আপন আলোয়-৯২
2022-10-28 18:57:39

এ পর্বে অন্তরঙ্গ আলাপনে অতিথি কুমিল্লার লোকসংগীত শিল্পী বাবুল বাউল

 


চিরায়ত চীনা সাহিত্য

রূপ ও প্রেমের কবি সু সিয়াওসিয়াও

প্রাচীন চীনের একজন বিখ্যাত কবি ছিলেন সু সিয়াওসিয়াও। তাকে ছোট সু নামেও ডাকা হয়। তিনি দক্ষিণ ছি রাজবংশের সময়কার বিখ্যাত নর্তকী ও কবি ছিলেন।  সু সিয়াও সিয়াওয়ের জন্ম ৪৭৯ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান চেচিয়াং প্রদেশের হাংচৌ শহরে। প্রাচীন ছিয়ানথাং শহরের বারবণিতা সু সিয়াওসিয়াও তার সৌন্দর্য ও কাব্য প্রতিভার জন্য সকলের প্রিয়ভাজন ছিলেন।

সু’য়ের কবিতায় ফুটে উঠেছে প্রেম, মানবতা, প্রকৃতি ও রূপের কথা। দানশীল ও দয়ালু মানুষ হিসেবেও তিনি খ্যাতিমান ছিলেন। তার দানশীলতা ও করুণার অনেক গল্প প্রচলিত আছে। 

একবার এক তরুণ বিদ্যান রাজধানীতে যাচ্ছিলেন সরকারি চাকরির জন্য পরীক্ষা দিতে। সু’য়ের শহরের মধ্য দিয়ে যখন যাচ্ছিলেন তখন তার সঙ্গে পরিচয় হয়। সেই তরুণের কাছে কোন অর্থ ও খাদ্য ছিল না যা দিয়ে তিনি রাজধানী পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেন। সু তাকে রৌপ্যমুদ্রা দিয়ে রাজধানীতে পৌঁছানোর সব ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু সেই তরুণ যখন দরবারে চাকরি পান তখন সু’য়ের সঙ্গে আর কোন যোগাযোগ রাখেননি।

সু কারো ঘরণী হতে চাননি বরং সাধারণ মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করা এবং তাদের জন্য কবিতা ও নৃত্য পরিবেশনেই তিনি আনন্দ পেতেন।

তিনি মাত্র ১৯ বছর বয়সে ৫০১ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগে যখন তিনি অসুস্থ হন তখন স্বর্গের কাছে এই বলে ধন্যবাদ জানান যে, তিনি বয়সের ভারে তার সৌন্দর্য মলিন হওয়ার আগেই পৃথিবী ত্যাগ করতে পারছেন। তার কাছে মনে হয় এটাই স্বর্গের অভিপ্রায় যে তিনি সৌন্দর্যের এক কিংবদন্তি রেখে যেতে পারছেন।

বিখ্যাত পশ্চিম হ্রদের (ওয়েস্ট লেক) কাছে সিলিন ব্রিজের পাশে তার সমাধি রয়েছে যা একটি বিখ্যাত পর্যটন স্থান।

সু সিয়াওসিয়াওয়ের একটি বিখ্যাত কবিতা হলো ‘অভিন্ন হৃদয়স্পন্দনের গান’। এই কবিতাটি সু সিয়াওসিয়াওয়ের গান নামেও পরিচিত।

আমি এক সুসজ্জিত গাড়িতে চড়েছি

প্রিয়তম চড়েছে নীল-সাদা ঘোড়ায়

কোথায় হৃদয়ের গাঁঠছড়া বাঁধবো আমরা?

পাইন ও সাইপ্রাস তরুর ছায়ায়।

সু সিয়াওসিয়াওয়ের কবিতা পরবর্তিকালের অনেক বিখ্যাত কবিকে অনুপ্রাণিত করেছে।  প্রকৃতির স্নিগ্ধ বর্ণনা ও ভালোবাসার প্রগাঢ় প্রকাশের জন্য বিশেষভাবে বিখ্যাত সু সিয়াও সিয়াও।

 

 

অন্তরঙ্গ আলাপন

গানের ছবি চোখে না ভাসলে গান গাওয়া যায় না: বাবুল বাউল

বাউল ফজলুর রহমান বাবুল। কুমিল্লায় তিনি বাবুল বাউল নামে সুপরিচিত।

লালন, হাসন, অনাদি সরকার, বিজয় সরকার, বাবা মুসলেম আলী ফকিরেরসহ বিভিন্ন ধারার লোক ও আধ্যাত্মিক গান করে থাকেন বাবুল বাউল। কুমিল্লার স্থানীয় মলয়া সংগীতও করেন তিনি। নিজেও সংগীত রচনা ও সুর করে গেয়ে থাকেন বাবুল বাউল।

সংগীতে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে কলকাতার ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক সংগঠন, কুমিল্লার অধুনা থিয়েটার ও কালিপদ মেমোরিয়াল কালচারাল একাডেমিসহ দেশ-বিদেশের অনেক সংগঠনের পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন বাবুল বাউল।

চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে বললেন নিজের সংগীত সাধনার কথা। বললেন, গানের একটা ছবি আছে। ওই ছবিটা যদি চোখে না ভাসে তাহলে গান গাওয়া যায় না।

কুমিল্লায় একটি বাউল সংগীত একাডেমি প্রতিষ্ঠার দাবি বাবুল বাউলের। কুমিল্লার বিশিষ্ট মলয়া সংগীতের পাশাপাশি শুনিয়েছেন অনাদি সরকার, বিজয় সরকার, বাবা মুসলেম আলী ফকির ও নিজের লেখা ও সুর করা গান।

সিএমজি বাংলা’র ফেসবুক পাতা facebook.com/cmgbangla এবং ইউটিউব লিঙ্ক youtube.com/cmgbangla তে গিয়েও আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানাতে পারেন আপনার মূল্যায়ন।

 

পরবর্তী অনুষ্ঠানে আমরা বাংলাদেশ-চীনের সংস্কৃতিক অঙ্গনের আরো কিছু খবর এবং গুণিজনের অন্তরঙ্গ আলাপন নিয়ে হাজির হবো আপনাদের সামনে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন।

 

অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও সাক্ষাৎকার গ্রহণ: মাহমুদ হাশিম

প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া।

অডিও সম্পাদনা: তানজিদ বসুনিয়া।