সেপ্টেম্বর ১৯: গত ১৬ সেপ্টেম্বর চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং উজবেকিস্তানে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার ২২তম শীর্ষসম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়েছেন। ভাষণে তিনি শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সম্প্রসারণের পাঁচটি অভিজ্ঞতা সারসংক্ষেপ করেছেন। একই সঙ্গে এ সংস্থার ভবিষ্যৎ উন্নয়নে পাঁচটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন সি চিন পিং।
পাঁচটি অভিজ্ঞতা হচ্ছে: পারস্পরিক রাজনৈতিক আস্থায় অটল, পারস্পরিক কল্যাণকর সহযোগিতা অটল, সমতা-সম্পন্ন সহাবস্থানে অটল, উন্মুক্তকরণ ও সহনশীলতায় অটল এবং সমতা ও ন্যায্যতায় অটল থাকা।
আর পাঁচটি প্রস্তাব হচ্ছে: পারস্পরিক সমর্থন জোরদার করা। নিরাপত্তামূলক সহযোগিতা সম্প্রসারণ করা। বাস্তব সহযোগিতা গভীরতর করা, সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান জোরদার করা এবং বহুপক্ষবাদে অবিচল থাকা।
তাঁর ভাষণের মধ্যে রয়েছে দুটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ--নিরাপত্তা ও উন্নয়ন। গত দু’বছরে চীন পৃথকভাবে বিশ্ব উন্নয়ন প্রস্তাব ও বিশ্ব নিরাপত্তা প্রস্তাব উত্থাপন করেছে। এ শীর্ষসম্মেলনে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং দুটি প্রস্তাব গভীরভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। যেমন: নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছেন, বাইরের শক্তির ‘রঙিন বিপ্লব’ প্রতিরোধ করতে হবে। যে কোনো অজুহাতে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করতে হবে এবং যৌথভাবে সন্ত্রাস দমনের মহড়ার আয়োজন করতে হবে।
উন্নয়ন প্রসঙ্গে সি চিন পিং বলেছেন, চীন বিশ্ব উন্নয়ন প্রস্তাব উত্থাপন করেছে, কারণ আন্তর্জাতিক সমাজে উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হবে বলে চীন আশা করে। তাতে কিছু বিস্তারিত প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন সি চিন পিং। যেমন: নিজের মুদ্রায় আন্তঃদেশীয় ক্লিয়ারিং হিসাব করার ব্যবস্থা গঠন জোরদার এবং এ সংস্থার উন্নয়ন ব্যাংক গঠন ইত্যাদি।
নিরাপত্তায় উন্নয়ন রক্ষা এবং উন্নয়নে নিরাপত্তা বেগবান হয়। অনেকে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং’র ভাষণের প্রশংসা করেন এবং চীনের এ দুটি প্রস্তাব সমর্থন এবং দুটি প্রস্তাব বাস্তবায়নে একমত হয়েছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শেরিফ বলেন, চীন শাংহাই সহযোগিতা সংস্থাসহ বেশ কয়েকটি সহযোগিতার খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং’র উত্থাপিত বিশ্ব নিরাপত্তা প্রস্তাবে একমত।
দক্ষিণ আফ্রিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা মন্ত্রণালয়ের এশিয়া ও ব্রিক্স বিষয়ক বিশেষ দূত আনিল শুকলাল বলেন, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং’র ভাষণ সুদূরপ্রসারী, যা আন্তর্জাতিক সমাজের স্বার্থের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। তাঁর ভাষণে বিশ্ব নিরাপত্তা রক্ষা ও বহুপক্ষবাদের বিষয়ে অবিচল থাকা জোরালো হয়েছে। মানব জাতির জন্য আরও সহনশীল ও সুন্দর বিশ্ব গড়ে তুলতে তিনি বিশ্ব নিরাপত্তা প্রস্তাব ও বিশ্ব উন্নয়ন প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অধিক থেকে অধিকতর দেশ শাংহাই সহযোগিতা সংস্থায় যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছে। তাতে সংস্থাটির চেতনা ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতে সকলের মতৈক্য প্রতিফলিত হয়েছে। এখনো করোনা মহামারির অবসান হয়নি। কিছু অঞ্চলে সামরিক সংঘাত চলছে। ঠিক যেন প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছেন, মানব জাতি উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রকৃতির মতো রৌদ্রজ্জ্বল দিনের পাশাপাশি বাতাস ও তুষারময় দিনগুলোর সম্মুখীন হতে পারে। শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য অভিজ্ঞতা ও মেধা প্রদান করেছে। শাংহাই চেতনায় সামনে এগিয়ে গেলে গন্তব্য-স্থল দূর হলেও অবশেষে পৌঁছা যাবে।
রুবি/এনাম