সেপ্টেম্বর ৮: টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ‘বিশ্বব্যাপী টেকসই উন্নয়নে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়ক ভূমিকা’ প্রতিপাদ্যে ২০২২ টেকসই উন্নয়ন বিগ-ডাটা আন্তর্জাতিক ফোরাম (এফবিএএস ২০২২) ৬ সেপ্টেম্বর বেইজিংয়ে উদ্বোধন হয়।
সম্মেলনের উদ্দেশ্য হল বৈশ্বিক উন্নয়ন উচ্চ-স্তরের সংলাপের চেয়ারম্যানের বক্তব্যের ফলাফলের তালিকা নিয়ে আলোচনা করা এবং বাস্তবায়ন করা। বৈশ্বিক টেকসই উন্নয়নে ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রয়োগকে উন্নীত করা, বিগ-ডাটা পদ্ধতি প্রযুক্তি ও আদান-প্রদানের প্রচার করা। জাতিসংঘ ২০৩০ এজেন্ডা এবং বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগের প্রচারকে ত্বরান্বিত করা।
চীনের বিজ্ঞান একাডেমির ভাইস প্রেসিডেন্ট জাং ইয়া পিং ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং ভাষণ দেন। তিনি বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি, বিশেষ করে বিগ-ডাটা, পৃথিবী সিস্টেম এবং মানবিক কার্যকলাপ সম্পর্কিত টেকসই উন্নয়ন সমস্যা বিশ্লেষণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে সরকারকে সহায়তা করতে পারে। চীনের বিজ্ঞান একাডেমি টেকসই উন্নয়নে বিগ-ডাটার গবেষণাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় এবং জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ করে গবেষণা চালিয়ে যাবে।
জাতিসংঘের মরুভূমি প্রতিরোধ কনভেনশনের উপ-নির্বাহী সচিব আন্দ্রেয়া মেজা মুরিলো উদ্বোধনী ভিডিও বক্তৃতায় বলেছিলেন যে ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং বিগ-ডাটা আমাদেরকে জাতিসংঘের ২০৩০ এজেন্ডা অর্জনে সহায়তা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, জাতিসংঘও সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে তাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার দিকে অগ্রগতি রিপোর্ট করতে বিগ-ডাটা প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। তিনি বলেন,
"জাতিসংঘের মরুভূমি প্রতিরোধ কনভেনশন এখানে নিম্নোক্ত উদ্যোগের আহ্বান জানাচ্ছে: জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য পৃথিবী পর্যবেক্ষণে ডিজিটাল প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে বিগ-ডাটার ধারাবাহিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা; ব্যবহারকারীদের ডাটা এবং ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করার ক্ষমতা বাড়ানো এবং সাহেলের ‘সবুজ মহাপ্রাচীর উদ্যোগ’ সমর্থন করার জন্য সংশ্লিষ্ট অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করা।”
চীনে জাতিসংঘের সমন্বয়কারী সিদ্ধার্থ চ্যাটার্জি উল্লেখ করেছেন যে ডেটার শক্তি শান্তি ও নিরাপত্তা, টেকসই উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তন সহ জাতিসংঘের কাজের প্রায় সব ক্ষেত্রেই প্রতিফলিত হতে পারে এবং ২০৩০ এজেন্ডা অর্জনে সহায়তা করতে পারে। তিনি আহ্বান করেন:
“টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নে কীভাবে বিগ-ডেটা প্রযুক্তির শক্তি প্রয়োগ করা যেতে পারে তা অন্বেষণ করার জন্য সরকারী ও বেসরকারী খাত, নীতিনির্ধারক, একাডেমিয়া এবং সমাজকে একত্রিত করার সময় এসেছে। ডেটা এবং ডিজিটাল প্রযুক্তিতে আমাদের আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে। যাতে সম্ভাব্য সঙ্কটে আরও সময়োপযোগী সাড়া দেওয়া যায় এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা অর্জনের সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও প্রচেষ্টার আরও ভাল পূর্বাভাস দেওয়া যায়।
টেকসই উন্নয়ন বিগ-ডেটা আন্তর্জাতিক ফোরামের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমিটির সহ-সভাপতি সুই কুয়ান হুয়া উল্লেখ করেছেন যে বিগ-ডেটা প্রযুক্তির ক্রমাগত পুনরাবৃত্তি বিশ্বব্যাপী টেকসই উন্নয়ন গবেষণাকে একটি নতুন পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। চীন অব্যাহতভাবে ডেটা ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী উন্নয়নে অবদান রাখতে ইচ্ছুক। তিনি বলেন,
"(চীন) ডেটা পরিষেবার সক্ষমতা উন্নত করবে; সূচক সনাক্তকরণ এবং মূল্যায়নের উপর বৈজ্ঞানিক গবেষণা জোরদার করবে; এসডিজিএস বৈজ্ঞানিক উপগ্রহ তৈরি করবে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে প্রশিক্ষণ দেবে। টেকসই উন্নয়ন ২০৩০ এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে, আশা করি সবাই একসাথে কাজ করবে এবং বৈশ্বিক উন্নয়নে অবদান রাখবে।“
তিনদিনব্যাপী এ ফোরাম অনলাইন ও অফলাইনের পদ্ধতিতে অনিষ্ঠিত হয়। এতে ৮টি সম্মেলন প্রতিবেদন, ৫৭টি সমান্তরাল বৈঠক, ৩০০টিরও বেশি মৌখিক প্রতিবেদন এবং 12টি "ডিজিটাল সিল্ক রোড" আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান প্রোগ্রামে বিশেষ অধিবেশন রয়েছে। ৬৫টি দেশ ও অঞ্চলের প্রায় ৭০০জন এই সম্মেলনে অংশ নেন।
(ইয়াং/আলিম/ছাই)