আকাশ ছুঁতে চাই পর্ব ৯২
2022-09-22 19:29:54

কী আছে আজকের পর্বে

১.  দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

২. শিল্পী তাই ওয়েনহুয়ার অপূর্ব শিল্পভুবন

৩. বাংলাদেশে প্রথম মেট্রোরেলের নারী চালক

৪. কারিগরী শিক্ষায় এগিয়ে আসছে নারী

৫. তিব্বতের লোকসংগীত: শিল্পী আলান দাওয়া দোলমা

৬. চীনা শিক্ষিকা চৌ সিয়াংচিয়াংয়ের আনন্দময় শিক্ষা

৭. নারী উদ্যোক্তাদের শরৎমেলা

 

 

চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ঢাকা স্টেশন থেকে প্রচারিত আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি শান্তা মারিয়া। কেমন আছেন আপনারা? আশাকরি ভালো আছেন। আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে আমরা সবসময় কথা বলি নারীর সাফল্য, সংকট, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা নিয়ে। প্রথমেই একটি সুসংবাদ দিয়ে শুরু করছি অনুষ্ঠান।

দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয় করে দেশকে গৌরব এনে দিয়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল।  স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয় করায় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়, কোচ ও ম্যানজারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার তিনি এই অভিনন্দন জানান।

নেপালের কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকাল সোয়া পাঁচটায় শুরু হয় ফাইনালের শিরোপা জয়ের লড়াই। বাংলাদেশের কৃষ্ণা রানী সরকারের ২ গোল এবং শামসুন্নাহারের ১ গোলে বাংলাদেশ এই শিরোপা জয় করে। নেপালের পক্ষে একমাত্র গোলটি করেন অনিতা বাসনেত।

বাংলাদেশ একাদশে ছিলেন রূপনা চাকমা, সাবিনা খাতুন, শিউলি আজিম, শামসুন্নাহার, আঁখি খাতুন, মাসুরা পারভীন, মনিকা চাকমা, সানজিদা আক্তার, মারিয়া মান্ডা, কৃষ্ণা রানী সরকার ও সিরাত জাহান স্বপ্না।

দুই দলেরই এর আগে ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও জয়ের মুখ দেখেনি একবারও। ইতোমধ্যে এর আগে নেপাল চারবার এবং বাংলাদেশ একবার ফাইনাল খেলেছে। প্রতিবারই তারা হেরেছে শক্তিশালী ভারতের কাছে। তবে প্রথমবারের মতো ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ এবং নেপাল।

পুরো টুর্নামেন্ট দাপটের সঙ্গে খেলেই ফাইনালে পৌঁছায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের এই ঐতিহাসিক বিজয়ে আনন্দে ভাসে দেশের সর্বস্তরের মানুষ।

 

শিল্পী তাই ওয়েনহুয়ার অপূর্ব শিল্পভুবন

চীনের একজন বিখ্যাত শিল্পী  তাই ওয়েনহুয়া। তিনি ক্যালিগ্রাফি, পেইন্টিং, ভিজ্যুয়াল এবং ভোকাল আর্টিস্ট। পাশ্চাত্যের অপেরা, চীনের অপেরা এবং ক্যালিগ্রাফির সমন্বয়ে তিনি গড়ে তুলেছেন এক অপূর্ব শিল্প ভুবন।চলুন তার শিল্প ভুবন থেকে ঘুরে আসি।

তাই ওয়েনহুয়া। চীনের এক প্রতিভাবান শিল্পী। তিনি নতুন ধরনের শিল্প মাধ্যম সৃষ্টি করেছেন। তিনি ক্যালিগ্রাফি, ভিজ্যুয়াল ও ভোকাল আর্টের সমন্বয়ে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব এক শিল্প ভুবন। পাশ্চাত্যের অপেরা, পিকিং অপেরা, ক্যালিগ্রাফি ও পেইন্টিংয়ের মাধ্যমে তিনি অসামান্য শিল্প সৃষ্টি করছেন।

