দেহঘড়ি পর্ব-৮৭
2022-09-16 19:02:38

‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে স্বাস্থ্যখাতের একটি সুখবর, সাক্ষাৎকারভিত্তিক আয়োজন ‘আপনার ডাক্তার’ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা ‘সুস্বাস্থ্যের জন্য’।

 

#সুখবর

অত্যাধুনিক চিকিৎসাসেবায় সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল

দেশে অত্যাধুনিক চিকিৎসাসেবা প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সম্প্রতি উদ্বোধন করা হয়েছে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল। কর্তৃপক্ষ বলছে, দেশের প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত অত্যাধুনিক এই হাসপাতালে পাওয়া যাবে রোগীবান্ধব নানান সুবিধা।

এ হাসপাতালের বিশেষত্ব হলো এতে থাকবে ১০০ শয্যার আইসিইউ। জরুরি চিকিৎসার জন্য থাকবে আরও ১০০টি শয্যা। সব মিলিয়ে বেড থাকবে ৭৫০টি। হাসপাতালে নয়টি ফ্লোর এবং তিনটি বেজমেন্ট ফ্লোর থাকবে।

বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “হাসপাতালের জরুরী বিভাগ ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে এবং এটি হবে সবার জন্য উন্মুক্ত। তবে এই জরুরী বিভাগ চালু হতে এক মাসের মতো সময় লাগবে। আর পূর্ণাঙ্গ সেবা চালু হতে সময় লাগবে তিন মাস।"

শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, হাসপাতালের জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আনা হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে। বাংলাদেশের চিকিৎসকদের পাশাপাশি এই হাসপাতালে থাকবেন বিদেশি চিকিৎসকরাও। মূলত রোগীরা এখানে একই ছাদের নিচে সবরকম চিকিৎসা সুবিধা পাবেন। এজন্যই একে বলা হচ্ছে সুপার স্পেশালাইজড হসপিটাল।

অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ

চিকিৎসকদের জন্য পৃথক ক্যাফেটেরিয়া ছাড়াও থাকবে তিনটি ক্যাফেটেরিয়া যেটা ব্যবহার করতে পারবেন রোগী এবং তার আত্মীয়রা। রোগী ভর্তি, চিকিৎসা, তথ্য সংরক্ষণসহ সব কিছুতেই আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, শুধু উন্নত অবকাঠামোই ব্যবহার করা হচ্ছে না বরং এখানকার চিকিৎসকদের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাই হাসপাতালটি চালু হলে বাংলাদেশেই পাওয়া যাবে বিশ্বমানের চিকিৎসা সেবা। - অভি/রহমান

 

## আপনার ডাক্তার

দেহঘড়ির আজকের পর্বে আমরা কথা বলেছি   বাংলাদেশে ব্রেস্ট ক্যান্সারের চিকিৎসা সুবিধা ও অবকাঠামো নিয়ে। বিশ্বজুড়ে নারীরা সেসব ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়, তার মধ্যে ব্রেস্ট বা স্তন ক্যান্সার অন্যতম। উন্নত বিশ্বে নিয়মিত স্ক্রিনিং আর সচেতনতার কারণে একদম প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার ধরা পড়ে, কিন্তু এক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিত্র একেবারে ভিন্ন। গবেষণায় দেখা গেছে, উন্নত বিশ্বে শতকরা ৬৫ ভাগ স্তন ক্যান্সার ধরা পড়ে একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে। এ কারণে সেখানে ব্রেস্ট ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর হার অনেক কমে এসেছে। বাংলাদেশে অনেক দেরিতে ও শেষ পর্যায়ে এসে ক্যান্সার ধরা পড়ার কারণে এ রোগে মৃত্যু হার বেশি। বিগত পাঁচ বছরে দেশে ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়া ও রোগ শনাক্ত হওয়ার হার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে দেরীতে ও শেষ পর্যায়ে ডায়াগনোসিস হওয়া আর দেরিতে চিকিৎসা নিতে আসার পেছনে অন্যতম কারণ রোগী ও তার পরিবারের এই বিষয়ে অজ্ঞতা ও অসচেতনতা এবং ব্রেস্ট ক্যান্সারের নিয়মিত স্ক্রিনিং প্রোগ্রামের স্বল্পতা। তবে বর্তমানে বাংলাদেশে ব্রেস ক্যান্সার নির্ণয় ও চিকিৎসার সুবিধা বাড়ছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করাতে আজ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন অঙ্কোপ্লাস্টিক অ্যান্ড রিকন্সট্রাকটিভ ব্রেস্ট সার্জন ডাক্তার এসকে ফরিদ আহমেদ। তিনি কর্মরত ইংল্যান্ডের বার্কিংহামশায়ার হেলথ অ্যান্ড কেয়ার এনএইচএস ট্রাস্টে। পাশাপাশি এখন বাংলাদেশেও রোগী দেখছেন তিনি; বসছেন ঢাকার ধানমন্ডিতে জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২০ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পৃথিবীব্যাপী ৩০ বছরে বেশি বয়সী মানুষদের মধ্যে ১৯৯০-২০১০ সালের কিডনি রোগে আক্রান্তদের হার ছিল ১৩ দশমিক ২ থেকে আর ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ দশমিক ৪ শতাংশে। বাংলাদেশে ১০ বছর আগে কিডনি রোগী ছিল মোট জনসংখ্যার ১৬ শতাংশ; ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২০ শতাংশে, অর্থাৎ প্রতি পাঁচজনে একজন কিডনি রোগে ভুগছে। উদ্বেগের কথা হলো দেশের দুই কোটি মানুষই জানে না তারা কোনো না কোনোভাবে কিডনি রোগে আক্রান্ত। কিডনি রোগ মহামারী রূপে আক্রান্ত হওয়ার মূল কারণ তিনটি দীর্ঘদিন রোগের উপসর্গ প্রকাশ না পাওয়া, মানুষের অসচেতনতা এবং জীবনযাত্রা বা লাইফস্টাইলের পরিবর্তন, যেমন ফাস্ট ফুডে অভ্যস্ত হওয়া, শরীর চর্চা না করা এবং ধূমপান, মদ্যপান, ইত্যাদি। রোগের এমন বাস্তবতায় বাংলাদেশে কিডনি রোগের চিকিৎসা সুবিধা ও অবকাঠামো কেমন, চিকিৎসকের সংখ্যা পর্যাপ্ত কিনা – এ সম্পর্কে আলোচনা করাতে আজ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হন কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার শেখ মইনুল খোকন। তিনি কর্মরত কিডনি ফাউন্ডেশনে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হাবিবুর রহমান অভি।

