লাওসের উচিত চীন থেকে শিক্ষা নেওয়া এবং গ্রামীণ উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া
2022-11-01 15:41:00

তিনি লাওস থেকে এসেছেন এবং ইউননানে তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন। তার নাম উয়েন পেংইউ এবং তিনি ইউননান ইউনিভার্সিটির ডক্টরেট ছাত্র। তিনি চীনে ৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে পড়াশোনা শেষ করেছেন এবং কর্মজীবন শুরু করেছেন, তা ছাড়া তিনি ইউননানের জামাই হয়েছেন। তিনি লাওস ও চীনের মধ্যে বন্ধুত্বের সাক্ষী ছিলেন এবং চীনের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তের উন্নয়ন ও পরিবর্তনগুলি অনুভব করেছেন। আজ, লাওস থেকে ডক্টর উয়েন পেংইউর "মিটিং চায়না" গল্প শুনব।

"আমি এই ট্রেনটির টেস্ট রাইডে খুব উত্তেজিত ছিলাম। ট্রেনের পরিচালক লাও এবং ইংরেজি বলতে পারেন। আমি যখন ট্রেনে উঠি তখনই খুব আন্তরিক বোধ করেছিলাম..."

 

গত বছরের ৩ ডিসেম্বর, পুরো চীন-লাওস রেলওয়ে চালু করা হয়। রেলওয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর প্রথম দফার যাত্রী হিসেবে উয়েন পেংইউ তার উত্তেজনা লুকাতে পারেননি। তিনি বলেন, রেলওয়ে3 লাওস ও চীনকে সংযুক্ত করে যা একটি "সুখের রাস্তা" হয়ে উঠেছে। উয়েন বলেন,

আগে চীন-লাওস রেলপথ ছিল না, আমি খুনমিং থেকে আমার বাড়িতে ২০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বাসে চড়েছিলাম। এখন চীন-লাওস রেলওয়ের সঙ্গে, বাড়ি যেতে ১০ ঘণ্টার কিছু বেশি সময় লাগে। যা যথেষ্ট ও খুবই সুবিধাজনক। চীন-লাওস রেলওয়ের খোলা লাওসকে একটি "ভূমি-আবদ্ধ দেশ" থেকে "ভূমি-সংযুক্ত দেশে" রূপান্তরিত করেছে, লাওসের পরিবহন, পর্যটন এবং অন্যান্য শিল্পে নতুন সুযোগ ও নতুন উন্নয়ন এনেছে।

২০১৫ সালে, উয়েন পেংইউ লাওস থেকে চীনে এসেছিলেন ইউননান বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য। চীনে আসার আগে তিনি লাওসে তিন মাস চীনা ভাষা পড়াশোনা করেছেন। উয়েন পেংইউ বলেন যে লাওস-চীন সম্পর্কের গভীর উন্নয়ন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠ বিনিময় ও সহযোগিতার কারণে, লাওসের তরুণদের চাকরি খোঁজার ব্যাপারে চীনা ভাষা শেখা একটি ‘বোনাস পয়েন্ট’ হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন,

“সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, লাওসে ব্যবসা করা লোকেদের চীনের কোম্পানিগুলির সঙ্গে আরও বেশি যোগাযোগ হয়েছে এবং কোম্পানিগুলি এমন কর্মচারীর প্রয়োজন যারা চীনা ভাষায় কথা বলতে পারে, তাই লাওসের আরও বেশি সংখ্যক তরুণ চীনা ভাষা শিখছে, চীনে অধ্যয়ন করা হোক বা লাওসে অধ্যয়ন করা হোক। আগের চেয়ে সে সংখ্যা আরও বেশি হয়েছে।”

 

স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর, উয়েন পেংইউ উন্নয়নের জন্য ইউননানে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। এখানে, তিনি তার প্রেমের দেখা পেয়েছেন এবং পরিবার শুরু করেছেন। তিনি সবসময় তার নিজের "উদ্যোক্তা হবার স্বপ্ন" বহন করেন। অল্প চেষ্টার পর  তিনি দ্রুত অগ্রগতি লাভ করেন, তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি শৈশব থেকেই রান্না করতে পছন্দ করতেন এবং তিনি লাওস থেকে এসেছেন, তাহলে কেন একটি লাও রেস্টুরেন্ট খোলার চেষ্টা করবেন না? ফলস্বরূপ, একটি অনলাইন রেস্তোরাঁ "বো ছিয়াও ছোট রান্নাঘর" চালু করেন। তারপর তিনি ও তার স্ত্রী একটি প্যাকেজ স্টেশন খোলেন। তিনি বলেন, আমি মনে করি চীনের অনলাইন অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভাল সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষ করে আরও বেশি মানুষ অনলাইন ব্যবহারের করছে, অনলাইন রেস্তোরাঁ খোলার অনেক সুযোগ রয়েছে।

