এশিয়ার উন্নয়ন ‘এক অঞ্চল, এক পথ’-সহ বিভিন্ন চীনা উদ্যোগের ওপর নির্ভর করছে: আর্ন্তজাতিক বিশেষজ্ঞ
2022-11-03 17:25:33


নভেম্বর ৩: গতকাল (বুধবার) ‘চিন্তাধারা এশিয়া’ ফোরাম অনলাইন ও অফলাইনে সিঙ্গাপুরে আয়োজিত হয়। চীন, সিঙ্গাপুর, জাপান, ভারত, থাইল্যান্ড, ফিলিপিন্স, পাকিস্তান ও কাজাখস্তানসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের ৪০ জনেরও বেশি বিশেষজ্ঞ এতে অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীরা ‘নতুন যুগের এশিয়া ও বিশ্ব’ শীর্ষক টপিক নিয়ে গভীরভাবে মত বিনিময় করেন। তাঁরা বলেন, একবিংশ শতাব্দী হচ্ছে এশিয়ার শতাব্দী। আর, এশিয়ার উন্নয়ন ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ, মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটিসহ বিভিন্ন চীনা উদ্যোগের ওপর নির্ভর করছে। 


ফোরামের অন্যতম আয়োজক, গবেষণাসংস্থা ইনস্টিটিউট অব কনটেম্পোরারি চায়না অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড (আইসিসিডাব্লিউ)-র প্রধান ইউ ইয়ুন ছুয়ান সিএমজি-কে জানান, এবারের ফোরাম আয়োজনের লক্ষ্য হচ্ছে এশিয়ার থিংক ট্যাংকসমূহের জন্য একটি প্লাটফর্ম  তৈরী করা, যাতে বৈশ্বিক প্রশাসনে এশিয়া আরও বেশি ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে পারে। 


ফোরামে অংশগ্রহণকারীদের সবচেয়ে ফোকাস ছিল সিপিসি’র বিংশ জাতীয় কংগ্রসের পর চীনের উন্নয়ন এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর তার প্রভাব। 


ইউ ইয়ুন ছুয়ান বলেন, “অংশগ্রহণকারীদের আলোচনার সবচেয়ে বড় ফোকাস ছিল সদ্যসমাপ্ত সিপিসি’র বিংশ জাতীয় কংগ্রেস। অংশগ্রহণকারীরা চীনের ভবিষ্যতের নীতিমালার ওপর নজর রাখছেন। বিশেষ করে, চীনের সংস্কার ও উন্মুকরণের নীতি অব্যাহত থাকবে কি না, তার ওপর। চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন কিভাবে আরও বেশি এশীয় দেশের জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারে—সেটা তারা দেখতে আগ্রহী। তাঁরা আশা করেন, বৈশ্বিক প্রশাসনে, বিশেষ করে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সহযোগিতা ও অভিন্ন উন্নয়নে চীন আরও বেশি ইতিবাচক নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করে যাবে।”


জাতিসংঘে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের সাবেক প্রতিনিধি মা খাই সুও ফোরামে বলেন, বর্তমান বিশ্ব হচ্ছে বহুমেরুর, রঙিন ও বহুসংস্কৃতির। এশিয়ার উচিত পশ্চিমের ওপর মনস্তাত্বিক নির্ভরশীলতা  থেকে বেরিয়ে আসা। চীনের উত্থাপিত মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটির ধারণা এশিয়া, এমনকি গোটা বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং অভিন্ন উন্নয়নকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। 


তিনি বলেন, “আমরা একই নৌকাতে আছি, আমাদের অভিন্ন ভবিষ্যৎ আছে। এ জন্য ভবিষ্যতে আমরা শুধু নিজের দেশের কথা ভাববো না, বরং গোটা মানবজাতির ওপর গুরুত্ব দেবো। আর এটাই হচ্ছে মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটির মর্মার্থ।” 


থাইল্যান্ডের “এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান উইরুন ফিচাইওংফাকদি জানান, চীনের দারিদ্র্যবিমোচন খাতে সাফল্য উল্লেখযোগ্য। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তা থেকে শিখতে পারে। থাইল্যান্ডও শিখছে। 

    

পাকিস্তানের সিনেটের প্রতিরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মুশাহিদ হুসেইন সাইয়েদ  বলেন, ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের আওতায় চীন-পাক অর্থনৈতিক করিডোর হচ্ছে একটি প্রধান প্রকল্প। এটি পাক অর্থনীতির উন্নয়নে বড় ভূমিকা পালন করে আসছে। ভবিষ্যতে এশিয়ার উন্নয়ন ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের ওপরে অনেকাংশে নির্ভর করবে। 


তিনি বলেন, ‘এক অঞ্চল এক পথ’ উদ্যোগের আওতায় চীন-পাক অর্থনৈতিক করিডোর হচ্ছে একটি প্রধান প্রকল্প, যা পাকিস্তানের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে এবং জ্বালানি সংকটও মোকাবিলা করছে। চীন-পাক অর্থনৈতিক করিডোর অবকাঠামোর মাধ্যমে বিভিন্ন অঞ্চল পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগসংশ্লিষ্ট দেশসমূহের ৩ লাখেরও বেশি লোক কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছে।  একবিংশ শতাব্দী হচ্ছে এশিয়ার শতাব্দী। ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের মাধ্যমে এশিয়ার আন্তঃযোগাযোগ ও পারস্পরিক সহযোগিতা বাস্তবায়িত হবে। (আকাশ/আলিম/ফেইফেই)