মানুষের স্বার্থ ও কল্যাণই প্রাধান্য পাবে সবার আগে
2022-10-28 20:58:29

সাজিদ রাজু, চীন আন্তর্জাতিক বেতার: মানুষের স্বার্থ ও কল্যাণই প্রাধান্য পাবে সবার আগে, এই মূলমন্ত্রই প্রতিধ্বনিত হয়েছে চীনের ক্ষমতাসীন দল সিপিসি’র ২০তম জাতীয় কংগ্রেসে। আলোচনা ও পরিকল্পনায় প্রাধান্য পেয়েছে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও মানুষের উপার্জন বাড়ানোর মতো বিষয়। প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের সামনে এগিয়ে যাওয়ার বিদ্যমান বাধা দূর করে একটি বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণে সিপিসি’র ২০তম জাতীয় কংগ্রেসে নেওয়া নীতিগত পদক্ষেপ ভূমিকা পালন করবে বলে মত প্রকাশ করা হয়েছে এক প্রতিবেদনে। 

 

সদ্য শেষ হওয়া চীনের ক্ষমতাসীন দল চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টি সিপিসি’র ২০তম জাতীয় কংগ্রেসে ঘুরে ফিরেই আসে মানুষের কল্যাণ ও দেশের সমৃদ্ধির কথা। 

মানুষের উপার্জন বাড়ানো ও কর্মসংস্থান তৈরিকেই পরিবের্তনের প্রধান হাতিয়ার বানাতে চায় চীন সরকার। আর এর মাধ্যমেই সমাজের একটি টেকসই উন্নয়নের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে ক্ষমতাসীন দল সিপিসি। তাই সাধারণ মানুষের সার্বিক মঙ্গল ও সমাজে স্থিতিশীলতা অর্জনের যে পরিকল্পনা তাতেও ঠাঁই পায় এ বিষয়টি। 

  

তাং তেংচিয়ে, সিভিল অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী

"মানুষ কেন্দ্রীক যে মৌলিক দর্শন ও মানুষকে প্রথমে রাখার যে নীতি তাই ২০তম জাতীয় কংগ্রেসের বিবেচ্য বিষয় ছিলো। মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সবার জন্য সমৃদ্ধ সমাজ নির্মাণের বিষয়ে কংগ্রেসে বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন চিন্তা ও পরিকল্পনা জায়গা পেয়েছে। কমরেড সি চিনপিংয়ের নেতৃত্বে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি প্রধান প্রত্যাশাকে লালন করে, মিশনকে গুরুত্ব দেয়। ঐতিহাসিক নানা ঘটনার প্রেক্ষাপটে মানুষের চাহিদার আলোকে চীনের সামাজিক ব্যবস্থার শক্তি ও প্রয়োজনীয়তাই এখানে স্থান পেয়েছে।“

 

কংগ্রেসের অধিবেশন শেষ হওয়ার পর প্রকাশ করা হয় পুরো প্রতিবেদন। প্রতিবেদনে বলা হয়, উন্নয়ন নিশ্চিত করতে যৌথ উদ্যোগের বিকল্প নেই। আর মানুষের জীবন মান উন্নয়নের জন্য জোর দেওয়া হয়েছে কঠোর পরিশ্রমের উপর।  বিশেষ করে কেবল উপার্জন করলেই হবে না বরং উপার্জন বাড়ানো এবং তার উপকার সমাজের সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার কথাও বলা হয়। উৎসাহিত করা হয়েছে বেশি উপার্জনের জন্য বেশি কাজকে। 

 

চও চুই, মানবসম্পদ ও সামাজিক নিরাপত্তা মন্ত্রী, চীন 

“২০তম জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিবেদনে বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে। এখানে সাধারন নীতি ও নির্দেশনাগুলো জানানো হয় এবং কাজের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। দেশের নাগরিক ও কর্মীদের বেতন বাড়ানো, মধ্যবিত্ত শ্রেণীতে মানুষের সংখ্যা বাড়ানো এবং মানুষের জীবন মান বাড়ানোর মতো বিষয়গুলো খুব গুরুত্বসহকারে নেওয়া হয়েছে।“

 

সবার জন্য সমান সুযোগের নিশ্চয়তা বিধানের কথা তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে। বিশেষ করে সমাজের যারা নিম্ন আয়ের মানুষ তাদের জন্য আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা এবং মধ্য-আয়ের মানুষের সংখ্যা বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া হচ্ছে এবারের কংগ্রেসে। 

“উন্নয়নের জন্য মূলত দ্রুত ও সহজে চাকরি হওয়ার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির জন্য ভালো মানের কর্মসংস্থান জরুরি। দ্বিতীয়ত আমাদের মানব সম্পদ উন্নয়নে আরো বিনিয়োগ করতে হবে। মানব সম্পদের পুরোটার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তৃতীয়ত, কর্মসংস্থানে টেকসই পরিবেশ ও এর পরিধি বাড়ানো এবং বৃহৎ পরিসরে অর্থনীতির উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। সবশেষ বলবো যে, চাকরির বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে সহযোগিতার মাত্রা আরো বাড়ানো এবং মূদ্রানীতির সুষ্ঠু বাস্তবায়ন খুব জরুরি।“

 

প্রতিবেদন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে কর্মসংস্থান সৃষ্টির উপর। এ জন্য সিপিসি আরো বেশি জোর দেবে এবং নীতিগত সহযোগিতা নিশ্চিত করবে। বিশেষ করে দ্রুত কর্মসংস্থানের নীতি, জনসেবা খাতকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগের কথা বলা হয় প্রতিবেদনে। সমাজের যারা প্রান্তিক অবস্থানে আছে, কাজের সুযোগ পাচ্ছে না তাদের মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর বিষয়টিও গুরুত্ব দেওয়া হয় কংগ্রেসের ওই প্রতিবেদনে। 

প্রতিবেদনে আরো বল হয়, সিপিসির ২০তম জাতীয় কংগ্রেসে নেওয়া পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করলে সমাজের অন্যায্য বাধা এবং বৈষম্য দূর করতে ভূমিকা পালন করবে।