অক্টোবর ২৫: চীনের শুল্ক বিভাগের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চীনে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩১.১১ ট্রিলিয়ন ইউয়ান, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯.৯ শতাংশ বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধারাবাহিক বাণিজ্য স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ব্যবস্থার কারণে চীনে বাণিজ্যের স্থিতিশীল বৃদ্ধি হয়েছে।
একই সময়ে চীনে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৭.৬৭ ট্রিলিয়ন ইউয়ান, যা গত বছরের একই সময়র তুলনায় ১৩.৮ শতাংশ বেশি। আমদানির পরিমাণ ছিল ১৩.৪৪ ট্রিলিয়ন ইউয়ান, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫.২ শতাংশ বেশি।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গবেষণালয়ের অর্থনীতি সহযোগিতা গবেষণা কেন্দ্রের মহাপরিচালক চাং চিয়ান পিং বলেছেন,‘গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চীনের বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধি বর্তমানে চীনের সমস্ত অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানে সবচেয়ে আলোকিত সংখ্যার অন্যতম। এ বছরের শুরুতে চীনের বাণিজ্য স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পদক্ষেপ এবং বছরের মাঝা-মাঝিতে বাণিজ্য ও বৈদেশিক বিনিয়োগে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ব্যবস্থা জোরদার এবং বৈদেশিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের যৌথ প্রচেষ্টার ফলে চলতি বছর বৈদেশিক বাণিজ্যের তুলনামূলক সাফল্য অর্জিত হয়েছে।’
গত সেপ্টেম্বরে চীনে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩.৮১ ট্রিলিয়ন ইউয়ান, যার গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮.৩ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২.১৯ ট্রিলিয়ন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০.৭ শতাংশ বেশি। আমদানির পরিমাণ ছিল ১.৬২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫.২ শতাংশ বেশি।
চাং চিয়ান পিং বলেছেন, চলতি বছর করোনা পরিস্থিতি উঠানামার সত্ত্বেও চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যে ব্যাপক বলিষ্ঠতা দেখা দিয়েছে।
গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আসিয়ান চীনের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারের স্থান ধরে রেখেছে। পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, চীন ও আসিয়ানের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৪.৭ ট্রিলিয়ন ইউয়ান, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫.২ শতাংশ বেশি। এ পরিমাণ চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যের পরিমাণের ১৫.১ শতাংশ।
চাং চিয়ান পিং বলেন,‘এক অঞ্চল, এক পথ’ কাঠামোতে চীন ও আসিয়ান ব্যবস্থামূলক সহযোগিতা চালিয়েছে, যার ফলে বাণিজ্যের কার্যকারিতা আরও উন্নত হয়েছে। আরসিইপি কার্যকর হওয়ার পর চীন ও আসিয়ান দুটি কেন্দ্রীয় বাজারে পরিণত হয়েছে। ভবিষ্যতে আসিয়ান চীনের বৃহত্তম অংশীদারের অবস্থান অব্যাহত থাকবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। দু’পক্ষের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ গত বছরে ৯০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের কাছাকাছিতে পৌঁছেছে। পরবর্তী লক্ষ্য ১ ট্রিলিয়ন ইউয়ান ডলারে বাস্তবায়ন করা।’
উল্লেখ্য যে, গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চীনে রপ্তানি সরঞ্জামের মূল্য ছিল ১০.০৪ ট্রিলিয়ন ইউয়ান, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। এটা মোট রপ্তানির ৫৬.৮ শতাংশ। এর মধ্যে গাড়ি রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার ৯শ ৮৪ কোটি ইউয়ান, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬৭.১ শতাংশ বেশি।
চাং চিয়ান পিং মনে করেন, এটি চীনের গাড়ি শিল্প, বিশেষ করে নতুন জ্বালানি-চালিত গাড়ি শিল্পের উন্নয়নের প্রতিফলন।
তিনি বলেন,‘গাড়ি শিল্পের উন্নয়ন হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্রমশ উদ্ভাবন এবং নতুন জ্বালানি-চালিত গাড়ি উন্নয়নে দেশের নানা নীতিগত ব্যবস্থার সমর্থন ও উত্সাহ হচ্ছে এ উন্নয়নের কারণ। এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, রপ্তানি খাতে আমাদের গাড়ি, বিশেষ করে নতুন জ্বালানি গাড়ির রপ্তানির পরিমাণ ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি আমাদের গাড়ি শিল্পের উন্নয়নের শীর্ষ অবস্থা। তাছাড়া, চলতি বছর এ খাতে চীন গাড়ি উৎপাদনের বৃহত্তম দেশ জার্মানিকে ছাড়িয়েছে এবং গাড়ির রপ্তানি খাতে জাপানের পর রয়েছে। এসব প্রমাণ করে যে, গাড়ি শিল্পে চীন বাস্তব অগ্রগতি অর্জন করেছে।’
চাং চিয়ান পিং আরও বলেন, চলতি বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে বিশ্ব বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। বৈদেশিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত বাজারের পরিবর্তনের ওপর নজর রেখে বিভিন্ন সূচক নিয়ে সময়মত গবেষণা ও বিবেচনা করা। (রুবি/এনাম/শিশির)