হুয়াছাই আর্ট মিউজিয়ামের কিউরেটর এবং সংগ্রাহকও তিনি। তার জন্ম বেইজিংয়ে। ছোটবেলা থেকেই তিনি শিল্পচর্চা শুরু করেন।

তাই ওয়েনহুয়া, বলেন, ‘ যখন ছোট ছিলাম তখন থেকেই চায়নিজ লোকজ অপেরায় আকৃষ্ট হই। প্রাইমারি স্কুলে পড়ার সময় থেকেই আমি আর্ট ক্লাসে সবচেয়ে ভালো ছাত্রী ছিলাম। আমি সংগীতের উপর পড়ালেখা করেছি। বিশ বছরের কোঠায় আমি নিজের প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলি’।

তাই ওয়েনহুয়া তার শিল্পী দল নিয়ে জাপানের টোকিয়োতে পিকিং অপেরা মঞ্চস্থ করেন। ২০১৫ সালে তিনি তার দল নিয়ে ইতালি যান। তিনি সংগীতকে পেইন্টিংয়ে রূপ দেয়ার এক অভাবনীয় পরিকল্পনা করেন।

২০১৯ সালে ওয়েনহুয়া এক নতুন চিন্তাধারার জন্ম দেন। তিনি মনে করেন শিল্প সৃষ্টি হলো শিল্পীর অভিজ্ঞতা ও জীবন দর্শনের প্রকাশ।  তিনি নিজের ক্যালিগ্রাফির সৃষ্টি করতে থাকেন এবং জাপানের টেরাডা আর্ট কমপ্লেক্সে এক প্রদর্শনী করেন।

তাই ওয়েনহুয়া বলেন, ‘ আমার কাছে মনে হয়, শিল্পে আমার আগের সব কাজ এবং শির্পের জন্য আমার আবেগ এই বিন্দুতে এসে মিলেছে। আমি সুর সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছি, গান গাওয়ার চেষ্টা করেছি। পাশ্চাত্যের অপেরার সঙ্গে পিকিং অপেরার  সমন্বয় করেছি। এটা আমার ভয়েস আর্ট।’ 

তাই ওয়েনহুয়া ঐতিহ্যবাহী চীনা শিল্পের সঙ্গে আধুনিক মাল্টিমিডিয়া প্রযুক্তিরও সমন্বয় করেছেন।

১৯২১ সালে তিনি ভিন্ন ধরনের ভিস্যুয়াল আর্ট সৃষ্টি করেছেন। 

তাই ওয়েনহুয়া বলেন, ‘২০২১ সালে আমরা মাইক্রোসফট এশিয়া প্যাসিফিক রিসার্চের সঙ্গে প্রেজেন্টেশন ও প্যানেল আলোচনা করি। আমার ক্যালিগ্রাফির কাজের সঙ্গে ভয়েস আর্ট মিশিয়ে মাল্টি ডাইমেনশনাল প্রেজেন্টশন করেছি। শিল্পের সঙ্গে যখন প্রযুক্তির মেলবন্ধন হয় তখন শিল্পের পরিধি যেন মহকাশের মতো হয়ে ওঠে। সত্যি বলতে কি, প্রত্যেকেরই ক্ষমতা রয়েছে নিজস্ব শিল্প সৃষ্টির এবং সকল সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে নিজস্ব ভুবন গড়ে তোলার।’

শিল্পী তাই ওয়েনহুয়া তার নিজস্ব ভুবনকে নিয়ে যাচ্ছেন শিল্পের অনন্য উচ্চতায়। তিনি চীনের লোকজ ঐতিহ্য, পাশ্চাত্যের শিল্প এবং নিজস্ব শিল্পবোধ মিলিয়ে তৈরি করছেন এক অসামান্য জগত।

 