বর্তমানে, উয়েন পেংইউ ইউননানে সুন্দর জীবন কাটাচ্ছেন। অবসর সময়ে, তিনি সুন্দর দৃশ্য দেখতে ইউননানের সীমান্তবর্তী ছোট-বড় গ্রামে হাঁটেন। পুয়েরের ছোট শহর নাকেলি গ্রামে, উয়েন পেংইউ সেখানে একটি হোপ প্রাইমারি স্কুলে তার প্রথম স্বেচ্ছাসেবক অভিজ্ঞতা লাভ করেন। তিনি শিশুদের সঙ্গে ছবি আঁকেন ও নাচেন এবং লাওস-চীন বন্ধুত্বের গল্প বলেন। তিনি স্থানীয় গ্রাম পরিদর্শন করেন, কীভাবে স্থানীয় এলাকায় একটি বৈশিষ্ট্যময় অর্থনীতি গড়ে তোলা যায়, যাতে গ্রামগুলো দারিদ্র্য থেকে সমৃদ্ধির দিকে যেতে পারে। তিনি বলেন,

“ব্যবসা শুরু করার জন্য তারা আরও তরুণদের নিজ জন্মস্থানে প্রত্যাবর্তন আকৃষ্ট করে। তাদের কেউ খাবারের ব্যবসায়, কেউ চায়ের ব্যবসায়, আবার কেউ সরাসরি সম্প্রচার ব্যবসায় জড়িত। এখন তাদের আয় অনেক বেশি। আমি মনে করি লাওসের উচিত চীনের কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়া, গ্রামীণ উন্নয়নকে গুরুত্ব দেওয়া, আরও বেশি পর্যটকদের গ্রামাঞ্চলে ভ্রমণ আকর্ষণ করা বা গ্রামবাসীদের তাদের পণ্য বিক্রি করতে সাহায্য করা যায়, যাতে গ্রামীণ উন্নয়ন আরও ভাল হয়।”

 

চীন ও লাওস সীমান্তবর্তী একমাত্র প্রদেশ হিসাবে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, ইউননান ও লাওস একে অপরকে সমর্থন করেছে এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে, তাদের বন্ধুত্ব অব্যাহত রেখেছে এবং সম্প্রীতির মডেল হয়ে উঠেছে। ইউননানে বসবাসকারী লাওসের তরুণ উয়েন পেংইউও বিভিন্ন ক্ষেত্রে লাওস ও চীনের মধ্যে বিনিময় ও সহযোগিতা ক্রমাগত গভীরতা প্রত্যক্ষ করেছেন। তিনি বলেন,

‘৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে, চীন ও লাওসের জনগণ একে অপরকে সাহায্য করেছে এবং তারা উভয়ের ভালো প্রতিবেশী। বছরের পর বছর ধরে, আমাদের দুই দেশ অনেক প্রকল্পে সহযোগিতা করেছে, বিশেষ করে চীন-লাওস অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গড়ে তোলা, পাশাপাশি ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ এবং আরসিইপি ইত্যাদি...আমি মনে করি এটি লাওসকে অনেক সাহায্য করবে। বিশেষ করে লাওসের পণ্যগুলি ‘বাইরে যেতে পারবে’, কারণ চীনা বাজার অনেক বড়। আমি আশা করি, ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে আরও সহযোগিতা এবং আরও প্রকল্প হবে। তরুণদের জন্য ব্যবসা শুরু করা বেশ ভালো।”

বর্তমানে উয়েন পেংইউ তার পিএইচডি অর্জনের জন্য ইউননান বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে এসেছেন। তিনি বলেন,

“আমি আশা করি, চীনের উন্নয়ন আরও ভাল এবং আরও সাফল্য অর্জন করবে, আমাদের বিশ্ব আরও উন্নত হবে, এবং বিশ্বের জন্য আরও সুযোগ বয়ে আনবে।”

 


ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় চীনা বই মনোযোগ আকর্ষণ করেছে

"আমাকে অবশ্যই প্রতি বছর চীনা বুথে যেতে হবে। এই সমৃদ্ধ এবং চমত্কার বইগুলি আমাকে সবসময় চীনের বিভিন্ন দিক আরও ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করতে পারে।" জার্মানির ২০২২ সালের ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায়, বেলজিয়ামের একজন তরুণ সাংস্কৃতিক কর্মী শার্লট সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় চীনা বুথে পরিদর্শন করছিলেন।

