আপন আলোয়-৮৭
2022-09-23 18:47:48

পর্বে অন্তরঙ্গ আলাপনে অতিথি রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ও প্রশিক্ষক মিতা পাল

চীরায়ত চীনা সাহিত্য

মং হাওরান: চিরায়ত থাং কবি

থাং রাজবংশের সময়কে বলা হয় চীনা কবিতার স্বর্ণযুগ। এই সময়ে শ্রেষ্ঠ কবিরা তাদের সৃষ্টিকর্মে উপহার দেন যা চিরায়ত চীনা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। থাং রাজবংশের সময় রচিত কবিতার একটি সাধারণ নাম হলো থাং শি। এ সময়কার কবিদের থাংকবি বা থাংশিরেন নামে অভিহিত করা হয়। একজন গুরুত্বপূর্ণ এবং বিখ্যাত থাং কবি হলেন মং হাওরান। তিনি আরেকজন বিখ্যাত থাং কবি ওয়াং ওয়েইর ভালো বন্ধু ছিলেন। দু’জনের বন্ধুত্ব নিয়ে মং হাওরান অনেক কবিতাও লিখেছেন।

মং হাওরানের জন্ম ৬৮৯, মতান্তরে ৯১ সালে, বর্তমান হ্যপেই প্রদেশে। সিয়াংইয়াং জেলায় হান নদীর তীরে ছিল তার জন্মস্থান। তিনি তার জন্মস্থানেই জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন। বন্ধু কবি ওয়াং ওয়েইর সহযোগিতায় তিনি অবশ্য স্বল্প সময়ের জন্য থাং রাজাদের রাজধানী চাংআন শহরে বাস করেন এবং সরকারী কাজ পান। থাং সম্রাট সুয়ানচোং তার কবিতা পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন।

তবে সরকারী চাকরিতে মানিয়ে নিতে পারেননি মং হাওরান, কারণ তিনি ছিলেন কিছুটা স্পষ্টবাদী ধরনের মানুষ। তাকে সেভাবে মূল্যায়নও করা হয়নি। অভিমানী কবি নিজের জন্মস্থানেই ফিরে আসেন এবং ৭৪০ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ৫০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। মং হাওরান তার জন্মস্থানের সৌন্দর্য, হান নদীর রূপ, স্থানীয় মানুষের জীবনপ্রবাহ নিয়ে অনেক কবিতা লিখেছেন। জন্মভূমি এলাকার ইতিহাস, ঐতিহ্য, লোককাহিনী, প্রাকৃতিক দৃশ্য, নানশান ও লুমেনশান পর্বত, প্রাচীন মন্দির ইত্যাদি নিয়ে কবিতা লিখেছেন তিনি- যা চীনা গ্রামজীবন ও প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য ও স্নিগ্ধতাকে ফুটিয়ে তুলেছে।  মৎস্যজীবী, কৃষক, গ্রামের সাধারণ মানুষ ও জনজীবনের অনেক ছবি তার লেখায় প্রতিফলিত হয়েছে। কবি ওয়াং ওয়েইর সঙ্গে বন্ধুত্ব নিয়েও অনেক কবিতা লিখেছেন মং। তার লেখার প্রভাব ওয়াং ওয়েইর কবিতাতেও লক্ষ্য করা যায়। যদিও ওয়াং ওয়েই খ্যাতি পেয়েছিলেন মং হাওরানের চেয়ে বেশি।

মং হাওরানের বিখ্যাত একটি কবিতা হলো বসন্তের সকাল। চতুপর্দী এই কবিতাটি থাং কবিতার সংগ্রহে স্থান পেয়েছে এবং এটিকে অন্যতম সেরা থাংশি বলেও অনেকে বিবেচনা করেন।

কবিতাটি হলো,

বসন্তে ঘুমের ঘোরে প্রভাত হয়েছে ভুল

যদিও শুনেছি কেবল পাখির কাকলী

শেষ রাতে বাতাসে ভাসে বৃষ্টির ধ্বনি

কে জানে ঝরেছে কত ফুল

চিরায়ত চীনা কবিতায় থাং কবি মং হাওরানের রয়েছে এক বিশেষ জগৎ যেখানে তিনি চীনের গ্রামীণ জীবনের চিরন্তন সৌন্দর্যকে তুলে ধরেছেন।

 

 

অন্তরঙ্গ আলাপন

কুমিল্লায় রবীন্দ্রসংগীতের প্রসারে সম্মিলন পরিষদ বড় ভূমিকা রাখছে: মিতা পাল

আপন আলোয় ৮৭তম পর্বের অতিথি রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ও প্রশিক্ষক মিতা পাল।

বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ও প্রশিক্ষক মিতা পাল। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে উচ্চমানে তালিকাভুক্ত শিল্পী তিনি।

কুমিল্লার ‘শ্রুতিনন্দন’ সংগীত শিক্ষা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক ও প্রশিক্ষক মিতা পাল। জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও কুমিল্লা শাখার সহ-সভাপতি তিনি। ২০০৭ সাল থেকে প্রশিক্ষক ও বিচারকের দায়িত্ব পালন করছেন সম্মিলন পরিষদে।

সংগীতে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ফেইম অ্যাওয়ার্ড, গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড, নেপালের গান্ধী পিস অ্যাওয়ার্ড, মাদার তেরেসা পিস অ্যাওয়ার্ড, ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মৈত্রি সম্মাননাসহ দেশ-বিদেশে বহু পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন মিতা পাল।

ছবি: আপন আলোয় অনুষ্ঠানে মাহমুদ হাশিমের মুখোমুখি রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ও প্রশিক্ষক মিতা পাল

চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন কুমিল্লার সংগীতাঙ্গন বিশেষ করে রবীন্দ্রসংগীত চর্চার বিষয়ে। জেলা শহরে থেকে জীবনভর সংগীত সাধনায় কোনো খেদ নেই তাঁর। বললেন স্বচ্ছন্দেই চলছে তার সংগীত চর্চা আর জীবনযাপন।

কুমিল্লায় রবীন্দ্রসংগীতের প্রসারে জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ বড় ভূমিকা রাখছে বলে জানালেন এ শিল্পী। তবে ছেলেরা রবীন্দ্রসংগীতে কম আসছে, আর এলেও তাদের ধরে রাখতে পারছেন না বলে দুঃখ তাঁর। আগামীতেও রবীন্দ্রসংগীতে নতুন নতুন শিল্পী তৈরি করে যাওয়া তাঁর ব্রত বলে জানালেন মিতা পাল।

 

সিএমজি বাংলা’র ফেসবুক পাতা facebook.com/cmgbangla এবং ইউটিউব লিঙ্ক youtube.com/cmgbangla তে গিয়েও আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানাতে পারেন আপনার মূল্যায়ন।

 

পরবর্তী অনুষ্ঠানে আমরা বাংলাদেশ-চীনের সংস্কৃতিক অঙ্গনের আরো কিছু খবর এবং গুণিজনের অন্তরঙ্গ আলাপন নিয়ে হাজির হবো আপনাদের সামনে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন।

 

অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও সাক্ষাৎকার গ্রহণ: মাহমুদ হাশিম

প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া।

অডিও সম্পাদনা: তানজিদ বসুনিয়া।