত্রে দেখা যায় এবং যার সঠিক ব্যাখ্যা এখনও অজানা। দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তিকে এক সময় কেবল একটি সিন্ড্রোম হিসাবে বিবেচনা করা হতো, তবে এখন এটিকে ‘রোগ’ হিসাবে মনে করা হয়। এ কারণে রোগ হিসাবে এটার একটা নতুন নাম দেওয়া হয়েছে ‘মায়ালজিক এনসেফালাইটিস’ বা এমই, যা দিয়ে পেশী ব্যথা এবং মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডের প্রদাহকে বোঝায়।
দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিন্ড্রোমের লক্ষণগুলো ফাইব্রোমায়ালজিয়ার মতোই হতে পারে। ফাইব্রোমায়ালজিয়ায় আক্রান্ত লোকেরাও গুরুতর ক্লান্তি অনুভব করেন, তবে ফাইব্রোমায়ালজিয়ার প্রাথমিক লক্ষণগুলো হলো বারবার আসে আর যায় এম পেশীর ব্যথা, এবং প্রধান পেশী ও অস্থিসন্ধিগুলোর চারপাশে ‘টেন্ডার পয়েন্টে’ ফোলা ও প্রদাহ। কোনও ব্যক্তির একই সঙ্গে এমই/সিএফএস ও ফাইব্রোমায়ালজিয়া দুটিই হওয়া সম্ভব।
পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এমই/সিএফএস যে কোনও বয়সেই হতে পারে, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রাপ্তবয়স্কদের হয় এটা। অনুমান করা হয়, ৯০ দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি রোগ আছে এমন ৯০ শতাংশ মানুষেরই এ রোগ নির্ণয় হয় না।
এমই/সিএফএস একটি গুরুতর ও শারীরিক সক্ষমতা ধ্বংসকারী রোগ, যা এমনকি সবচেয়ে প্রাথমিক দৈনন্দিন কাজকর্মে ও অক্ষম করে দিতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তিতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা যদি এমন কোনও কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেন, যাতে বেশ মানসিক ও শারীরিক পরিশ্রম হয়, তাহলে তারা পরে সম্পূর্ণরূপে শক্তিহীন বোধ করেন এবং এ অবস্থা থেকে ফিরতে সময় লাগে। এটাকে বলা হয় পোস্ট-এক্সারশনাল ম্যালাইজ বা পিইএম।
শীর্ষ ১০টি দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিন্ড্রোমের লক্ষণ
মাথা ঘোরা ও মাথাব্যথা দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি রোগের লক্ষণ হতে পারে। এ রোগের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
• ক্লান্তি, সারাক্ষণ ক্লান্তি, দুর্বলতা
• আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা
• কোনও কিছুতে মনোযোগ দিতে সমস্যা, ফোকাস করা কঠিন, স্মৃতি সমস্যা ও বিভ্রান্তি
• মাথা ঘোরা, বিশেষ করে শোওয়া থেকে উঠার সময়
• মাথাব্যথা
• পেশী ব্যাথা, শরীর ব্যাথা, পেশীর দুর্বলতা ও অস্থিসন্ধিতে ব্যাথা
• ঘাড় বা বগলের অংশে বর্ধিত লিম্ফ নোড ও গলা ব্যথা
• ব্যায়াম বা মানসিক পরিশ্রমের পরে ক্লান্ত হয়ে পড়া এবং পরিশ্রম-পরবর্তী অস্বস্তি
• হতাশা, মেজাজ পরিবর্তন ও বদমেজাজ
• অনিদ্রা ও ঘুমের সমস্যা
এ রোগের দীর্ঘস্থায়ী লক্ষণগুলোর মধ্যে থাকতে পারে জ্বর, পেটে ব্যথা, ওজন হ্রাস বা বৃদ্ধি, অ্যালার্জি, ফুসকুড়ি, দ্রুত হৃদস্পন্দন এবং রাত্রীকালীন ঘাম।
দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তির কারণ কী?
