চীনের অর্জনগুলি আন্তর্জাতিক সমাজের ব্যাপক সমর্থন ও স্বীকৃত পেয়েছে: ব্রিটেনের বিখ্যাত পণ্ডিত
2022-10-10 16:19:00

অক্টোবর ১০: স্থানীয় সময় ১৬ সেপ্টেম্বর ব্রিটেনের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র গবেষক, বিখ্যাত পণ্ডিত মার্টিন জ্যাক চায়না মিডিয়া গ্রুপে একান্ত সাক্ষাত্কারে বলেছেন, গত ১০ বছরে চীনের অর্থনীতি ও সমাজসহ বিভিন্ন খাতে অর্জিত অতুলনীয় উন্নয়ন আন্তর্জাতিক সমাজের ব্যাপক সমর্থন ও স্বীকৃতি পেয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে, চীন বড় দেশের দায়িত্ব পালন করেছে, ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগসহ বিভিন্ন প্রস্তাব পেশ করেছে, যা আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে। 

 

সাক্ষাত্কারে মার্টিন জ্যাক প্রথমে উল্লেখ করেন যে, চীনের জন্য দারিদ্র্যমোচনের লড়াইয়ে সর্বাত্মক জয়লাভ করা অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ, দারিদ্র্য মোকাবিলায় অন্যান্য দেশের জন্য একটি ভালো উদাহরণ স্থাপন করেছে চীন। তিনি বলেন,

“গত কয়েক বছরে চীন দারিদ্র্য নিরসনে অনেক সাফল্য অর্জন করেছে। দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সর্বাত্মক জয়লাভ করা চীনের জন্য অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ। চীন অন্যান্য দেশকে সুস্পষ্ট সংকেত পাঠিয়েছে যে- দারিদ্র্য চিরকাল থাকে না এবং তা দূর করা যেতে পারে।”

মার্টিন জ্যাক উল্লেখ করেন যে, চীনের অর্থনীতি সার্বিকভাবে চরম দারিদ্র্য দূর করার পাশাপাশি ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দশকে, এটি পরিমাণগত অবস্থা থেকে গুণগত বৃদ্ধি, বিশেষ করে উচ্চ প্রযুক্তি খাতে একটি রূপান্তর হয়েছে। মার্টিন জোর দিয়ে বলেন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের উল্লিখিত অর্জনগুলির পাশাপাশি, চীন কোভিড মহামারীতে সাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে দুর্দান্ত ভূমিকা রেখেছে, যা বিশ্বের জন্য একটি মডেল। মার্টিন বলেন,

“অবশ্যই, যখন আমরা এই সময়কালের মধ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন পর্যালোচনা করি, আমরা কোভিড মহামারী এবং এর প্রভাব উপেক্ষা করতে পারি না। মহামারী নিয়ন্ত্রণে চীন কত বড় শক্তি, তা আমাদের দেখতে হবে। চীনা জনসংখ্যার আকার বিবেচনা করে, সংক্রমণের হার এবং মৃত্যুর হার অনেক কম পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা খুব উল্লেখযোগ্য অর্জন। এমনকি বলা যেতে পারে যে, মহামারী মোকাবিলায় চীন বিশ্বের সবচেয়ে সফল দেশ।”

 

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ‘মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি’ প্রতিষ্ঠার ধারণা সম্পর্কে মার্টিন বলেন, এই ধারণা মানবসমাজের শান্তি ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথে সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়েছে। মার্টিন মনে করেন, মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি প্রতিষ্ঠার ধারণা হলো মানবজাতির অভিন্ন মূল্যবোধ। কারণ, ক্রমবর্ধমান জটিল ও পরিবর্তিত বিশ্বের সামনে আমাদের উচিত ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং সহযোগিতার মাধ্যমে বৈশ্বিক উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা। বর্তমানে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছি, একটি একক দেশের পক্ষে কার্যকরভাবে তা মোকাবিলা করা বেশ কঠিন এবং এক্ষেত্রে বিশ্বের সব দেশের সহযোগিতা প্রয়োজন।

 

মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ণ বাস্তব প্ল্যাটফর্ম হিসেবে, চীন ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ নির্মাণ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। মার্টিন উল্লেখ করেন, ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ বরাবর দেশগুলির জন্য অভিন্ন উন্নয়নের জন্য সম্ভাবনা তৈরি করেছে। মার্টিন বলেন,

“আমি মনে করি, চীন ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল এবং বিভিন্ন দেশ এতে অংশগ্রহণ করেছে। যা একটি মহান পরিকল্পনা। এটি ইউরেশীয় মহাদেশের রূপান্তর ও উন্নয়ন এবং চীন এবং ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ বরাবর দেশগুলির অভিন্ন উন্নয়নে নতুন সুযোগ সৃষ্টির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই, আমি বিশ্বাস করি যে, ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগটি চীনের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা উন্নত করতে এবং তার আন্তর্জাতিক প্রভাব মোকাবিলার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রস্তাব।”

মার্টিন জ্যাক বলেন যে, উপরোক্ত বিষয়গুলি বিবেচনায় রেখে বিগত দশ বছরে চীনের উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের অর্জনগুলো বিশ্ব সুস্পষ্টভাবে দেখেছে এবং আন্তর্জাতিক সমাজের ব্যাপক সমর্থন ও স্বীকৃতি পেয়েছে।

 

জিনিয়া/তৌহিদ/শুয়েই