বাংলাদেশে প্রথম মেট্রোরেলের নারী চালক

বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের নারী চালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে  লক্ষ্মীপুরের মেয়ে মরিয়ম আফিজাকে। প্রায় এক বছর আগে তাকে নিয়োগ দেয়ার পর শুরু হয় কারিগরি ও প্রায়োগিক নানা প্রশিক্ষণ। এরই মধ্যে কয়েক ধাপের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। তারপর জাপানি কোম্পানির প্রশিক্ষণ শেষে সবশেষ প্রস্তুতির জন্য তাকে দিল্লি পাঠানোর কথা রয়েছে। বিস্তরিত প্রতিবেদনে।

 

মরিয়ম আফিজা বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল চালক হিসেবে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।  দেশের প্রথম মেট্রোরেল আগামী ১৬ ডিসেম্বর চালু হওয়ার কথা রয়েছে। আর তার আগেই বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করে নেয়া হচ্ছে আফিজাকে।  

এরইমধ্যে চট্টগ্রামের হালিশহরে বাংলাদেশ রেলওয়ের ট্রেনিং একাডেমিতে দুই মাসের প্রশিক্ষণ শেষে ঢাকায় আরও চার মাসের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।  বর্তমানে উত্তরার দিয়াবাড়িতে মেট্রোরেলের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জাপানের মিতসুবিশি কাওয়াসাকি কোম্পানির বিশেষজ্ঞদের দ্বারা ট্রেন পরিচালনার কারিগরি ও প্রায়োগিক নানা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তিনি।

এরপর তাকে দিল্লি মেট্রোরেল একাডেমিতে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হবে।  প্রয়োজনে ট্রেন পরিচালনায় যুক্ত ব্যক্তিদের জাপানেও প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা আছে কর্তৃপক্ষের।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক এবং  স্নাতকোত্তর করেছেন লক্ষ্মীপুরের মেয়ে মরিয়ম আফিজা।

 

কারিগরী শিক্ষায় এগিয়ে আসছে নারী

 

মাস্টার শেফ। কথাটি শুনলে একজন পুরুষের কথাই মনে আসে। কিন্তু এখন মাস্টার শেফের পেশায় নারীরাও এগিয়ে আসছেন। এমনি অনেক পেশায় ভোকেশনাল শিক্ষা গ্রহণ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন নারীরা।

চীনে বর্তমানে কারিগরী শিক্ষা গ্রহণ করে তরুণ তরুণীরা তাদের ক্যারিয়ার গড়ে নিচ্ছেন। ভোকেশনাল শিক্ষায় তরুণ তরুণীরা কিভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন সে কথা বিস্তারিত জানবো প্রতিবেদনে।

চীনের ভোকেশনাল স্কুলগুলো নতুন ক্যারিয়ার সৃষ্টি করছে। তরুণ তরুণীরা ভোকেশনাল স্কুলে শিক্ষা গ্রহণ করে নতুন নতুন পেশায় ঢুকছেন। কিছু কিছু পেশা আগে ছিল পুরোপুরি পুরুষ প্রাধান্যর পেশা। যেমন শেফ বা রন্ধনশিল্পীর পেশা। বড় বড় হোটেল ও রেস্টুরেন্টে শেফ হিসেবে সাধারণত পুরুষদের কথাই চিন্তা করা হতো। কিন্তু এখন ভোকেশনাল স্কুলে শিক্ষা নিয়ে নারীরাও শেফ হচ্ছেন।

থিয়ানচিন চোংহুয়া সেকেন্ডারি ভোকেশনাল স্কুলের প্রিন্সিপাল চিয়া সুলান মনে করেন, ভোকেশনাল স্কুলে যারা আসে তারা শিক্ষার্থী হিসেবে মোটেই নিম্নমানের নয়। আগে একটা ধারণা ছিল যে, সাধারণত খারাপ ছাত্রছাত্রীরাই উচ্চশিক্ষা গ্রহণ না করে ভোকেশনাল স্কুলে আসে। কিন্তু এই ধারণা এখন বদলে গেছে।