এমই/সিএফএসের কারণ সুনির্দিষ্টভাবে এখনও জানা যায়নি। তবে ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা ব্যবস্থায় মনে করা হয়, রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার অকার্যকারিতা, ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রভাব এবং মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিন্ড্রোমের সঙ্গে সম্পর্কিত। কোনও কোনও ব্যক্তির এপস্টাইন বার, মনোনিউক্লিওসিস বা হারপিসের মতো ভাইরাল সংক্রমণের পরে দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তির লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে।
যদিও মনে হয়, যারা এমই/সিএফএসে ভুগছেন তাদের ইমিউন সিস্টেমের সমস্যা রয়েছে, তবে দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি রোগকে অটোইমিউন ডিসঅর্ডার হিসাবে বিবেচনা করা হয় না। লুপাস বা ফাইব্রোমায়ালজিয়ার মতো অন্যান্য রোগের মতো এমই/সিএফএস কখনও কখনও একজন ব্যক্তি মানসিক আঘাত বা শারীরিক আঘাতের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পরে তার মধ্যে দেখা দেয়।
দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি রোগে আক্রান্ত কিছু মানুষের পিটুইটারি হরমোন, অ্যাড্রিনাল হরমোন বা হাইপোথ্যালামাস হরমোনের সাথে সম্পর্কিত হরমোনের ভারসাম্যহীনতা থাকে, তবে এটি কীভাবে তাদের অবস্থার সাথে সম্পর্কিত হতে পারে তা বোঝা যায় না। ডায়াবেটিস, অ্যানিমিয়া বা হাইপোথাইরয়েডিজম হরমোনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে পারে যা দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তিতে অবদান রাখতে পারে।
কিছু ক্ষেত্রে, এমই/সিএফএস স্লিপ অ্যাপনিয়া বা দীর্ঘস্থায়ী অনিদ্রার মতো ঘুমের সমস্যার কারণে হতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন বিষণ্নতা, উদ্বেগ বা পিটিএসডি ঘুম ও হরমোনের প্রতিক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে পারে, যা এমই/সিএফএসে অবদান রাখে।
দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিন্ড্রোমের চিকিত্সা
মানসিক বা শারীরিক ক্রিয়াকলাপের পর ক্লান্ত বোধ করাকে পোস্ট-এক্সারশনাল ম্যালাইজ বা পিইএম বলা হয়। এমই/সিএফএসের জন্য প্রচলিত পশ্চিমা ওষুধে কোনও স্পষ্ট চিকিত্সা প্রোটোকল নেই। একজন ডাক্তার মায়ালজিক এনসেফালাইটিস নির্ণয় করতে পারেন, যদি তিনি অন্যান্য সম্ভাবনাগুলো বাতিল করে দেন। পরে রোগীদের দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিন্ড্রোম মোকাবেলা করতে সহায়তা করার জন্য ওষুধ বা বিভিন্ন ধরনের থেরাপির সুপারিশ করারও চেষ্টা করেন তিনি।
পশ্চিমা চিকিৎসায় এমই/সিএফএস চিকিৎসায় প্রায়ই মাথাব্যথা বা পেশী ব্যথা উপশমকারী ওষুধ সুপারিশ করা হয়। দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিন্ড্রোম-সম্পর্কিত হতাশা ও উদ্বেগ মোকাবেলায় রোগীদের সাহায্য করার উপায় হিসাবে ডাক্তাররা এন্টিডিপ্রেসেন্টসও লিখে থাকেন। তবে এ ওষুধগুলো কখনও কখনও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, যা এটির উপশমের পরিবর্তে দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
কোনও কোনও ডাক্তার অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ, কর্টিকোস্টেরয়েড বা থাইরয়েড হরমোন ওষুধ দিয়ে দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিন্ড্রোমের চিকিৎসা করার চেষ্টা করেন। এ রোগের চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত ফার্মাকোলজিক্যাল হস্তক্ষেপের কোনওটিই খুব কার্যকর প্রমাণিত হয়নি। তবে অনেক এমই/সিএফএস রোগী এ রোগ থেকে মুক্তি পেতে বিকল্প ওষুধ বা পরিপূরক থেরাপির দিকে মনোনিবেশ করেন। আকুপাংচার এখন দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিন্ড্রোমের বিকল্প থেরাপি হিসেবে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত।
আকুপাংচার ও সিসিএম কি দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিন্ড্রোম দূর করতে পারে?
ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা বা টিসিএম ব্যবস্থা এমই/সিএফএস চিকিৎসার জন্য উপযুক্ত। টিসিএম গোটা শরীরের মধ্যে এবং একই সঙ্গে বিভিন্ন অঙ্গ ব্যবস্থার মধ্যে ‘ছি’ নামে পরিচিত শক্তির সূক্ষ্ম ভারসাম্যের প্রতি গুরুত্ব দেয়। কোনও রোগীর মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিন্ড্রোমের যে নির্দিষ্ট লক্ষণগুলো টিসিএম চিকিৎসক দেখতে পান, সেগুলোর ভিত্তিতে তারা চিহ্নিত করতে পারেন কোন অঙ্গ ব্যবস্থায় ঘাটতি রয়েছে এবং কোনটিকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন।
দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিন্ড্রোম নির্ণয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত ক্লাসিক টিসিএম প্যাটার্নগুলোর মধ্যে রয়েছে:
প্লীহায় ‘ছি’ ঘাটতি
লিভারে ‘ছি’ স্থবিরতা
কিডনিতে ঘাটতি
ইয়িন ঘাটতি
তাপ বিষাক্ততা
কফে বাধা
সুপ্ত তাপ ও ক্লেদ কখনও কখনও ভাইরাল সংক্রমণ বা অন্যান্য অসুস্থতার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব বা দীর্ঘ সময়ের মানসিক চাপ।
এই অবস্থাগুলো একটি বাহ্যিক প্যাথোজেনিক ফ্যাক্টর থেকে উদ্ভূত হয়, কিন্তু তারপরে ভারসাম্যহীনতার একটি ধারা সৃষ্টি করে যা সময় যাওয়ার সাথে সাথে কিডনি ও অন্যান্য অঙ্গকে দুর্বল করে দেয়। আকুপাংচার চিকিত্সা ও ভেষজ প্রদাহ কমাতে এবং ‘ছি’ শক্তিশালী করতে সাহায্য করতে পারে।
একজন টিসিএম ডাক্তার আকুপাংচার পয়েন্ট এবং ভেষজগুলোর এমন সংমিশ্রণ বেছে নেবেন, যা প্রভাবিত সিস্টেমগুলোতে সামঞ্জস্য আনতে সাহায্য করবে। ভেষজ দিয়ে আমরা শরীরে পুষ্টি পেতে সক্ষম যা শুধু খাবার দিয়ে করা সম্ভব না। তাপকে শীতল করে এবং অঙ্গগুলোর ওপর প্রভাব ফেলে এমন একটি সুষম খাদ্য শক্তি পুনরুদ্ধারের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
আকুপাংচার ও মক্সিবাশন সম্পর্কিত আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, দশম দফা চিকিত্সার পরও চিকিত্সা সেশনগুলি অব্যাহত থাকলে মোক্সা চিকিত্সা আরও বেশি কার্যকর হয়ে উঠেছে। মক্সিবাশন প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণকারী ভ্যাগাস স্নায়ুর উপর প্রভাব ফেলে বলে গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে।
দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিন্ড্রোমের জন্য আকুপাংচার চিকিত্সা থেকে ফলাফল পেতে কতক্ষণ সময় লাগে তা একেক ব্যক্তির জন্য একেক রকম এবং এটা নির্ভর করে ওই ব্যক্তি কতদিন ধরে সিএফএস-এ ভুগছেন এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলি কতটা গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছে তার উপর। টিসিএম চিকিত্সার একটি ক্রমবর্ধমান প্রভাব রয়েছে, যা সময় ও সেশনের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শক্তিশালী হয়।