 

# ‘সুস্বাস্থ্যের_জন্য’

ত্বক ভালো রাখতে যা এড়িয়ে চলবেন

ত্বক ভালো রাখার ক্ষেত্রে খাবারের বেশ অবদান রয়েছে। কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো ত্বকের জন্য উপকারি। আবার এমন কিছু খাবারও রয়েছে যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। কেবল বাইরে থেকে যত্ন নিলেই ত্বক ভালো থাকে না, যদি খাবারের তালিকায় ক্ষতিকর খাবার ঠুকে পড়ে। সঠিক খাবার না খেলে ত্বক আর ভালো থাকবে কী করে! ত্বক ভালো রাখার জন্য পর্যাপ্ত পানি, ফলমূল আর প্রচুর শাক-সবজি তো খাবেনই, সেইসঙ্গে তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে কতগুলো খাবার। আজ আলোচনা করবো এমন কতগুলো খাবার নিয়ে।

কোমল পানীয় ও অ্যালকোহল

কোমল পানীয় ও অ্যালকোহলযুক্ত যেকোনও ড্রিংক ত্বকের জন্য যথেষ্ট ক্ষতিকর। এ ধরনের পানীয় পান করলে কেবল ব্রণই বাড়ে না, সেইসঙ্গে ত্বককে করে ডিহাইড্রেট। ফলে দেখা দিতে পারে পানিশূন্যতা। এ ধরনের পানীয় পান করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যায়। যে কারণে অল্প বয়সেই দেখতে বয়স্ক লাগে।

ফাস্টফুড

ফাস্টফুড খুবই মুখরোচক। সুতরাং এগুলো এড়িয়ে চলা মুশকিল। কিন্তু আপনি যদি স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করেন তবে ফাস্টফুড বাদ দিতেই হবে। এসব খাবারে কোনো উপকারিতা থাকে না। নিয়মিত ফাস্টফুড খেলে বাড়ে ত্বকের সমস্যা। খুব বেশি খেতে মন চাইলে মাঝে মাঝে এক-আধটু খেতে পারেন, কিন্তু এসব খাবারে অভ্যস্ত হওয়া যাবে না। ত্বক ভালো রাখতে চাইলে ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন যতটা সম্ভব।

অতিরিক্ত মসলাদার খাবার

খাবার রান্নার সময় খেয়াল রাখুন যেন তাতে অতিরিক্ত তেল-মসলা ব্যবহার না করা হয়। সেইসঙ্গে বাইরেও অতিরিক্ত মসলাদার খাবার খাওয়া বন্ধ করুন। খাবারে অতিরিক্ত তেল-মসলা যোগ করলে তা আপনার ত্বককে খারাপ করে দেবে। ডুবো তেলে ভাজা খাবারও বাদ দিন। এর বদলে তাজা ও সতেজ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। খাবারের তালিকায় ফল ও সবজি রাখুন।

ভাজাপোড়া ধরনের খাবার

ত্বকের কথা ভেবে এ ধরনের খাবার বাদ দিতে হবে। কারণ নিয়মিত ভাজাপোড়া খেলে তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে আপনার ত্বকে। মাঝেমধ্যে চপ-সিঙ্গাড়া খেতে পারেন, কিন্তু এ ধরনের খাবারে আসক্ত হওয়া যাবে না।

চকোলেট

চকোলেটের অনেক উপকারিতা রয়েছে। কিন্তু সেগুলো বেশিরভাগই পাওয়া যায় ডার্ক চকোলেটে। মিষ্টি চকোলেটে চিনির পরিমাণ থাকে অনেক বেশি, যা আমাদের শরীরের জন্য খারাপ। এতে থাকা অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট শরীরের ক্ষতি করে; বাড়ায় সেবামের উৎপাদন এবং বলিরেখা। তাই চকোলেট খাওয়ার ইচ্ছা হলে ডার্ক চকোলেট বেছে নিন। - অভি/রহমান

 

 ‘দেহঘড়ি’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত ও পরামর্শ জানতে চাই আমরা। আমাদের ফেইসবুক পেইজ facebook.com/CMGbangla অথবা ওয়েবসাইট bengali.cri.cn’র মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত বা পরামর্শ।