‘নতুন যাত্রার পথ-নির্দেশক সি চিন পিং’
2022-10-26 18:18:26

মঙ্গলবার চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা- সিনহুয়া ২০  হাজারেরও বেশি অক্ষরের একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেছে, এর শিরোনাম ‘নতুন যাত্রার পথ-নির্দেশক সি চিন পিং’। এতে চীনের সর্বোচ্চ নেতা সি চিন পিং-এর রাজনীতি ও জীবনের বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়েছে এবং তাঁর দেশ প্রশাসনের চিন্তাধারা ও তাত্ত্বিক ভিত্তি ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

 (ক্যাপশন: ২০২২ সালের ২৩ অক্টোবর, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির বিংশ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর সি চিন পিং এবং সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরোর স্থায়ী সদস্যরা বেইজিংয়ে গণ-মহাভবনে দেশ বিদেশের সাংবাদিকের সঙ্গে দেখা করেন। )

সম্প্রতি আয়োজিত সিপিসি’র বিংশ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে সি চিন পিংকে সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত করা হয়। রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা ক্ষমতাসীন পার্টির সর্বোচ্চ নেতার কাহিনী নিয়ে প্রবন্ধ প্রকাশ করে থাকে।

এতে ব্যাপক ঘটনা ও বিস্তারিত তথ্যের মাধ্যমে সি চিন পিংয়ের বড় হওয়া, পারিবারিক শিক্ষা, কর্মের অভিজ্ঞতা এবং রাজনীতি জীবনসহ বিভিন্ন বিষয় বিস্তারিত জানানো হয়েছে।

 

(ক্যাপশন: ১৯৮৯ সালে তত্কালীন ফু চিয়ান প্রদেশের নিং দ্য-এর সিপিসি সম্পাদক হিসেবে সি চিন পিং সহশ্রাধিক কর্মকর্তাকে নেতৃত্ব দিয়ে জলসেচ প্রকল্পে অংশ নেন।)

 

প্রবন্ধে বলা হয়, নয়া চীনে জন্মগ্রহণ করা সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে, সি চিন পিং প্রজাতন্ত্রী চীন ‘দাঁড়িয়ে থাকায়’ গর্ব বোধ করেন এবং আবেগপূর্ণভাবে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণে অংশ নিয়েছেন, চীনের দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের জন্য দিক নির্দেশনা দিয়েছেন, চীনের বিভিন্ন জাতির জনগণকে শক্তিশালী হওয়ায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। জনগণের মধ্যে তাঁর ব্যাপক জনপ্রিয়তা আছে, বিদেশের গবেষক এবং বিভিন্ন দেশের নেতারাও তাঁকে স্বীকৃতি দেন এবং তাঁর প্রশংসা করেন।

ক্যাপশন: ২০২২ সালের ১৩ জুলাই, সি চিন পিং সিন চিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের উরুমুচি শহরের কু ইউয়ান সিয়াং কমিউনিটি পরিদর্শন করেন।

প্রবন্ধে বলা হয়েছে, দশ বছর আগের কথা। সেসময় সি চিন পিং শপথ গ্রহণের আগেই চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক গোষ্ঠীতে পরিণত হয়। তবে দেশে দুর্নীতি, পরিবেশ দূষণ এবং ধনী-দরিদ্রের ব্যবধানসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ছিল। তিনি কঠোরভাবে সিপিসি পরিচালনার নীতি-কৌশল চালু করেন, যা সিপিসি পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তিনি বলেন, চীনের গণতন্ত্র মানে ‘সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ায় জন-গণতন্ত্র’, যা জনগণের চাহিদা মেটানো এবং সমস্যা সমাধানের জন্য। ভোটের সময় জেগে ওঠা, আর ভোটের পর ঘুমিয়ে পড়ার গণতন্ত্র নয়। সংবিধানের সামনে শপথগ্রহণের প্রথম চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর চালু করা ‘আইনানুগ দেশ প্রশাসন’ একটি গভীর বিপ্লব। উন্নয়নকে কেন্দ্রীয় অবস্থানে রাখার চেতনার উদ্ভাবক তিনি, সমন্বয়, সবুজ, উন্মুক্ত এবং যৌথভাবে ভাগাভাগি ও উন্নয়নের নতুন চিন্তাধারা উত্থাপন করেছেন তিনি, সবার যৌথভাবে ধনী হওয়া জোরদার করেছেন তিনি।