চিয়া সুলান মনে করেন অনেক সময় বিভিন্ন কারণে মিডল স্কুলে একজন ছাত্র বা ছাত্রী ভালো স্কোর নাও করতে পারে। হয়তো কোন একটি পরীক্ষায় সে ভালো স্কোর করেনি বা কোন শিক্ষক তার দিকে তেমন বিশেষ কেয়ার নেননি। হয়তো ধরে নিয়েছেন সে যথেষ্ট মেধাবী নয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো একজন ভোকেশনাল স্কুলে যারা আসেন তারাও যথেষ্ট মেধাবী।

চিয়া সুলান জানান, ২০১২ সালে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ১৮তম ন্যাশনাল কংগ্রেসে কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ের উপর অনেক গুরুত্ব প্রদান করেছেন। এ খাতে অনেক বাজেটও  দেয়া হয়েছে। ভোকেশনাল এডুকেশন শিক্ষানীতি ঢেলে সাজানো হয়েছে।

ইচ্ছা করলে কারিগরী স্কুল থেকে পাশ করার পরও একজন শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন।

থিয়ানচিন চোংহুয়া সেকেন্ডারি ভোকেশনাল স্কুলের একজন শিক্ষক হোও তাছাং। তিনি একজন মাস্টার শেফ। তার কাছে শিক্ষা গ্রহণ করে অনেক নারী শেফ হিসেবে নিজের পেশা গড়ে নিয়েছেন।

সি হুয়াবেইচিয়াও একজন তরুণী। থিয়ানচিন লাইট ইন্ডাসট্রি ভোকেশনাল টেকনিকাল কলেজের একজন ছাত্রী তিনি। ফটোভোলাটিকস শিখছেন তিনি। তিনি কঠোর পরিশ্রম করেছেন। ভোকেশনাল স্কিল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি সি এবং তার দল বিশ্ব কারিগরী কলেজ স্কিল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে স্বর্ণপদক জয় করেছেন।

কারিগরী শিক্ষা নারীদের তাদের পেশায় উন্নতি করতে যেমন সহায়তা দিচ্ছে তেমনি পুরো তরুণ সমাজকেই আরও বেশি কর্মদক্ষ করে গড়ে তুলছে।

 

 

তিব্বতের লোকসংগীত

 

চীনের স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল তিব্বতের সংস্কৃতি অনেক সমৃদ্ধ।  তিব্বতী জাতির মেয়ে আলান দাওয়া দোলমা চীনের একজন বিখ্যাত সংগীতশিল্পী।

১৯৮৭ সালে সিচুয়ান প্রদেশের ছাংদুতে জন্ম নেয়া এই শিল্পী ২০০৫ সাল থেকে চীনের সংগীত জগতে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেন। তিনি আধুনিক পপ মিউজিক এবং অন্যান্য জনরার গান করলেও মূলত তাকে জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে তিব্বতের লোকসংগীত। এখন শুনবো আলানের কণ্ঠে ছিংচাং প্লেচু বা ছিংচাং মালভূমি শিরোনামে একটি গান। এই গানে তিব্বতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা বলা হয়েছে।

 

চীনা শিক্ষিকা চৌ সিয়াংচিয়াংয়ের আনন্দময় শিক্ষা

 

শিশুদের কাছে লেখাপড়াকে অনেক সময় বোঝা বলে মনে হতে পারে। শিশুরা ভালোবাসে খেলা করতে। খেলতে খেলতে শেখা আনন্দের সঙ্গে লেখাপড়া করা এমনটি সচরাচর ঘটে না। তবে প্রচলিত ধারার বাইরে এই উপায়ে প্রায় তিন দশকের বেশি সময় ধরে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন চীনা নারী শিক্ষিকা চৌ সিয়াংচিয়াং। স্বেচ্ছাসেবী এই শিক্ষিকা এক ডজনেরও বেশি প্রদেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা দিতে। বিস্তারিত প্রতিবেদনে।

 চৌ সিয়াংচিয়াং।  ২৬ বছর ধরে স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষিকা হিসেবে গ্রামে শিক্ষকতা করে যাচ্ছেন।

