অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে চীনাদের প্রতি প্রেসিডেন্ট সি’র আহ্বান
2022-10-21 20:05:46

সিপিসি’র বিংশতম জাতীয় কংগ্রেস চলতি বছরের পার্টি ও রাষ্ট্রের রাজনৈতিক জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট। বছরের শুরুতে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং নির্দলীয় ব্যক্তিগণের সঙ্গে বসন্ত উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত এক চা চক্রে বলেছেন, কংগ্রেসের আয়োজনকে কেন্দ্র করে কংগ্রেসের চেতনায় সব কাজ চালিয়ে যেতে হবে।

 

গত ১৬ অক্টোবর জাতীয় কংগ্রেস বেইজিংয়ে শুরু হয়েছে। মোট ২৩০০ জনেরও বেশি প্রতিনিধির উপস্থিতিতে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ‘চীনের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সমাজতন্ত্রের পতাকা উঁচুতে তুলে ধরে সার্বিক সমাজতান্ত্রিক আধুনিক দেশ গঠনের জন্য সংহতি ও পরিশ্রম চালানো’ শীর্ষক কর্ম-প্রতিবেদন পেশ করেন।

 

কর্ম-প্রতিবেদনে সি চিন পিং বলেন, “২০তম জাতীয় কংগ্রেস পুরো পার্টি ও নিখিল চীনের নানা জাতির লোকজন সার্বিক সমাজতান্ত্রিক আধুনিক দেশের নতুন যাত্রা উন্মোচন এবং দ্বিতীয় শতবার্ষিকী লক্ষ্য বাস্তবায়নের সন্ধিক্ষণে অনুষ্ঠিত গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন। নতুন পর্যায়ে নতুন যাত্রার নকশা তৈরি করা হয়েছে এ কর্ম-প্রতিবেদনে।

নতুন যুগের মহান অগ্রগতিতে আমরা কি উপকৃত হয়েছি? চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং গত ৫ বছরের কার্যক্রম এবং নতুন যুগে অর্জিত ব্যাপক অগ্রগতি ও বিরল অভিজ্ঞতার সারসংক্ষেপ করেছেন।

 

সিপিসি’র ঊনবিংশ জাতীয় কংগ্রেসের পর থেকে ৫ বছর ছিল অসাধারণ পাঁচ বছর। সে সময়কালে দীর্ঘকাল ধরেও সমাধান হয়নি-এমন সমস্যা সমাধান করেছে চীন। অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করেছে। সে সব অগ্রগতি পার্টি ও জনগণ যৌথ পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জন করেছে বলে উল্লেখ করেন প্রেসিডেন্ট সি।

 

নতুন যুগে অর্জিত অগ্রগতি সারসংক্ষেপে গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে কেন? এ প্রসঙ্গে সি চিন পিং কর্ম-প্রতিবেদনে বলেছেন, চীনা জনগণ সামনে এগিয়ে যেতে আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, পরিশ্রম চালাতে আরও উত্সাহিত এবং তাদের বিজয়ের আকাঙ্ক্ষা আরও দৃঢ়। দাঁড়িয়ে উঠতে, সমৃদ্ধ এবং শক্তিশালী হতে সিপিসির ওপর আস্থাশীল চীনা জাতি। 

 

কর্ম-প্রতিবেদনে সি চিন পিং বলেছেন, এখন থেকে সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কর্তব্য হচ্ছে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সার্বিক সমাজতান্ত্রিক আধুনিক দেশ গঠন, দ্বিতীয় শতবার্ষিকী লক্ষ্য বাস্তবায়ন এবং চীনা শৈলীর আধুনিকায়নের মাধ্যমে সার্বিকভাবে চীনা জাতির পুনরুত্থান বাস্তবায়ন করা।

 

এখন প্রশ্ন হল যে চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন আধুনিকায়ন আবার কী? অন্য আধুনিক দেশের সঙ্গে তার পার্থক্য কী? চীনের আধুনিক দেশে পরিণত হওয়ার সঙ্গে অন্য দেশের কী সম্পর্ক রয়েছে? এসব প্রশ্নের জবাবে বলা যায়, চীনের আধুনিকায়নের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সিপিসি’র বিংশতম জাতীয় কংগ্রেসে সি চিন পিং বলেছেন, চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন আধুনিকায়ন হল সিপিসি’র নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক আধুনিকায়ন। তাতে থাকবে বিভিন্ন দেশের আধুনিকায়নের বিভিন্ন রূপ। আরও থাকবে চীনের সামাজিক ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য। এটি সকল জনগণের অভিন্ন সমৃদ্ধি, বৈষয়িক সভ্যতা ও সাংস্কৃতিক সভ্যতার সম্প্রীতি, মানব জাতি ও প্রকৃতির সম্প্রীতি এবং শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথে অবিচল থাকার আধুনিকায়ন।

 

চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন আধুনিকায়নের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অভিন্ন সমৃদ্ধি। চীনাদের মাঝে একটি কথা প্রচলিত আছে: কাউকে বাদ দেওয়া যায় না। পৃথিবী একটি পরিবার, সবার জন্য একসঙ্গে সুন্দর জীবন কাটানোর সুবিধা সৃষ্টি করা চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন আধুনিকায়নের গুরুত্বপূর্ণ দিক।

 

চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন আধুনিকায়নের মানে আরও উচ্চ মানের উন্মুক্তকরণ বাস্তবায়ন এবং বিশ্বের সঙ্গে চীনা বাজার শেয়ার করবে চীন। ফলে বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে আরও চালিকাশক্তি যোগাবে চীন।

 

কর্ম-প্রতিবেদনে রয়েছে ১৫টি অধ্যায়। প্রথম তিন অধ্যায়ের বিষয়বস্তু হচ্ছে অগ্রগতি ও অভিজ্ঞতা, নির্দেশনা, দায়িত্ব। বাকি অধ্যায়গুলোতে অর্থনীতি থেকে পার্টি গঠনসহ প্রায় সব খাতের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

 

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলা,  আইনানুগ রাষ্ট্র পরিচালনা করা ও দেশের নিরাপত্তা রক্ষাসহ নানা বিষয়ে জোরালো হয়েছে কর্ম-প্রতিবেদনে।

 

সংহতি শক্তি যোগায়। সংহতি জয় এনে দেয়। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং’র উত্থাপিত কর্ম-প্রতিবেদনের চেতনায় সকল চীনাকে সার্বিক সমাজতান্ত্রিক আধুনিক দেশ গঠন এবং চীন জাতির মহান পুনরুত্থানের জন্য যৌথভাবে পরিশ্রম চালাতে হবে।