রোববারের আলাপন:একজনের বাস্কেটবল দলের গল্প
2022-09-04 06:36:36

আকাশ: সুপ্রিয় শ্রোতা, সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠানে। আপনাদের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের সাপ্তাহিক আয়োজন ‘রোববারের আলাপন’। আপনাদের সঙ্গে আছি আমি আপনাদের আকাশ। 


বন্ধুরা, আজ থেকে আমি এবং তৌহিদ ভাই- আমরা দুজন নিয়মিত অনুষ্ঠান ‘রোববারের আলাপনে’ আপনাদের সঙ্গে থাকবো। তৌহিদ ভাই, আপনার সঙ্গে অনুষ্ঠান করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। 

তৌহিদ:....

আকাশ: আচ্ছা, তাহলে আমরা এখন আগের মতো হৃদয়-স্পর্শ করা, উদ্দীপনামূলক ও ভালবাসা-বিষয়ক খেলাধুলার গল্প বন্ধুদেরকে জানাবো। চলুন মূল অনুষ্ঠান শুরু করা যাক। 


ইয়ে সা একজন কিশোর, তিনি বাস্কেটবল খেলতে ভীষণ পছন্দ করেন। তবে, অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে  অল্প বয়সে তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৬ বছর। 


এই দুঃখজনক ঘটনায় তাঁর বাব-মা খুব বিমর্ষ হয়ে পড়েন। তবে তাঁদের ছেলের জীবনের সর্বশেষ সময়ে, তারা একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তাঁদের ছেলের মৃত্যুর পর বিভিন্ন অঙ্গ দান করবেন। কারণ, মানুষকে সাহায্য করাই ছিল তাদের ছেলের স্বপ্ন।


এজন্য ইয়ে সা হৃদপিণ্ড, ফুসফুস, কলিজা, দুটি কিডনি, জোড়া কর্নিয়া- ৭জন রোগীকে দান করে দেওয়া হয়। এতে তারা নতুন জীবন লাভ করেছেন।


যারা ইয়ে সার অঙ্গ পেয়েছিল- তারা ইয়ে সা বাস্কেটবলের স্বপ্ন আরো এগিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এভাবে ইয়ে সা পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়ার পরও মানুষের উপকার করে যাচ্ছেন। 


২০১৭ সালের এপ্রিল ২৭ ছিল ইয়ে সার অঙ্গ ডোনেট করার বার্ষিকী। ৫ জন ইয়ে সা’র অঙ্গ পাওয়ার মানুষ একটি বাস্কেটবল দল প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাদের জার্সিতে ইয়ে সা’র নাম লেখা রয়েছে এবং তাদের প্রত্যেকের পোশাকে ইয়ে সা-এর কাছ থেকে পাওয়া অঙ্গের ছবি আঁকা রয়েছে। এভাবেই ‘এক জনের বাস্কেটবল দল’ প্রতিষ্ঠিত হয়।


তথমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সম্প্রতি ‘এক জনের বাস্কেটবল দলের’সদস্য চৌ হাই মৃত্যুবরণ করেন। তবে তার আগে, তিনিও তাঁর কর্নিয়া দান করেন। তিনি ইয়ে সা’র কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন। 


গত এপ্রিল মাসে, চৌ হাইয়ের রোগের অবস্থা বেশ খারাপ হয়ে ওঠে। তিনি একদিকে রোগের সাথে লড়াই করেন, একদিকে তিনি রেড ক্রস সোসাইটিকে ফোন করেন। তিনি অঙ্গ দান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। 


চৌ হাই বলেন, ‘আমি আমার সব অঙ্গ দান করতে চাই।’ তার এ সিদ্ধান্ত গোটা পরিবারের সদস্যদের সমর্থন পেয়েছিল। 


এ বছরের ১৩ জুন তিনি মারা যান। তার পরিবার সদস্যরা তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁর অঙ্গদানের চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন।


রেড ক্রস সোসাইটির কুই লিন শহরের কর্মকর্তা জানান, চৌ হাইর ইচ্ছা অনুযায়ী, তাঁর দুটি কর্নিয়া একজন পুরুষ একজন নারী রোগীকে দেওয়া হয়। এরপর তারা আবার চোখে দেখতে পাচ্ছেন। 


তৌহিদ ভাই, এ গল্প অনেক চিত্তাকর্ষক। আমি যখন প্রথম শুনি তখন আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ি এবং অনুপ্রাণিত হই। এই দুনিয়ায় অনেক ভালো কিছু আছে। অঙ্গ দান করার বিষয়টি আপনার কাছে কেমন মনে হয়?

তৌহিদ:....


অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে আমরা আবার ইয়ে সা-সহ যারা মানুষের কল্যাণে কাজ করেন, তাদেরকে সালাম/ স্যালুট জানাই। তারা এবং তাদের চেতনা, তাদের ভালবাসা, চিরকালে এ জগতে থাকবে এবং মানুষকে উষ্ণতা দেবে। 

(আকাশ/তৌহিদ)