স্বেচ্ছাসেবী এই শিক্ষক বর্তমানে পূর্ব চীনের চেচিয়াং প্রদেশের ফুচিয়াং কাউন্টির একটি গ্রামের স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

শিক্ষাজীবন শেষ করে চৌ চলে যান পাহাড়ের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে। সেখানে গিয়ে শুরু করেন শিক্ষকতা।

গতানুগতিক পদ্ধতির বাইরে এসে শিক্ষার্থীদের ভিন্নধারায় পাঠদান করেন এই নারী শিক্ষক। শিশুরাও মনে করে এই শিক্ষকের ক্লাস খুব মজার এবং শিক্ষক তাদের কথার গুরুত্ব দিচ্ছেন। 

চেং খিইউ  সেন্ট্রাল প্রাইমারি স্কুলেরএকজন শিক্ষার্থী। সে বলে,  " শিক্ষক চৌ’র ক্লাসগুলো খুবই কৌতূহলোদ্দীপক। যখনই আমরা সমস্যার সম্মুখীন হই, তিনি আমাদের ধৈর্য ধরে তা বুঝিয়ে দেন ,"।

চৌ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যৌথ অংশগ্রহণ নিশ্চিতেও স্বস্তিদায়ক পরিবেশ বজায় রাখেন ক্লাসে। 

চৌ সিয়াংচিয়াং বলেন, "যতবার আমি আমার পাঠ প্রস্তুত করি, আমি কল্পনা করার চেষ্টা করতাম যে আমি ছাত্রদের প্রিয় শিক্ষকদের একজন এবং আমার পাঠটি তাদের প্রিয় পাঠগুলোর মধ্যে একটি। ’ 

শিক্ষকতার পাশাপাশি চৌ শীর্ষ বিদ্যালয়গুলোর ব্যবস্থাপনা ও গবেষণা মডেলও প্রবর্তনের কাজ করছেন। উচ্চ-মানের শিক্ষাদানে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কাজও করেন তিনি।

চৌ সিয়াংচিয়া বলেন,  "আমি গ্রামীণ শিক্ষকদের জীবনীশক্তিকে কীভাবে উদ্দীপিত করতে পারি সেদিকে আরও মনোযোগ দিই যাতে তারা আরও বেশি গ্রামীণ শিশুদেরকে আরও শিখতে উদ্বুদ্ধ করে প্রভাবিত করতে পারে," ।

বছরের পর বছর ধরে, চৌ সিয়াংচিয়াং সিচুয়ানসহ এক ডজনেরও বেশি চীনা প্রদেশে ঘুরে ঘুরে গ্রামীণ শিশুদের পড়িয়েছেন। চেষ্টা করেছেন গ্রামীণ এলাকায় উন্নত শিক্ষামূলক ধারণা প্রচার করতে। 

এছাড়া তরুণ শিক্ষকদের মধ্যে গ্রামীণ শিশুদের পড়ানোয় উৎসাহিত করতেও কাজ করে যাচ্ছেন এই স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষক।  তিনি বলেন,  "আমরা পুজিয়াং কাউন্টির বিখ্যাত শিক্ষকদের জন্য প্রথম 'স্টুডিও' স্থাপন করেছি । যাতে তরুণ শিক্ষকরা গবেষণার কাজে উৎসাহিত হয়। চেষ্টা করছি এর মাধ্যমে  শিক্ষা ও শিক্ষাদানের ভিত্তি স্থাপন করতে। এতে করে বেশি শিশু উপকৃত হবে।"

গ্রামীণ শিশুদের মধ্যে শিক্ষার হার বাড়াতে এবং তাদের উচ্চ শিক্ষার পথ দেখিয়ে দিতে এভাবেই কাজ করে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন চৌ সিয়াংচিয়াং।

 