এমই/সিএফএস সম্পর্কে পরিসংখ্যান যে তথ্য দেয়, প্রকৃত অবস্থা তার চেয়ে খারাপ। কারণ এ রোগে অনেকে নিভৃতে ভোগেন এবং পরিসংখ্যানে অদৃশ্য থাকেন। যেমন বর্তমানে অনেক মানুষ কোভিড-১৯-এ ভোগার গর দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তির সাথে লড়াই করছেন। টিসিএম পদ্ধতি যেমন আকুপাংচার, চাইনিজ ভেষজ ও মক্সিবাশন ক্লান্তি, বিষণ্নতা, মানসিক অস্পষ্টতা, খারাপ ঘুম এবং সিএফএস’র অন্যান্য উপসর্গ দূর করতে সাহায্য করতে পারে। আপনি বা আপনার প্রিয় কেউ যদি দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি সিড্রোমে ভোগেন এবং মাসের পর মাস যদি তার শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তাহলে আকুপাংচার ব্যবহার করার কথা বিবেচনা করতে হবে।- রহমান
# আপনার ডাক্তার
দেহঘড়ির আজকের পর্বে আমরা কথা বলেছি অনিয়মিত ঋতুচক্ত নিয়ে। হরমোনের প্রভাবে পরিণত নারীদের প্রতি চন্দ্রমাসে একবার জরায়ু চক্রাকারে যে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায় এবং রক্ত ও জরায়ু নিঃসৃত অংশ শরীর থেকে বের হয়ে যায় সেটাই মাসিক বা ঋতুচক্র। মাসিকের এই নিয়মে কখনও কখনও ব্যতয় ঘটে। যখন এই ব্যতয় ঘটে এবং মাসিক ঋতুচক্র প্রতি মাসে হয় না অথবা দুই মাস বা তারও বেশি সময় পর পর হয়, তখন তাকে অনিয়মিত ঋতুচক্র বলে। অনিয়মিত পিরিয়ড নারী স্বাস্থ্যের জন্য বেশ খারাপ।
অনিয়মিত পিরিয়ড বা একেবারেই পিরিয়ড বন্ধ হওয়া পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম বা পিওএস’র জন্য হয়ে থাকে। তবে আরও অনেক কারণ আছে, যার জন্য পিরিয়ড নিয়মিত হয় না। যেমন অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা, অতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় খাবার গ্রহণ, মানসিক চাপের মধ্যে থাকা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করা, অপরিচ্ছন্ন থাকা, মদ্যপান বা ধূমপান করা, ইত্যাদি। টিনেজার ও মধ্যবয়সী নারীদের মধ্যে অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর পেছনের কারণটি হলো হরমোন। আর লম্বা সময় মানসিক চাপে থাকলে অনেকেরই মাসিক দেরিতে হতে পারে। ওজন খুব কম গেলে কিংবা জরায়ুতে ফাইব্রয়েডস হলেও এগুলো পিরিয়ডের স্বাভাবিক চক্র বাধাগ্রস্ত হতে পারে। জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করা যেমন পিল, প্যাঁচ, ইনজেকশন ও আইইউডি’র ব্যবহার পিরিয়ডে সমস্যা ঘটাতে পারে। এছাড়া বড় কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন থাইরয়েডের সমস্যা বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের কারণেও পিরিয়ড দেরিতে হতে দেখা যায়। অনিয়মিত মাসিচক্রের কারণ, প্রতিকার ও চিকিৎসা নিয়ে কথা আজ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. গুলশান আরা। তিনি প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎকদের সংগঠন অবসটেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকলিজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি)’র মহাসচিব।
‘দেহঘড়ি’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত ও পরামর্শ জানতে চাই আমরা। আমাদের ফেইসবুক পেইজ facebook.com/CMGbangla অথবা ওয়েবসাইট bengali.cri.cn’র মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত বা পরামর্শ।