অক্টোবর ২০: চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র কুড়িতম জাতীয় কংগ্রেসে পেশ করা প্রতিবেদনে বহুবার ‘উন্মুক্তকরণ’ টার্মটির উল্লেখ্য করা হয়েছে। গতকাল (বুধবার) বেইজিংয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বিভিন্ন প্রদেশ ও অঞ্চল থেকে আসা সিপিসি জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা বৃহত্তর প্রচেষ্টার মাধ্যমে পরিষেবা খাতের উন্মুক্তকরণ বাড়ানোর মাধ্যমে দেশের নতুন উন্নয়ন কাঠামো গড়ে তোলার কথা বলেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিগত ১০ বছরে চীন আরও ইতিবাচক ও সক্রিয় উন্মুক্তকরণের কৌশল বাস্তবায়ন করেছে। চীনের প্রস্তাবিত ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ একটি জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক গণপণ্য ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে। চীন ১৪০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিণত হয়েছে। পণ্যবাণিজ্যের দিক দিয়ে বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে চীন। বিদেশী অর্থ ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রেও চীনের অবস্থান বিশ্বে প্রথম। চীন উন্মুক্তকরণের আরও বিস্তৃত, প্রশস্ত ও গভীর কাঠামো গড়ে তুলেছে। এ সম্পর্কে হাইনান প্রদেশের সিপিসি’র স্ট্যাডিং কমিটির সদস্য ও ভাইস গর্ভনর শেন তান ইয়াং বলেন,
“গত তিন বছরে হাইনান প্রদেশ বিদেশী অর্থ ব্যবহার ও বৈদেশিক বাণিজ্যের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত তিন বছরে বিদেশী মূলধন ব্যবহারের ক্ষেত্রে গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৮০ শতাংশ। বৈদেশিক বাণিজ্যে গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৫০ শতাংশ।”
২০২০ সালের পয়লা জুন ‘হাইনান অবাধ বাণিজ্যিক বন্দর নির্মাণের সামগ্রিক পরিকল্পনা’ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়। বর্তমানে হাইনানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন অবস্থা গড়ে উঠেঝে। হাইনান অবাধ বন্দর সুষ্ঠুভাবে নির্মিত হচ্ছে।
এদিকে কুয়াংসি চুয়াং জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের নিজস্ব উন্মুক্তকরণের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বিগত ১০ বছরে কুয়াংসি অব্যাহতভাবে চীন-আসিয়ান উন্মুক্ত সহযোগিতাকে উন্নত করে আসছে। স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটির সিপিসি’র স্ট্যাডিং কমিটি’র সদস্য ও প্রচার বিভাগের পরিচালক সুন তা কুয়াং বলেন,
“এ পর্যন্ত চীন-আসিয়ান মেলা ও চীন-আসিয়ান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন সফলভাবে আয়োজিত হয়েছে মোট ১৯ বার। আসিয়ান টানা ২২ বছর হলো কুয়াংসি’র বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। কুয়াংসি উচ্চ মানের পশ্চিম চীনের স্থল ও সমুদ্র নতুন করিডোর নির্মাণ করার চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যেই ৮০০ কিলোমিটারেরও বেশি নতুন উচ্চ-গতির রেলপথ ও ৫ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি হাইওয়ে নির্মিত হয়েছে। বেইবু উপসাগরীয় বন্দর ৩ লাখ টন বহনক্ষমতাসম্পন্ন জাহাজ নেভিগেট করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। বন্দরের বার্ষিক কন্টেইনার থ্রুপুট ৬ মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। নৌ-রেল ইন্টারমোডাল ট্রেনের সংখ্যাও ৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।”
পূর্ব চীনের গুরুত্বপূর্ণ উন্মুক্ত উপকূলীয় প্রদেশ হিসেবে শানতুং আরসিইপি’র সদস্যদেশগুলোর সাথে দৃঢ় শিল্প-সহযোগিতা গড়ে তুলেছে। শিল্প-সহযোগিতা জোরদারের ক্ষেত্রে এর অনন্য অবস্থানগত সুবিধা আছে। এটি উচ্চমানের আরসিইপি বাস্তবায়নের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। শানতুং প্রদেশের সিপিসি’র স্ট্যাডিং কমিটির সদস্য ও প্রচার বিভাগের পরিচালক বাই ইউ কাং বলেন, প্রদেশটি আরেক ধাপে নিজের অবস্থানগত সুবিধা কাজে লাগিয়ে, বৃহত্তর প্রচেষ্টার মাধ্যমে, দেশের নতুন উন্নয়ন কাঠামোকে আরও বিস্তৃত করতে ভূমিকা রেখে যাবে। (ছাই/আলিম/স্বর্ণা)