প্রকাশনা শিল্পে বিশ্বের বৃহত্তম প্রদর্শনী হিসাবে, এই বছরের ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা ১৮ অক্টোবর চালু হয়েছে এবং ২৩ অক্টোবরে শেষ হয়, বইমেলাটি ৯৫টি দেশ এবং অঞ্চল থেকে চার হাজারেরও বেশি প্রদর্শক হাজির হয়েছে।

চীনের বিদেশি ভাষা ব্যুরো, চীনের বই আমদানি ও রপ্তানি গ্রুপ কোং লিমিটেড এবং শত শত দেশীয় প্রকাশনা ইউনিট রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, ইতিহাস, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, চীনা শিক্ষা, শিশুদের বই ইত্যাদি এক হাজারেরও বেশি ধরণের উচ্চমানের বই এবং সাময়িকী নিয়ে জার্মানির প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছে। এতে বড় সংখ্যার প্রকাশনা পেশাদার ও সাধারণ পাঠকদের আকর্ষণ করেছে।

মিউনিখের একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক স্টেফান সাংবাদিকদের বলেছেন: "যেহেতু আমি কমিউনিটি স্কুলে বেশ কয়েকটি চীনা-থিমযুক্ত ক্লাস নিয়েছি, তাই আমি দীর্ঘ ইতিহাসের সঙ্গে চীনা সভ্যতা এবং দ্রুত উন্নয়নের আধুনিক চীন সম্পর্কে জানতে চাই। আমার মনে হয়, শুধু সংবাদপত্র ও টিভি থেকে জানা যথেষ্ট নয়, তাই এবার বইমেলায় এসেছি, আমি বিশেষভাবে চাইনিজ বুথ দেখার পরিকল্পনা করেছি।

সনাইডার ফ্রাঙ্কফুর্টে পরামর্শদাতার কাজে নিযুক্ত এবং ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চীনা কোম্পানি এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছেন। এই বইমেলায়, তিনি চীনের সাম্প্রতিক অগ্রগতি সম্পর্কে জানার আশায় চীনের রাজনীতি ও অর্থনীতি বিষয়ক বই খুঁজে বের করার জন্য একটি বিশেষ ভ্রমণ করেন। "আমি 'এক অঞ্চল, এক পথ' বিষয়বস্তুতে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী, এবং আমি আশা করি বইয়ের মাধ্যমে কিছু ব্যবসায়িক অনুপ্রেরণা পেতে পারি।"

আজারবাইজানের পূর্ব-পশ্চিম প্রকাশনা সংস্থার প্রধান শেভেল ইসমাইলোভা সাংবাদিকদের বলেন, তার সংস্থা একবার চীনে বিখ্যাত আজারবাইজানীয় কবিদের কবিতার অনুবাদ পরিচয় করিয়ে দিয়েছে এবং বর্তমানে চীনের রাজনীতি বিষয়ে বই প্রকাশের প্রস্তুতি নিচ্ছে, "আমরা আশা করছি, আরও অনেক আজারবাইজানীয় পাঠক চীনের সংস্কার এবং অর্জনগুলি বুঝতে পারবেন এবং চীনা প্রকাশনা শিল্পের সঙ্গে সহযোগিতা আরও জোরদার করব।"

জার্মান পাঠক রোক্সা চীন সম্পর্কিত অনেক বই পড়েছেন এবং বিশেষ করে চীনা দার্শনিক চিন্তাধারায় আগ্রহী। তিনি বলেন, তিনি ভবিষ্যতে চীনা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় আরও দ্বিভাষিক বইয়ের জন্য অপেক্ষা করছেন, যাতে বিদেশি পাঠকরা চীনা সংস্কৃতি আরও ভালোভাবে বুঝতে পারে।

চীনা বই গ্রুপের জার্মান প্রতিনিধি অফিসের প্রধান প্রতিনিধি রেন লেই বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, আরও বেশি সংখ্যক চীনা বই বিদেশে চলে গেছে এবং থিম যেমন শিশুদের বই, সুপরিচিত লেখকদের উপন্যাস, ঐতিহ্যবাহী চীনা দর্শন এবং ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধ ইউরোপে বিশেষভাবে জনপ্রিয়।

"বইগুলি চীন ও বিদেশের মধ্যে যোগাযোগের জন্য একটি সেতু হিসাবে কাজ করে। আমি যা অনুভব করি তা বিশেষভাবে সুস্পষ্ট যে আজকাল আমাদের কপিরাইট পরিচালকদের আরও বেশি বৈচিত্রপূর্ণ যোগাযোগের চ্যানেল এবং উচ্চতর পেশাদার স্তর রয়েছে এবং এই বাজারটি আরও বেশি সক্রিয় এবং পরিপক্ব হয়ে উঠছে।"