দুর্বল ও দুর্যোগকবলিত মানুষের সুখী জীবন নিশ্চিত করা চীনা জাতির প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের সুরীতি। দুর্যোগকবিলত মানুষের সুখী জীবন নিশ্চিত করতে চীন সরকার ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টি দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেসের পর থেকে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং দুর্যোগকবলিত মানুষের ওপর বিশেষ দৃষ্টি রেখেছেন এবং যত্ন নিয়েছেন। তিনি বহু বার তাদের গণজীবিকা উন্নয়নে এবং তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
গত দশ বছরে এসব মানুষের জীবন আরও সুখী ও সুন্দর হয়েছে। একের পর এক নীতি যেন শীতল দিনের উষ্ণ সূর্যালোকের মতো দুর্যোগকবলিত মানুষের মনে সুন্দর জীবনের প্রত্যাশা জ্বালিয়েছে।
আজকের এ অনুষ্ঠানে আমরা বিশেষ করে প্রতিবন্ধীদের সুখী জীবন নিশ্চিতের গল্প শুনবো।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছেন, সার্বিকভাবে সচ্ছল সমাজ গড়ে তোলার পথে কোনো প্রতিবন্ধীকেই বাদ দেওয়া যায় না।
শরতকালের একদিন ছিন পা পবর্তাঞ্চলের গভীরে অবস্থিত সায়ান সি প্রদেশের পাই হ্য জেলার সোং শু গ্রামে ৩৬ বছর বয়সী সোং তোং ইয়াং সকালের নাস্তা করে পানি ও খাবার সঙ্গে নিয়ে ২০০টিরও বেশি ছাগল পাহাড়ে নিয়ে যান। ডান হাত না থাকলেও সোং তোং ইয়াং’র আছে ৭ বছরের পশু পালনের অভিজ্ঞতা। তাই এ কাজের সক্ষমতা রয়েছে তার। ২০১২ সালে কাজ করার সময় আকস্মিক দুর্ঘটনায় ডান হাত হারিয়েছেন তিনি। তাতে তিনি খুব মর্মাহত হয়েছিলেন। কারণ তিনি তার পরিবারের প্রধান উপার্জনকারী। পরে তার জীবন কীভাবে চলবে, তা নিয়ে তিনি খুব চিন্তিত ছিলেন।
শারীরিক প্রতিবন্ধী সোং তোং ইয়াং। আবার তিনি বিশেষ কোন কারিগরি বিদ্যায়ও পারদর্শী ছিলেন না। যার কারণে ২০১৫ সালে তাকে দরিদ্র তালিকাভুক্ত করা হয়। নিজের গ্রামে দরিদ্রদের জন্য নানা সমর্থক নীতি থাকার খবর জেনে সোং তোং ইয়াং ও তার স্ত্রী গ্রামে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। সরকারের দেওয়া ৫০ হাজার সুদ-বিহীন ঋণের মধ্য দিয়ে তিনি ছাগল পালন শুরু করেন। শুরুতে প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতার অভাবে তার ছাগল প্রায়ই মারা যেত। তার অনেক ক্ষতি হত।
ঠিক সে সময় সরকারী প্রশিক্ষণ কোর্স চালু হয়েছে এবং জেলা পর্যায়ের প্রতিবন্ধী অ্যাসোসিয়েশনের অর্থ সাহায্যে তিনি সে দুর্যোগ কাটিয়ে উঠেছেন।
বর্তমানে সোং তোং ইয়াং’র ছাগল খামারের আয়তন ৬০০ বর্গমিটার ছাড়িয়েছে। যাকে জেলা পর্যায়ের দৃষ্টান্ত হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। তার ছাগল খামারের জন্য পার্শ্ববর্তী কৃষকদের মিষ্টি আলুর লতা, ভুট্টার ডালপালা ক্রয় করা হয়। যার ফলে পার্শ্ববর্তী ১০ টিরও বেশি পরিবার দারিদ্রমুক্ত হয়েছে। সোং তোং ইয়াং বলেছেন, গত দশ বছরে সরকারের সমর্থনে আমি দুর্যোগ কাটিয়ে উঠে নিজের ক্যারিয়ার গঠন করেছি। নিজের পরিশ্রমে পরিবারের সদস্যদের লালন করতে পেরে আমি খুব আনন্দিত।
এ পর্যন্ত চীনে দুটি ভর্তুকি ব্যবস্থায় ২ কোটি ৭০ লাখ প্রতিবন্ধী উপকৃত হয়েছে। এক কোটির বেশি প্রতিবন্ধী মূল বীমায় নিবন্ধিত হয়েছে। মোট ৯০টিরও বেশি আইন এবং ৫০টিরও বেশি প্রশাসনিক বিধানে প্রতিবন্ধীদের অধিকার রক্ষা হচ্ছে।