 

প্রবন্ধে বিপুল তথ্যে দেশ বিদেশের ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সি চিন পিং-এর সাহসী বর্ণনা করা হয়েছে। প্রবন্ধে বলা হয়, কঠিনতা দেখে তিনি কখনোই সরে যান না, আদর্শকে তিনি কখনোই ছেড়ে দেন না।

ক্যাপশন: ২০২০ সালের ১০ মার্চ, সি চিন পিং হু পেই প্রদেশের উ হান শহরে করোনা ভাইরাসের মহামারি প্রতিরোধ কাজ পরিদর্শন করেন। তুং হু সিন ছেং কমিউনিটি পরিদর্শনের সময় তিনি বাসায় কোয়ারেন্টিনে থাকা মানুষকে হাত নাড়িয়ে শুভেচ্ছা জানান।

প্রবন্ধে তাঁর বিভিন্ন দেশ সফর করা, আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নেওয়া এবং বৈশ্বিক কিছু সমস্যা, উদ্যোগ ও ব্যবস্থা জোরদার করার কথা স্মরণ করেন। এতে বলা হয়, সি চিন পিং মানবসভ্যতার বৈচিত্র্যের প্রশংসা করেন, তাঁর উত্থাপিত মানবজাতির অভিন্ন ভাগ্যের কমিউনিটির চেতনা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সনদ এবং সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ দলিলেও যোগ করা হয়েছে।

ক্যাপশন: ২০১৩ সালের ৩ জুন, কোস্টারিকা সফরকালে সি চিন পিং এবং স্ত্রী ফেং লি ইউয়ান স্থানীয় কৃষকের বাসায় যান ও তাঁদের সঙ্গে আন্তরিক কথাবার্তা বলেন।

প্রবন্ধে বলা হয়, সি চিন পিং-এর নেতৃত্বে চীনের বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন মানবসমাজ উন্নয়নের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সহায়ক। সি চিন পিং-এর পরিকল্পিত উন্নয়ন কৌশল, ২০৩৫ সালের মধ্যে চীন, এই বিশ্বের বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ হবে এবং মোটামুটি আধুনিকায় বাস্তবায়ন করবে। অর্থাত্, মানে মানব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শত কোটিরও বেশি মানুষের দেশ একসাথে আধুনিক জগতে প্রবেশ করবে।

চীন নিজের বিশেষ পদ্ধতিতে বিশ্বের আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ায় বিরাট অগ্রগতি অর্জন করছে, যা মানবজাতির উন্নয়নে সিপিসি’র বৃহত্তম অবদান।

ক্যাপশন: ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর, চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের বেইজিং শীর্ষসম্মেলনের গোল টেবিল অধিবেশন বেইজিংয়ের গণ-মহাভবনে আয়োজন করা হয়। সি চিন পিং এবং ফোরামের যৌথ চেয়ারম্যান দেশ দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট মাতামেলা সিরিল রামাফোসা পৃথক পৃথকভাবে অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

প্রবন্ধে বলা হয়, চীনের বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন দিয়ে চীনা জাতির মহান পুনরুত্থান জোরদার করা, মানবজাতির অভিন্ন ভাগ্যের কমিউনিটির চেতনা দিয়ে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি, ব্যাপক নিরাপত্তা, যৌথ সমৃদ্ধি, উন্মুক্ত সহনশীলতা, পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর বিশ্ব গড়ে তোলার যাত্রা শুরু হয়েছে। প্রবন্ধটি চীনের প্রাচীনকালের বিখ্যাত বক্তব্য দিয়ে শেষ হয়েছে, যার অর্থ: পথ যদিও লম্বা ও ঝুঁকিপূর্ণ, তবুও চেষ্টা করলে নিশ্চয় গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে।

(শুয়েই/তৌহিদ)