সংবাদ পর্যালোচনা: বিশ্বের সঙ্গে পরিচিত হলেন সিপিসির নতুন নেতৃবৃন্দ।
2022-10-28 19:42:45

গত রোববার দুপুর ১২টায় চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) বিংশ কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরোর স্থায়ী সদস্যরা দেশ বিদেশের সাংবাদিকদের সামনে হাজির হয়েছেন। একই সঙ্গে এদিন সিপিসি’র বিংশ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন আয়োজন করা হয়। অধিবেশনে সি চিন পিংকে সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক, দেশের কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচন করা হয়। এসময় সিপিসির সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং তাঁর ভাষণে নতুন যুগে নতুন অগ্রযাত্রায় সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কর্তব্য তুলে ধরেছেন। মানুষের সুন্দরতম জীবনের প্রত্যাশা পূরণ এবং নিজের উন্নয়নে বিশ্বের জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন সি চিন পিং।

 

 

রোববার দুপুরে বিংশ কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরোর স্থায়ী সদস্যরা বিশ্বের সঙ্গে পরিচিত হন। সেদিন বিংশ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরোর স্থায়ী সদস্যদের নির্বাচন করা হয়। তাঁরা হলেন, সি চিন পিং, লি ছিয়াং, চাও ল্য চ্যি, ওয়াং হু নিং, ছাই ছি, তিং শুয়েই সিয়াং এবং লি সি।

সিপিসি’র বিংশতম জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা বিভিন্ন মহল থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের সি চিন পিং বলেন, চীন বরাবরই মানব জাতির অভিন্ন মূল্যবোধ সম্প্রসারণ করে মানব জাতির অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট কমিউনিস্ট গঠন করে যাবে। চীনের উন্মুক্তকরণ আরও জোরদার হবে এবং নিজের উন্নয়নের মাধ্যমে বিশ্বের জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি করবে।  

 

চীনের উন্নয়ন বিশ্বের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য এবং বিশ্ব উন্নয়ন চীনের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য। অর্থনৈতিক খাতে চীনে বিশাল বাজার রয়েছে এবং সম্পূর্ণ শিল্প ব্যবস্থা, শিল্প চেইন এবং আধুনিকতর কাঠামোগত ব্যবস্থা রয়েছে। গত জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত চীনে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৮৯,২৭৪ কোটি ইউয়ান, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬.৪ শতাংশ।

সদ্য সমাপ্ত সিপিসি’র বিংশ জাতীয় কংগ্রেস নতুন যুগে নতুন অগ্রযাত্রায় দ্বিতীয় শতবার্ষের লক্ষ্য বাস্তবায়নে দিকনির্দেশনা দিয়েছে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক সমাজকে সিপিসি’র রাষ্ট্র পরিচালনা সম্পর্কে জানার সুযোগও দিয়েছে। কংগ্রেসের মধ্যে ‘চীনের বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের নজর কেড়েছে। কংগ্রেসে চীনের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন আধুনিকায়নের বৈশিষ্ট্য ও মূল বিষয় জোরালো হয়েছে এবং সার্বিকভাবে সমাজতান্ত্রিক আধুনিক দেশ গঠন এবং চীনা জাতির সার্বিক পুনরুত্থানের বিষয়ে কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে।

 

দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের সি চিন পিং বলেছেন, চীনের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন আধুনিকায়ন সিপিসি ও চীনা জনগণের দীর্ঘকালীন অনুশীলন ও অনুসন্ধানের সাফল্য। ১৪০ কোটি চীনা জনগণের আধুনিকায়নে প্রবেশের পাশাপাশি সকলের অভিন্ন সমৃদ্ধি, বৈষয়িক ও আধ্যাত্মিক সভ্যতা বাস্তবায়নকে বুঝায়। সেসঙ্গে প্রকৃতি ও মানুষের সম্প্রীতিময় সহাবস্থান এবং শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়াকে নির্দেশ করে। পশ্চিমা দেশগুলোর আধুনিকায়নে পুঁজি কেন্দ্রে দুটি পোলারাইজেশন এবং বাইরে বিস্তারের লক্ষণ দেখা দেয়। চীনের এ আধুনিকায়ন মানবজাতির জন্য নতুন পথ।

 

এর আগে, বিংশ জাতীয় কংগ্রেসের কর্ম-রিপোর্টে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনের সকল দিক কাভার করে, আগামী পাঁচ বছরের কর্ম-পরিকল্পনার একটি সামগ্রিক বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতের জন্য এতে  বিস্তারিতভাবে সিপিসির পরিকল্পনা ও দৃষ্টিভঙ্গি পেশ করা হয়। ওই কর্ম-রিপোর্ট থেকে দেখা যায় যে, সংস্কার শুধু সিপিসি’র সঙ্গে জড়িত তা নয়, বরং অর্থনীতি, সমাজ, পররাষ্ট্রনীতি এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার সঙ্গে সম্পর্কিত।

 

বাস্তবতা থেকে প্রমাণিত যে, চীনের বর্তমান ও ভবিষ্যত সিপিসি’র নেতৃত্ব ও চীনা জনগণের সংগ্রামের ওপর নির্ভর করছে। সিসিপি বিশ্বের বৃহত্তম ক্ষমতাসীন দল। সিপিসি’র প্রতিষ্ঠার পর থেকে, পরিচালনা ও সিদ্ধান্তগ্রহণের পদ্ধতির পাশাপাশি পার্টিসদস্যদের দক্ষতা এবং পেশাদারিত্ব বিকাশ লাভ করেছে ও করছে। পার্টির মধ্যে বিদ্যমান দুর্নীতি দূর করার ওপর অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় সিপিসি। কারণ, দুর্নীতি ‘ক্যান্সারস্বরূপ’। একই সময়ে, চীন সার্বিক প্রক্রিয়ায় জনগণের গণতন্ত্র বাস্তবায়ন করছে এবং নির্বাচন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে জনগণের অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা দিয়ে চলেছে।