নারী উদ্যোক্তাদের শরৎ মেলা

আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশের ঢাকায় ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে অনুষ্ঠিত হলো দুই দিনের শরৎ মেলা।এই মেলায় বারুণী এবং ত্রিনয়নী নামে পাশাপাশি দুটি আয়োজনে নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য বিক্রি হয়। বারুণীর আয়োজনে ৪১টি স্টল এবং ত্রিনয়নীর আয়োজনে ৩২টি স্টল ছিল।

বারুণীর আয়োজক সুস্মিতা বসাক ও সঞ্জিব গোপ। সুস্মিতা বসাক চীন আন্তর্জাতিক বেতারকে বলেন, ‘নারীদের সৃজনশীল কাজের অভিজ্ঞতা যেন পর্বতের চূড়ায় পৌঁছাতে পারে সেজন্যই এই আয়োজন।’  ২০১৯ এ বারুণীর পথচলা শুরু হয়।  বারুণীকে বিভিন্ন জেলায় নিয়ে আরো বেশী সংখ্যক উদ্যোক্তার দেশীয় পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রির সুযোগ দিতে চান সুস্মিতা।

ত্রিনয়নী মেলাটির আয়োজক পূর্ণিমা প্রভা। এই আয়োজনে ছিল ৩২টি স্টল।

দুটি আয়োজনেই মূলত অনলাইনভিত্তিক দেশী পণ্যের প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নিয়েছে। মেলায় শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, মাটি ও কাঠের গয়না, জামদানী ও মনিপুরী শাড়ি, চামড়ার ও কাপড়ের ব্যাগ, টিপ, হস্তশিল্পের বিভিন্ন সামগ্রী ও দেশীয় খাবারের স্টল ছিল।

একজন নারী উদ্যোক্তা উম্মে ইশরাত রিতুল।  তার সহপ্রতিষ্ঠাতা আফরোজা বেগম। তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম রেবতী। জানালেন, মেলায় ভালো বেচাকেনা হয়েছে।  একই কথা জানালেন নারী কাহন  প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা জান্নাতুল ফেরদৌসী। তার প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন রকম হারবাল পণ্য এবং কাস্টমাইজড পোশাক বিক্রি করা হয়।

উদ্যোক্তারা জানালেন, চলতি মাসের শেষদিকে মাইডাস সেন্টারেই নারী উদ্যোক্তাদের আয়োজনে আরেকটি মেলা অনুষ্ঠিত হবে।

আজ আর কথা নয়, আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি আমরা। আমাদের অনুষ্ঠান আপনারা সবসময় শুনতে পাবেন শর্ট ওয়েভ ৯ হাজার ৪শ ৯০ এবং শর্ট ওয়েভ ১১ হাজার ৬শ ১০ কিলোহার্টজে। আরও শুনতে পাবেন সিআরআই বাংলার ওয়েবসাইটে এবং অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজে। জেনে নিন আমাদের ইমেইল অ্যাডরেস, cmg.bangla@gmail.com আমাদের ফেসবুক পেজ facebook.com/CRIbangla এবং facebook.com/CMGbangla এবং আমাদের সাক্ষাৎকারগুলো ইউটিউবে দেখতে পাবেন। youtube.com/CMGbangla.

আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাই চিয়েন।

সার্বিক  সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী

লেখা, গ্রন্থনা,উপস্থাপনা : শান্তা মারিয়া

দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, শিল্পী তাই ওয়েনহুয়ার অপূর্ব শিল্পভুবন, কারিগরী শিক্ষায় এগিয়ে আসছে নারী , নারী উদ্যোক্তাদের শরৎমেলা   প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া

বাংলাদেশে প্রথম মেট্রোরেলের নারী চালক, প্রতিবেদন: রওজায়ে জাবিদা ঐশী

চীনা শিক্ষিকা চৌ সিয়াংচিয়াংয়ের আনন্দময় শিক্ষা, প্রতিবেদন: আফরিন মিম

অডিও সম্পাদনা: রওজায়ে জাবিদা ঐশী ও শান্তা মারিয়া

সহযোগিতায় নাজমুল হক রাইয়ান এবং হোসনে মোবারক সৌরভ