সেপ্টেম্বর ২৭: স্থানীয় সময় গতকাল (সোমবার) চীন-ইউরোপ রেলপথ ধরে একটি ট্রেন জার্মানির হামবুর্গ থেকে চীনের শাংহাইয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। ট্রেনটি শাংহাই আমদানি মেলায় প্রদর্শনের জন্য বিভিন্ন জার্মান পণ্য নিয়ে আসছে।
ট্রেনটি মোট ৪৪টি ৪০-ফুট কন্টেইনার বহন করছে। এর মধ্যে ১৪টি কন্টেইনারে আছে পঞ্চম চীনের আন্তর্জাতিক আমদানি মেলায় অংশগ্রহণকারী জার্মান প্রতিষ্ঠানের স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রাংশ ও পাইপ। পোল্যান্ড হয়ে ট্রেনটি বেলারুশ ও রাশিয়ার মধ্য দিয়ে চীনের মানচৌলি বন্দরে প্রবেশ করবে। ট্রেনটি ২২ দিনের মধ্যে শাংহাইয়ে পৌঁছাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
হামবুর্গে চীনা কনস্যুলেট জেনারেলের প্রতিনিধি কনসাল চিন ওয়েই এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের আওতায়, চীন-ইউরোপ রেলওয়ে এক্সপ্রেস বিগত ১১ বছরে নতুন নতুন সাফল্য অর্জন করেছে। তিনি বলেন:
“চলতি বছর চীন-জার্মান কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী। ‘আমদানি মেলা’ ট্রেনটি শাংহাই ও হামবুর্গের মধ্যে ৩৬ বছরের বন্ধুত্বের প্রতীক। দুই শহরের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা গভীরতর হয়েছে, যা চীন ও জার্মানির মধ্যে স্থানীয় পর্যায়ে সহযোগিতার দৃষ্টান্ত। এ থেকে আরও বোঝা যায়, চীনের উন্মুক্তকরণের দরজা কখনও বন্ধ হবে না। চীন সরকার প্রতিশ্রুতি দেয় যে, দরজা আরও উন্মুক্ত ও বিস্তৃত হবে। চলতি বছর চীনের আমদানি মেলা পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী কয়েক বছরে চীন কয়েক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি পণ্য আমদানি করবে, যা জার্মান ও হামবুর্গের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিশাল ব্যবসার সুযোগ। এ থেকে আরও বোঝা যায় যে, চীন-জার্মান সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। চীন টানা ছয় বছর ধরে বিশ্বের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। হামবুর্গ ও চীনের ২০টিরও বেশি শহরের মধ্যে ট্রেন চলাচল করছে। বিগত ৫০ বছরের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে যে, দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা দু’দেশের জন্যই কল্যাণকর।”
আন্তর্জাতিক মালবাহী ফরওয়ার্ডার ব্রিটিশ রেল ইউরোপের ব্যবসায়িক উন্নয়ন ব্যবস্থাপক আলেকজান্ডার টোনেট সাংবাদিকদের বলেন, চীন-ইউরোপ রেলওয়ে এক্সপ্রেস ট্রেনের মাল বহনের ক্ষমতা বেশি। এই ট্রেন বিভিন্ন ধরণের মাল বহন করতে পারে, যা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক বিনিময়ের জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক। তিনি বলেন:
“আমাদের অনেক ট্রেন শাংহাই যায়। আজকের ট্রেনটি খুবই বিশেষ একটি ট্রেন। এই ট্রেনে রয়েছে শাংহাই আমদানি মেলায় অংশগ্রহণকারী পণ্যসমৃদ্ধ ১৪টি কন্টেইনার। আমরা লক্ষ্য করেছি যে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নতুন রেশমপথে চীন-ইউরোপ মালবাহী ট্রেনের সংখ্যা বেড়েছে। এই প্রবণতা বজায় থাকবে বলে আমরা আশা করি।”
হামবুর্গ শহরের স্থানীয় সরকারের কার্যালয়ের আন্তর্জাতিক ব্যুরোর প্রতিনিধি লুও ওয়েই চ্য মনে করেন, চীন-ইউরোপ রেলপথের শাংহাই-হামবুর্গ লাইন একটি ভারসাম্যপূর্ণ দ্বিমুখী পরিবহনলাইন। জার্মান কোম্পানিগুলোর জন্য এ লাইন কার্যকর পরিষেবা প্রদান অব্যাহত রেখেছে। অবশ্যই এটি শাংহাই আমদানি মেলায় অংশগ্রহণকারী জার্মান শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি বিশাল সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এই সম্পর্কে তিনি বলেন”
“‘এক অঞ্চল, এক পথ’ প্রস্তাব হামবুর্গের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে, এটি একটি পারস্পরিক কল্যাণকর প্রস্তাব, যা জার্মানি-চীন বাণিজ্যিক বিনিময়কে এগিয়ে নিতে পারে। শাংহাই ও হামবুর্গের মধ্যে সম্পর্ক খুবই ভালো। এই রেলপথে হামবুর্গ থেকে চীনে শুধু পণ্যই সরবরাহ করা যায় না, হামবুর্গে আমাদের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো সহজে চীনের আমদানি মেলায় অংশগ্রহণও করতে পারছে এ লাইনের কল্যাণে।” (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)