চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছেন, একটি উচ্চমানের জীবন তৈরিতে আরও বড় অগ্রগতি অর্জন করতে হবে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেসের পর থেকে, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং’র নেতৃত্বে সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটি অটলভাবে জনগণের কল্যাণকে উন্নত করে চলেছে এবং একটি উন্নত জীবনের জন্য মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে ক্রমাগত সন্তুষ্ট করে চলেছে। উচ্চমানের জীবনের একটি নতুন চিত্র নতুন যুগের চীনে ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে।
শহরে পায়চারি করার সময় চোখে পড়ছে সবুজ গাছপালা ও সুন্দর ফুল। মনের অজান্তে প্রায়ই এমন সুন্দর দৃশ্যের সম্মুখীন হয় অনেকে। বর্তমানে সারা চীনে ৩০ হাজারের বেশি পকেট বাগান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। নাগরিকরা জানালা খুললে সবুজ দেখতে পান এবং বেরিয়ে পার্কে যেতে পারেন। সুদীর্ঘ পায়চারির পথ সবুজ মাটি ও পরিষ্কার পানির বেল্ট যুক্ত করে আরও স্বাস্থ্যকর ও বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরি করেছে।
চীনের সি ছুয়ান প্রদেশের মিয়ান ইয়াং শহরবাসী ওয়াং ছিউ মেই বলেন, এখানে ফুল, ঘাস অনেক সুন্দর। পাশাপাশি, শরীরচর্চা ও দৌড়ানোর পরিবেশও রয়েছে। প্রতিবার এখানে আসলে আরাম অনুভব করি।
জনগণের সুখী জীবন নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের প্রধান কাজ। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির অষ্টাদশ কংগ্রেসের পর থেকে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং-কেন্দ্রিক সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটি বরাবরই জনগণকে মনের সর্বোচ্চ স্থানে রেখেছে। সবুজ উন্নয়নের চেতনায় শহর ও গণজীবিকার উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। গুণগত মানসম্পন্ন উন্নয়নের সঙ্গে আরও সুন্দর জীবন সৃষ্টিকে যুক্ত করে মানুষের সুখী জীবনের চাহিদা মেটাতে চেষ্টা চালাচ্ছে সিপিসির কেন্দ্রীয় কমিটি।
গণজীবিকা কোন ক্ষুদ্র বিষয় নয়। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং প্রায়ই জনগণের কল্যাণকর সুপারমার্কেট, অবসর সেবা কেন্দ্র, কমিউনিটি ও স্টেডিয়ামসহ নানা স্থানে গিয়ে মানুষের প্রত্যাশার কথা শুনেন।
গত দশ বছরে চীনের বিভিন্ন ছোট-বড় শহরে জনগণের জন্য, জনগণের সুবিধা নিশ্চিত এবং জনগণের আরামদায়ক জীবন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পনেরো মিনিট হাটার দৈর্ঘ্যের জীবন বৃত্ত গড়ে তোলা হচ্ছে; যাতে জনগণের জীবন আরও সুবিধাজনক ও আরামদায়ক হয়।
হ্য নান প্রদেশের হ্য বি শহরের নাগরিক হ্য ওয়েই কুও বলেন, এটি বড় নার্সিং হোমের মতো। ক্যান্টিনে খাওয়া যায়। আনন্দের সঙ্গে আসুন, আপনি সুখ বোধ করবেন এবং অবশ্যই লাইক দেবেন।
চ্য চিয়াং প্রদেশের ছু চৌ শহরবাসী ইয়াং চাও মিং বলেন, কমিউনিটির হাসপাতালে যেতে চাইলে কেবল তিন থেকে পাঁচ মিনিট লাগে। সেখানে বড় হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ডক্টর আছে। জীবনের মান অনেক উ
ন্নত হয়েছে বলে মনি করি।
বেইজিংয়ের থোং চৌ অঞ্চলের অধিবাসী মা ছোং ছোং বলেন, বাড়ি থেকে বের হয়ে কিন্ডারগার্টেনে যেতে কেবল ৫-৬ মিনিট লাগে। খরচ অনেক কমেছে। আমি খুব সন্তুষ্ট।
চীনা জনগণের গুণগত মানসম্পন্ন জীবনের প্রত্যাশা পূরণে গত দশ বছর গণ-সাংস্কৃতিক পরিষেবা ব্যবস্থাও সুবিন্যস্ত করা হয়েছে।
বাগান শহর সু চৌতে গত দশ বছরে নতুন করে ২৬টি বাগান চালু হয়েছে। ফলে চীনের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারছেন জনসাধারণ । কিছু কিছু বাগান ও জাদুঘর রাতেও খোলা থাকে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে রাতের দৃশ্য উপভোগ করার পাশাপাশি মানুষেরা খুন অপেরা, নৃত্য ও চীনের ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্রের সুর উপভোগ করতে পারেন।
বর্তমানে চীনারা ঘাসের মাঠে, প্রকৃতির কোলে, জাদুঘরে, বইয়ের দোকানে জীবনের স্বাদ উপভোগ করছেন। গত দশ বছরে চীনে নতুন করে ৮৩৩টি জাদুঘর, ৫৭ হাজার লাইব্রেরির শাখা ও সেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। লাইব্রেরিতে প্রবেশাধিকার আইডির অধিকারী পাঠকের সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়িয়েছে। ক্রীড়ার মাঠের পরিমাণ ৩৯ লাখ ৭১ হাজার ছাড়িয়েছে।
সায়ান সি প্রদেশের শেন মু শহরে নগর পর্যায়ের লাইব্রেরি বিভিন্ন গ্রাম ও কমিউনিটিতে ৩৯টি শাখা স্থাপন করেছে। সে সব স্থানে বই পড়ার পরিবেশের পাশাপাশি পড়ার অধিক উপায় প্রদান করা হয়েছে।
কুই চৌ প্রদেশের ছিয়ান তোং নান অঞ্চলে উপজেলা পর্যায়ের ১৪০টি বাস্কেট বল দল গ্রামের মাঠে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এটাকে গ্রামীণ এনবিএন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, যা গ্রামের প্রাণচাঞ্চল্যকে আরও চাঙ্গা করেছে।
সুন্দর জীবনের প্রত্যাশা সবার। এ প্রত্যাশা নতুন যুগে চীনকে এগিয়ে নিতে উত্সাহিত করছে।
(রুবি/এনাম/)