চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন
2022-10-24 15:42:13

অক্টোবর ২৪: সম্প্রতি বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হয় চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র কুড়িতম জাতীয় কংগ্রেস। এতে উপস্থাপিত কর্ম-প্রতিবেদনে, সিপিসি’র বর্তমান ও ভবিষ্যতের কেন্দ্রীয় কাজ সম্পর্কে আলোকপাত করেন চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। কেন্দ্রীয় কাজ হবে: দেশের বিভিন্ন জাতির জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে ও নেতৃত্ব দিয়ে সর্বাত্মক উপায়ে একটি শক্তিশালী আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়ে তোলা ও দ্বিতীয় শতবর্ষের লক্ষ্য অর্জন করা; চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন প্রক্রিয়া দিয়ে চীনা জাতির মহান পুনরুজ্জীবনের চীনা স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা।

প্রতিবেদনে সি চিন পিং চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সার্বিকভাবে চীনা জাতির মহান পুনরুজ্জীবন বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার কথা জোর দিয়ে বলেছেন। বিভিন্ন দেশ নিজ নিজ ইতিহাস ও অবস্থা অনুযায়ী আধুনিকায়ন বাস্তবায়নের বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়। চীনের যে আধুনিকায়ন বাস্তবায়ন করছে তাতে সাধারণ আন্তর্জাতিক আইন ও চীনা বৈশিষ্ট্যের প্রভাব স্পষ্ট। অনুশীলন থেকে সম্পূর্ণরূপে প্রমাণিত হয়েছে যে, চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন চীনের আসল অবস্থার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ, চীনা জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলিত, এবং যুগ উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার উপযোগী। সেজন্য অবিচলভাবে এ পথে চলতে হবে।

সিপিসি’র ঊনবিংশ জাতীয় কংগ্রেস দুই ধাপে দ্বিতীয় শতবর্ষের লক্ষ্য অর্জনের প্রস্তাব করেছে। এবারের কুড়িতম জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিবেদনে এ লক্ষ্যের জন্য সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নির্ধারণ করা হয়। প্রথম ধাপ ২০২০ থেকে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত। এ সময়কালে মৌলিকভাবে সমাজতান্ত্রিক আধুনিকায়ন বাস্তবায়ন করা হবে। অর্থনৈতিক শক্তি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শক্তি এবং বহুমুখী জাতীয় শক্তি ব্যাপকভাবে উন্নত করা হবে। মাথাপিছু জিডিপি নতুন পর্যায়ে উঠে যাবে। তখন দেশ মধ্য-উন্নত দেশের পর্যায়ে পৌঁছাবে। উচ্চ-স্তরের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত স্বনির্ভরতা ও আত্মনির্ভরশীলতা অর্জিত হবে এবং উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে দেশ উঠে যাবে বিশ্বের শীর্ষে। আধুনিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। নতুন উন্নয়নের পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত হবে। মৌলিকভাবে নতুন শিল্পায়ন, তথ্যায়ন, নগরায়ন এবং কৃষি আধুনিকায়ন বাস্তবায়িত হবে।

২০৩৫ সাল নাগাদ চীনে ব্যাপকভাবে সবুজ উত্পাদন ও সবুজ জীবনধারার গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে। তখন জনগণের জীবনমান আরও উন্নত হবে। জনগণ আরও ভালো শিক্ষা পাবে, স্থিতিশীল চাকরি পাবে, সন্তোষজনক আয়বৃদ্ধি ঘটবে, আরও নির্ভরযোগ্য সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থা গড়ে উঠবে, আরও উচ্চস্তরের চিকিত্সা পরিষেবা পাবে, আরও আরামদায়ক জীবন পাবে, এবং আরও সমৃদ্ধ আধ্যাত্মিক জীবন পাবে। তখন চীনের প্রাকৃতিক সভ্যতাব্যবস্থা আরো সম্পূর্ণ হবে। নীল আকাশ আর সাদা মেঘ, স্বচ্ছ পানি আর সবুজ পাহাড় চীনাদের জীবনের অংশ হয়ে যাবে।

দ্বিতীয় ধাপ ২০৩৫ সাল থেকে চলতি শব্দাতীর মাঝামাঝি পর্যন্ত বিস্তৃত। এ সময় চীন সমৃদ্ধ, শক্তিশালী, গণতান্ত্রিক, সাংস্কৃতিকভাবে উন্নত হবে। একটি সুন্দর মহান আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে চীন। নতুন যুগে উচ্চ স্তরের উন্নয়ন হলো সার্বিকভাবে সমাজতান্ত্রিক আধুনিক দেশ গড়ে তোলার মূল শর্ত। একটি দৃঢ় উপাদান ও প্রযুক্তিগত ভিত্তি ব্যতীত, একটি শক্তিশালী আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়ে তোলা অসম্ভব। জনগণের বর্তমান স্বার্থ সুরক্ষার পাশাপাশি স্থায়ী অর্থনীতির উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে হবে।

বস্তুত, পরিশ্রমের লক্ষ্য নির্দিষ্ট করার পাশাপাশি উপলব্ধি করতে হবে যে, চীন উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় কৌশলগত সুযোগের পাশাশাপাশি ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে; অনিশ্চয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের বড় পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। সমাজতান্ত্রিক আধুনিক দেশ হিসেবে চীনকে গড়ে তুলতে হলে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। (ছাই/আলিম)